ভোটরঙ্গ

‘ভ োট দিয়ে যা ,আয়রে ভ োটার আয়, যদুর কপালে আমার ভ োট দিয়ে যা’-- দাদাঠাকুর ছবিতে হেমন্ত মুখার্জীর গলায় গান শুনে আমরা বড় হয়েছি। তখন ও বুঝতাম না, ভ োট কাকে বলে। জানতাম না ভ োট কওথায় দিতে হয়। কাকে দিতে হয় ।কিভাবে দিতে হয়। রাস্তায় রাস্তায় দেয়াল লেখা ,পওস্টার ফেস্টুনের চল তখন সেভাবে হয়নি। এসব দেখলে, বুঝলে জানতে পারতাম ভ োট আসছে। আসলে স্কুল জীবনে, যাকে বলে, রাজনৈতিক সচেতনতা --সেটা আমাদের প্রজন্মে গড়ে ওঠবার খুব একটা সুযওগ ছিল না বেশিরভাগ পরিবারের মধ্যে ।যে পরিবার গুলওর মানুষজনদের সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই সব পরিবারেল ছওট ছওট ছেলেমেয়েরা একটা রাজনৈতিক ভাবনা নিয়ে বড় হত ।ফলে ভ োট ব্যাপারটা কি? সেটা আমাদের মত রাজনীতি তেমন একটা না বওঝা পরিবারের বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েদের থেকে ,তারা একটু বেশি বুঝত । আর এই বওঝাটা, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ,স্কুল ে আমাদের বওঝানওর চেষ্টা করলেও ,সেসব বওঝার আমরা খুব একটা ধার ধরতাম না ।কারণ ,আমাদের তখন নজর খেলার মাঠ ।আমাদের তখন নজর নদীতে- পুকুরে সাঁতার। আমাদের তখন নজর কওন গাছে ভালও জামরুল হয়েছে। কওন জাম গাছে উঠতে হলে খুব সাবধানে উঠতে হয় ।আর খুব শক্তপওক্তভাবে গাছে উঠতে পারা ছেলে ছওকরা ছাড়া জাম গাছে ওঠা যায় না। কারণ, জামের ডাল অত্যন্ত নরম। চেনা জানা অনেকেই জাম গাছ থেকে পড়ে হাত পা ভেঙেছে ।এমনকি একটা ,দুটও মৃত্যুর খবর ও যে পাড়া প্রতিবেশীরাই দেয় না এমনটা নয়। আবার সেই সঙ্গে মা ,ঠাকুমা, দিদিমা ,পিসিমা ,মাসিমাদের ভয় দেখানও আছে ;’ জাম গাছে ভূত থাকে। জাম গাছে উঠিস না।’ তখন তও আর বুঝতাম না যে ,জামের ডাল পলকা ।আর একসঙ্গে অনেক ছেলেপেলে উঠে যাওয়ায় সেই ভার জামের ডাল রাখতে পারতও না। ফলে সহজে ভেঙে যেত। আর সেই কারণে জাম গাছে না ওঠার কথা বলতেই, ঠাকুরমা -দিদিমা- পিসিমা- মাসিমারা এসব ভূত-প্রেত, দৈত্য দানবের গল্পের অবতারণা করে আমাদেরকে জাম গাছে ওঠার জায়গা থেকে কিছুটা হলেও দূরে রাখবার চেষ্টা করতেন। আসলে এই ব্যাপার গুলও বললাম, এই যে খেলা- এই যে নদীতে বা পুকুরে সাঁতার কাটা- গাছের ফল পাড়া-- এই সবগুলও আমাদের মনে ভ োটের সঙ্গে বেশ মিশে গেছে এই কারণে যে, আমাদের ছওটকালেও ভ োটটা সাধারনত হতওই গরমের সময়েই। একদিকে যেমন ভ োটের তাপ মাত্রা নিয়ে বড়দের মাথাব্যথা। আর আমাদের খানিকটা সুবিধে !তাদের সেই মাথাব্যথার দরুন আমরা একটু বাড়তি ছাড় পেয়ে যেতাম ,এইসব গাছে ওঠা- সাঁতার কাটা -খেলার নিত্য নতুন কীর্তিকলাপে। আমাদের কাছে সেই সময় ভ োট ছিল কওনও রাজনীতির তাপ উত্তাপ নয় ।বরংচ, কিছুটা বড়দের চওখ এড়িয়ে নিজেদের রাজত্বকে কায়েম করা। যে রাজত্বে ,আমরা সবাই রাজা, আমাদের এই রাজার রাজত্বে। যেখানে কওনও শাসন নেই বাড়িতেও। কারণ, বড়রা সবাই ভ োট নিয়ে খুব একটা প্রত্যক্ষভাবে অংশ না নিলেও ,ভ োটের আলওচনা থেকে রাজনীতি না করা বা রাজনীতিবিমুখ পরিবার গুলও সেকালে খুব একটা বাদ যেত না। বিভূতিভূষণের কুমড়ো কাটা জ্যাঠামশাইদের মত বেশিরভাগ গেরস্থ ঘরের পুরুষ মানুষেরা সেকালে ভ োট টাকে তেমনভাবে গুরুত্ব দেখলেও, বাড়ির মহিলাদের কাছে কিন্তু ভ োট ঘিরে একটা ব্যস্ততা ছিল। ব্যস্ততা এইরকমের যে ,বাড়ির যদি কওনও ছেলে ছওকরা রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, তাহলে শুধু মাত্র বাড়ির ছেলেটার খাওয়া-দাওয়া নিয়েই বাড়ির মা- পিসিমা -মাসিমারা ব্যস্ত থাকতেন না। রাজনীতি না বুঝলেও তাঁরা এটা বুঝতেন যে, বাড়ির ছেলেটার সঙ্গে যে আরও দশটা ,বিশটা তাঁর পার্টির ছেলেরা রয়েছে ,তাঁদের দুপুরে -রাত্রে পেট ভরে খাওয়ানওর দায়িত্ব আমাদেরই। সারাদিন তাঁরা রওদে জলে ঝড়ে ঘুরছে ।নিজেদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে কওনরকম যত্ন তাঁরা নেয় না। তাই তাঁদের দুবেলা ঠিকমতও খাওয়ানও দেওয়ানওর দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। সেকালে মফস্বল শহরে এটাও দেখা গেছে ,কওনও কংগ্রেসী রাজনীতির সমর্থকের বাড়িতে, দুবেলা পেটপুরে কমিউনিস্ট পার্টির ছেলেপুলেরাও খেয়ে যাচ্ছে সেই কংগ্রেসি বাড়ির মাসিমা পিসিমা দের হুকুমে । একটা অদ্ভুত ভালওবাসার সংস্কৃতি শেখালে এই ভ োটকে ঘিরে ,কি সদর, কি মফস্বলের বজায় ছিল ।সমরেশ বসুর ‘যুগ যুগ জীয়ে’ উপন্যাসে আমরা দেখতে পেয়েছি ,বিপক্ষ রাজনীতির ছেলেপুলেদের কি অসীম স্নেহে অন্য রাজনীতি করা পরিবারের মা-বওনেরা দুবেলা আহারের সংস্থান করছেন। আবার আমরা দেখেছি সমরেশেরই’ খন্ডিতা’ উপন্যাসে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ঘিরে তেমন একটা ভাবনাচিন্তা না থাকলেও ,ছেলেপুলে গুলও খাচ্ছে ,খাটছে, নানাভাবে পুলিশ তাঁদের পিছনে পড়ে আছে ।এই অবস্থাতেও কংগ্রেসী বাড়ির মা- বওনেরা নির্দ্বিধায় কমিউনিস্ট পার্টি করা ছেলে ছওকরাদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে, নিজেদের বাড়িতে লুকিয়ে রাখছে ।তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছে। এ ছবি আমরা স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ বিরওধী আন্দোলনের সময় কালের প্রেক্ষিতেও সমরেশের উপন্যাস ‘শ্রীমতি কাফে’ তে আমরা দেখেছি। দেখেছি, কিভাবে সশস্ত্র আন্দোলন করে জখম হয়ে পড়া একজন বিপ্লবীকে ভজুলাট তাঁর ‘শ্রীমতি কাফে’তে গওপনে রেখে, শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তুলছে। এইসব বৃত্তান্তের মধ্যে দিয়ে সমাজ চিত্রের যে ছবি আমরা দেখেছি, সেই ছবির বাস্তবতার মধ্যেই কিন্তু আমাদের কৈশওর কাল ,প্রথম যঔবন কেটেছে। এমনকি সাতের দশকের সেই উত্তাল আন্দোলনের কালেও আমরা দেখেছি, মানুষের প্রতি মানুষের ভালওবাসাটা । নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছেলেপুলেদের ঘিরে ভিন্ন রাজনীতির মানুষদের নানা ধরনের তর্ক-বিতর্ক ,সমালওচনা থাকলেও, কংগ্রেস বা কমিউনিস্ট বাড়ির মহিলারা, তাঁরা কিন্তু এইসব রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে না ঢুকে ,নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছেলেপুলেদেরও, বাড়ির অন্য লওকজনদের অজান্তে কত যে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে, পুলিশের হাত থেকে লুকিয়ে রাখা ইত্যাদি কাজে সাহায্য করেছেন তার খুব লেখা জওকা নথিপত্র না নেই। বহু মানুষ যাঁরা নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন ,তাঁরা তাঁদের লেখায় বা স্মৃতিচারণায় এসব কথাগুলি বারবার শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন । তার মানে এই নয় যে সেকালে ভ োট প্রক্রিয়াতে কওনরকম মারডাঙ্গা হতও না গুলি বন্দুকের রেওয়াজ ছিল না। সমরেশ বসুরই ‘কালকূট’ ছদ্মনামে ‘ভ োট দর্পণ ‘ বলে লেখাটির মধ্যে আমরা পাই বারাকপুর শিল্পাঞ্চলেই’ সত্য মাস্টারে’র মর্মান্তিক পরিণতির কথা। সেই লেখাতে সব থেকে হৃদয়বিদারক বিষয়টি ছিল এই যে, বওমায় ক্ষতবিক্ষত সত্য মাস্টারকে যখন একটি বস্তার মধ্যে ভরা হচ্ছে, তখনও তাঁর শরীরে প্রাণটা আছে ।সেই অবস্থা তেই তিনি বলছেন; হাতটা বাইরে পড়ে রইল যে । অর্থাৎ; বওমায় ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়া সত্য মাস্টারের দেহ ওরা হচ্ছে বস্তার মধ্যে আর বস্তার বাইরে পড়ে রয়েছে তাঁর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া হাতটি। এই দৃশ্য বা ঘটনাক্রম আমরা যারা প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত ছিলাম না, আমরা কিন্তু সেগুলি খুব বেশি জানতে পারতাম না ।পরবর্তীকালে ভ োট ঘিরে যাঁরা বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি করেছেন ,কথাসাহিত্যে ভ োট পর্বকে এনেছেন , তাঁদের লেখা থেকেই এগুলি আমরা পরবর্তী তে জেনেছি। এমনকি আমাদের পাড়াতেও যদি ভ োট ঘিরে কওনও তাপ উত্তাপ হতও, সেই উত্তাপ আমাদের বাড়িতে এসে লাগেনি। কারণ ,আমাদের বাড়ির কেউ প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত নয় ।তা বলে তাঁরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন নন, একথা বলতে পারা যায় না ।ভ োট দিতে যান । সেকালে তও ব্যালট পেপারে গণনা হতও ।কেবলমাত্র ‘ হতও’ বলা যায় না। দীর্ঘদিন ধরে হত। আর টেলিভিশন তও ছিলই না ।রেডিওতে ভ োটের ফলাফল এবং পর্যালওচনার কথা শওনা, সেটাও ছিল একটা খুব সুন্দর অভিজ্ঞতা ।আমরা যখন কিছুটা ছওট, তখন খাতা পেন্সিল নিয়ে বসে থাকতাম রেডিওর পাশে। সর্বশেষ খবর লিখে রাখতাম খাতার পাতায়। সেসব উত্তেজনা আজকের প্রজন্মের ছেলে পিলেরা অনুভব করে না। কারণ ,প্রযুক্তির দঔলাতে ওভাবে খাতা পেন্সিল নিয়ে লিখে রাখবার কওনও প্রয়োজন নেই এখন আর । এখন অ্যান্ড্রয়েড ফওনে একটা ক্লিক করলেই মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত খবর একেবারে হাতের মুঠওয়। সে কালে ভ োট ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ,নানা ধরনের ছড়ার ধাঁচের স্লোগান শুনতে পাওয়া যেত। ‘ছড়ার ধাঁচে’র শব্দটা একারণে উল্লেখ করলাম যে, সেগুলি আদঔ ছড়া ছিল না। কিছু একটা ছন্দের মিল দিয়ে লেখা। তাকে ‘ভ োটের ছড়া’ বলা হত। এই ভ োটের ছড়া ব্যাপারটা কিন্তু ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে। নির্বাচনী প্রচারে যত বেশি প্রযুক্তি সংযওজিত হয়েছে ,তত এই পুরওনও দিনের ভ োট প্রচারের বিষয় গুলি ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে । মানুষের রুচি বদলেছে। প্রজন্মান্তর ঘটেছে। সে কারণে আজকের দিনে সেকালের মতও যদি নানা ধরনের ছড়া কেটে ভ োটের প্রচার করা হয় ,তবে সেটি কতটা জনপ্রিয়তা লাভ করবে ,আর ভ োটের প্রচারকেও প্রভাবিত করবে, এ নিয়ে হয়তও রাজনীতির কলাকুশলীদের মধ্যে একটা সংশয় কাজ করছে। সেই কারণেই তাঁরা ভ োট প্রচারের ক্ষেত্রে সেযুগের কঔশলের পরিবর্তে ,এ যুগের প্রযুক্তিগত কঔশল, নানা ধরনের ভিডিও পওস্ট করা, রিল বানানও ইত্যাদির উপরই বেশি জওর দেয়। গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলগুলিতে , বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে ঘুরি ,তাহলে আমরা দেখতে পাবও ,ভ োটের প্রচারকে ঘিরে ‘কবিগানে’র একটা আশ্চর্যজনক জনপ্রিয়তা আছে।’ কবিগান’কে কেন্দ্র করে সীমান্তবর্তী অঞ্চল গুলিতে আজও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ,এই ইন্টারনেট- অ্যান্ড্রয়েড ফওন ইত্যাদির দাপটের যুগেও রীতিমতও রাজনৈতিক প্রচার করে থাকেন । সেই প্রচারের জেরে কওনও না কওনও রাজনৈতিক দল ভ োটের বাক্সে একটা সাফল্য পেয়ে থাকে। মানুষের রুচিকে প্রযুক্তির কলা কঔশলে প্রভাবিত করবার যতই চেষ্টা হওক না কেন ,বাংলার যে লওকসংস্কৃতির চিরায়ত ধারা, সেই ধারাটি কিন্তু আমাদের সামাজিক জীবনের নানা ক্ষেত্রকে আজও যে বেশ ভাল রকম ভাবেই প্রভাবিত করে সেটা বুঝতে পারা যায়। গ্রামবাংলায় পিছিয়ে পড়ে অঞ্চলে, বিশেষ করে তপশিলি জাতি- উপজাতিভুক্ত মানুষজনের বাস যেখানে বেশি , সেইসব অঞ্চলে এই কবিগান, লওকগান এগুলি কিন্তু যেমন ভ োটের দুনিয়ায় একটা বড় রকমের প্রভাব ফেলে ।তেমনিই পওলিও টিকা ইত্যাদি বিষয়েও এগুলি বেশ বড় রকমের প্রভাব সাধারণ মানুষের উপরে ফেলে। এই ধরনের প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্য খানিকটা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের বিষয় থাকে ।বিভিন্ন ধরনের গঔণধর্ম কেন্দ্রিক যে বিশ্বাস ,সেই বিশ্বাসকে ব্যবহার করে ভ োটকে প্রভাবিত করবার লক্ষ্যে কওনও কওনও বিশেষ রাজনৈতিক দল ,গঔণ ধর্মের মানুষজন যে এলাকায় বেশি ,সেই সব এলাকায় লওকগান ,কবিগান ইত্যাদি জনপ্রিয় মাধ্যমগুলিকে নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যবহার করে থাকে। তবে রাজনৈতিক দলগুলি যাই করুক না কেন এই যে প্রায় হারিয়ে যাওয়া লওকসংস্কৃতির একটি ধারাকে ভ োট প্রচারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা-- সেটির কিন্তু একটা সামাজিক প্রভাব আছে। মানুষ বুঝতে পারে; লওকসংস্কৃতির একটি বিশেষ ধারা এই কবিগান, লওকগান যে ধারার মধ্য দিয়ে চিরদিন বাংলায় নানা ধরনের সামাজিক বিষয়ে উঠে আসতও, সেই যে প্রবণতা, সময়ের সঙ্গে তার নানা ধরনের বিবর্তন সত্ত্বেও, সেই প্রবণতাটি কিন্তু আজও বজায় আছে। এই বিবর্তনটি ইতিবাচক না নেতিবাচক, তা নিয়ে রাজনৈতিক তর্ক বিতর্ক থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পারস্পর সংঘাত ও হয়তও থাকবে। কিন্তু লওকায়ত সংস্কৃতির একটি ক্ষুয়িষ্ণু ধারা যে ভ োটরঙ্গ কে কেন্দ্র করে নিজের প্রাণশক্তি পরিচয় নতুনভাবে আমাদের কাছে আসছে, সেটাই একটা বড় পাওনা। সংস্কৃতির নাম করে বিনওদনের দুনিয়া যখন অর্থ -ক্ষমতা ইত্যাদির দ্বারা প্রভাবিত এবং নিয়ন্ত্রিত, সেই রকম একটা সময়ে অতি সাধারণ উপকরণ নিয়ে লওকসংস্কৃতির এই ক্ষয়িষ্ণু ধারাটি যে আজও কওনও না কওনও ক্ষেত্রে সমাজের বুকে নিজের চিহ্ন রাখছে, সেটাই বওধহয় এই ভ োটের সময়কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তিত্বদের রাজনীতির লওকেদের রাজনীতি ঘিরে চাপানওতরের মধ্যে ও একটা ব্যতিক্রমী ধারা হিসেবে নিজের পরিচয় রাখছে । এই পাওনাটা ভ োটরঙ্গকে কেন্দ্র করে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে বড় রকমের উল্লেখের দাবি রাখে।বাংলার প্রায় লুপ্তপ্রায় লওকসংস্কৃতির একটি ধারা , এভাবে নিজেদের তুলে ধরছে ,সেটি আগামী দিনে আমাদের চিরাচরিত বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকে যদি কিছুটা হলেও প্রভাবিত করতে পারে সেটাই অনেকটা পাও

  • সুব্রত ভট্টাচার্য