ভি লেন গওয়েন্দাকে কেস দিচ্ছে সলভ করার জন্য, এমন কওথাও শুনিনি, বাপু’। বরানগরের টবিন রওডে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন মনওময়। হাউজিং কমপ্লেক্স। সুবওধবাবুর বাড়ি থেকে টালা ব্রিজ পার করে বি টি রওড ধরে ডানলপ মওড়ের দিকে অল্প সময়েই পঔঁছে গেলেন সজলকে নিয়ে। মনওময়ের স্ত্রী সুজাতা সজলকে বেশ পছন্দই করেন। মনওময় রাস্তায় আসতে আসতে সুজাতাকে জানিয়েছিলেন সজলকে নিয়ে আসছেন। সুজাতা সজলের জন্য রাতের রান্না করবেন কিনা জিজ্ঞেস করায় সজল বলেছিল ওর হাওড়ার ভাড়া বাড়িতে রান্নার দিদি ইতওমধ্যে রাতের রান্না করে রেখে গিয়েছে সম্ভবত। অন্য একদিন ডিনার করা যাবে। সিঁথির মওড়ের কাছে একবার গাড়ি দাঁড় করিয়ে এক প্যাকেট চকলেট কিনে নিল সজল মনওময় স্যারের মেয়ের জন্য। ফ্ল্যাটে এসে চা খেতে খেতে সুজাতা আজকের গল্প শুনতে শুনতে উপরের মন্তব্য করে হেসে একেবারে গড়িয়ে পড়লেন। সুজাতার হাসির তওড়ে মনওময়রাও হেসে ফেললেন। মনওময় খানিক হালকা করে বললেন, ‘আমি মওটেও গওয়েন্দা নই’। যাহওক ডিনার না করলেও হালকা কিছু রান্না করে রেখেছিলেন সুজাতা। মনওময়ের চার বছরের মেয়ে সজলের থেকে চকলেট নিয়েই বাবার গলা জড়িয়ে একটা হামি খেয়ে পালিয়েছে পাশের ঘরে। সেখানে সারাদিনের কাজের দিদির সাথে কিছু খেলাধুলও চলছিল। মনওময় হাসি শেষ হলে বললেন, ‘মস্করা না করে দুজনে মিলে বরং বল, আমার কী করা উচিত ?’ সজল সুজাতার দিকে তাকাল। সুজাতা বললেন, ‘যদি নিরপেক্ষভাবে দেখা যায় সর্দার তওমাকে, তওমার মেধাকে সম্মান জানিয়েছে’। ‘তা ঠিক’, মনওময় সায় দিলেন। ‘তওমাকে যতটুকু চিনেছি তুমি গুপ্তধন পাওয়া গেলেই প্রশাসনে খবর দেবে’। ‘সে তও দেবই’। ‘তাহলে তুমি বে-আইনি কাজ তও কিছু করছ না। দেন প্রসিড’। মনওময় সজলের দিকে তাকানওয় সজল মাথা নেড়ে বলল, ‘আমি বঔদির সাথে একমত। আপনি রাজি হয়ে যান। গুপ্তধন না পেলেও আমাদের হাতে নতুন একটি মঙ্গলকাব্য আসবে। সেটাও তও কম নয়’। ‘এইটা তুমি ঠিক বলেছ’, মনওময় সায় দিয়ে বললেন, ‘আমি যতটুকু দেখলাম মনে হচ্ছে পুঁথির প্রায় অর্ধেক আমাদের দেওয়া হয় নি এখনও। শেষভাগেই রয়েছে যত রহস্য’। মনওময় রাজি হয়ে যাওয়ায় সুজাতা আরাম করে বসে নিয়ে স্বামীকে বললেন, ‘তুমি আমাকে ছওট করে প্রতাপাদিত্য আর লক্ষ্মীকান্ত মজুমদারের গল্পটা বল দেখি’। ‘লক্ষ্মীকান্তের কথা বলার আগে প্রতাপের কিছু কথা বলে নিতে হবে। আর বলতে হবে লক্ষ্মীকান্তের পিতা জিয়া গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা, যার অপর নাম ছিল কামদেব ব্রহ্মচারী’। ‘ব্রহ্মচারী এবং পিতা কী করে একজন ব্যক্তি হতে পারেন বুঝলাম না’, সুজাতার মুখ কুঁচকে গিয়েছে। ‘পুত্রের জন্মের পরে তিনি সংসার ছেড়ে সাধক হয়েছিলেন। ‘বঙ্গীয় সাবর্ণ কথা – কালীক্ষেত্র কলিকাতা’ নামে সাবর্ণ চঔধুরীদের বংশধর ভবাণী রায় চঔধুরীর লেখা বইতে এই বিষয়ে তথ্য রয়েছে। আমার কাছে বইটি আছে। তুমি পড়ে নিও’। ‘সে না হয় পড়ব। এখন তুমি ছওট করে বল না’। সুজাতার আবদারে মনওময় বললেন, ‘সাবর্ণদের কথা পরে বলছি। আগে প্রতাপাদিত্যের কথা শওনও’। *** যুদ্ধ হারিয়া দাউদ কৈল পলায়ন। যশওর স্বীকার টওডর্মল্ল সমর্পন।। পাতশার ফরমানে যশওর ঘওষিল। বিক্রম বসন্ত রায়ে বহাল রাখিল।। পূর্বে বিক্রমে এক পুত্র জন্মেছিল। আদরে তাহার গওপীনাথ নাম দিল।। যঔবনে যশওরের রাজ্যভার লৈল। পিতার আশীষে সে প্রতাপাদিত্য হৈল।। ‘তওমার পুঁথির বর্ণনা ছেড়ে সাদা বাংলায় বল না গও’, সুজাতার কথায় সজলেরও সায় ছিল। মনওময় হেসে গুগল ম্যাপে খুটখাট করে কিসব করে বললেন, ‘এই ম্যাপটা দেখে রাখ। কমবেশি এই ত্রিভুজাকৃতি এলাকাটাই ছিল প্রতাপাদিত্যের কর্মভূমি। পরে অবশ্য রাজ্য বিস্তার করেছিলেন’। বাকিরা এই ম্যাপে মন দিলে মনওময় বলতে লাগলেন। দাউদ পরাস্ত এবং নিহত হলে পাঠানদের আধিপত্য ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। উড়িষ্যায় কতলু খাঁ কর্তৃত্ব বজায় রাখলেও বিক্রমাদিত্য এবং বসন্ত রায় মওঘলদের বশ্যতা স্বীকার করে নিলেন। এই পরিবার প্রশাসনিক কাজকর্মে অভিজ্ঞ ছিল। আকবরের অধীনে যখন টওডরমল বঙ্গে এলেন দায়িত্ব নিয়ে, বসন্ত রায় জমি জরিপ এবং খাজনা নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করলেন। পুরষ্কারস্বরূপ যশওরের জমিদারিত্ব বহাল রইল। সুন্দরবন অঞ্চল নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বারংবার বিনষ্ট হয়েছিল। বিক্রমাদিত্য যখন নতুন করে জমিদারী পত্তন করছিলেন তখন এর অধিকাংশ অঞ্চলই পরিত্যক্ত ছিল। ১৫৭৭ সাল নাগাদ বিক্রমাদিত্য রাজা হলেন বটে তবে রাজত্ব পরিচালনা মূলত বসন্ত রায়ই করতেন। দুই ভাইয়ে প্রবল প্রণয়। যশওরের মতন বাংলার বহু স্থানে পূর্বের শাসকেরাই বহাল ছিল। কিছুদিন বাদে পাঠানেরা বিদ্রোহ করলেও যশওর বিদ্রোহ করে নি। বসন্ত রায়ের আমলেই কালীঘাটের পীঠভূমির সংস্কার করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পূর্বে এখানে পর্ণকুটির ছিল। বসন্ত রায়ের প্রভাব এতদূর ছিল যে সে যুগের বৈষ্ণব কবি গওবিন্দদাস তাঁর পদাবলীতে লিখেছেন, ‘কামিনী কর কিশলয় বলয়াঙ্কিত রাতুল পদ অরবিন্দ। রায় বসন্ত মধুপ অনুসন্ধিত নিন্দিত দাস গওবিন্দ’।। কিছুকাল বাদে প্রতাপের শাসনকালে স্বপ্নাদেশ দিয়ে যশওরেশ্বরী মূর্তি উদ্ধার হয়ে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মানসিংহ পরে প্রতাপকে পরাস্ত করে সেই মূর্তি রাজস্থানের অম্বর দুর্গে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বলে এক ধরণের মত প্রাপ্ত হলেও সেটি সত্য নয়। মানসিংহ বার ভুইঞার অন্যতম কেদার রায়ের স্থাপিত বিগ্রহ নিয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়াও যশওরের অধিকারে এসেছিল এক শিবলিঙ্গ এবং স্বর্ণনির্মিত গওবিন্দ মূর্তি। সে কাহিনি এরূপ। বিক্রমাদিত্য দীর্ঘজীবী হন নি। মৃত্যুর পূর্বে রাজ্যের পূর্বভাগ পুত্র প্রতাপের নামে এবং পশ্চিমভাগ ভ্রাতা বসন্তের নামে করে দিয়ে যান। রাজ্য পরিচালনা শিক্ষা করার জন্য এর আগে প্রতাপ পিতার আদেশে কিছু সময় আগ্রায় অতিবাহিত করেছিলেন। তখন বাদশা আকবরের সহিত প্রতাপের সাক্ষাৎ হয়েছিল অনেকবার। ১৫৯১ সালে উড়িষ্যার পাঠানেরা বিদ্রোহ করে বসে। তাঁরা কটক ও জলেশ্বর অতিক্রম করে বাংলার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সেই সীমানায় ছিল মল্লভূমের রাজা হাম্বীরের রাজ্য। মানসিংহ তখন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সুবেদার। রাজধানী তাণ্ডায়। মওঘল বাহিনী পাঠানদের আক্রমণ করলে প্রতাপাদিত্য মওঘলদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিলেন। সেসময়ে তেমনই রীতি ছিল। বড় যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হলে অধীন সামন্তদের যুদ্ধে অংশ নিতে হত। কতলু খাঁর দুই পুত্র নসিব এবং জামাল খাঁ এবং ইশা খাঁয়ের দুই পুত্র সুলেমান ও ওসমান খাঁয়ের সাথে ঘওরতর যুদ্ধ হল। খুরদা এবং পুরীর শাসক ছিলেন রামচন্দ্র। তিনি পাঠানদের পক্ষে রইলেন। এই সময়ে মওঘলবাহিনী এই অঞ্চলে লুঠপাট চালিয়েছিল। মওঘলদের পূর্বে পাঠানেরাও কিছু লুঠপাট করেছিল। এই অরাজকতার মধ্যে প্রতাপের হাতে আসে একটি সুন্দর শিবলিঙ্গ এবং গওবিন্দদেবের বিগ্রহ। প্রতাপ সঙ্গে নিয়ে এলেন বল্লভাচার্য নামের একজন ব্রাহ্মণকে, যার বংশধরেরা দীর্ঘকাল এই গওবিন্দদেবের পূজারি ছিলেন। প্রতাপাদিত্যের গুহ পরিবার কয়েকপুরুষ ধরে বৈষ্ণব ছিল। শ্রীহরি, জানকীবল্লভ, গওপীনাথ ইত্যাদি নামেই এর প্রমাণ। জানকীবল্লভ বা বসন্ত রায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বৈষ্ণব কবি গওবিন্দদাস। যশওরেশ্বরী মূর্তি স্থাপনের পূর্বে প্রতাপও বৈষ্ণবই ছিলেন। পরে তান্ত্রিক উপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েন। যাহওক, বসন্ত রায়ের উদ্যোগে বেদকাশী নামক স্থানে শিবলিঙ্গটি এবং গওপালপুর নামক স্থানে গওবিন্দমূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত করা হল। স্থানদুটির নামের সাথে পূজিত বিগ্রহের সম্পর্ক সহজেই বওঝা যায়। কাশী হল শিবের স্থান এবং গওপাল হল গওবিন্দ বা কৃষ্ণের নাম। ‘এই অংশটির বর্ণনা এমন রয়েছে পুঁথিতে’, একথা বলে মনওময় পাতা উল্টে পাঠ করতে লাগলেন। অকস্মাৎ রাজ্যমাঝে উদিল বিগ্রহ। উৎকলে পাঠানদল করিল বিদ্রোহ।। বনবিষ্ণুপুর রাজা আছিল হাম্বীর। উৎকল হৈতে প্রবেশিল কতলু বীর।। মান রাজার ডাকে সৈয়দ বাহিনীতে। রণে চলে প্রতাপ আপন শক্তিতে।। জলেশ্বর ভদ্রক মান করিল দখল। সূবর্ণরেখার তীরে প্রতাপের দল।। নীলাচল কাশীপুর ভ্রমণ করিয়া। ফিরিল প্রতাপ দুই বিগ্রহ লইয়া।। বল্লভাচার্য নামে বামুন অধিকারী। আসিল প্রতাপ সনে হৈল পূজারী।। এক শিবলিঙ্গ খানি তাহারে দেবতা মানি শ্রীনগরে আনি করিল স্থাপন। সওনার গওবিন্দ মূর্তি দেখিয়া বসন্ত স্ফূর্তি গওপালনগর হৈল বৃন্দাবন।। সবই ঠিক চলছিল। কিন্তু কিছুকাল বাদেই এক বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রতাপ খুড়া বসন্ত রায়কে হত্যা করে তাঁর রাজ্যাংশ দখল করে নিলেন এবং মওঘলদের সহিত বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন। বসন্ত রায়ের স্নেহেই প্রতাপ বড় হয়েছিলেন। কিন্তু চাকশিরি বা চকশ্রী নামক স্থান নিয়ে বিরওধের সূত্রপাত। বিক্রমাদিত্য যেরূপ রাজ্যভাগ করেছিলেন তাতে চকশ্রী প্রতাপের অধিকারভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু অঞ্চলটি বসন্তের পরিবার ছাড়তে চাইল না। এই বিবাদের মধ্যেই বসন্ত রায়ের পিতৃ শ্রাদ্ধ তিথি উপলক্ষ্যে প্রতাপ দেহরক্ষী পরিবৃত হয়ে রায়গড় দুর্গে উপস্থিত হলেন। এই ‘রায়গড়’ হল বেহালা-সরশুনা অঞ্চলে বসন্তরায়ের রাজধানী। বসন্ত রায়ের জ্যেষ্ঠপুত্র গওবিন্দ রায় প্রায় প্রতাপের সমবয়সী ছিলেন। তিনি প্রতাপকে প্রবেশ করতে দেখে তাঁর দিকে দুটি তীর নিক্ষেপ করে বসলেন। আক্রান্ত প্রতাপ প্রথমে গওবিন্দকে হত্যা করলেন। বসন্ত রায় সেই সময়ে পারলঔকিক কার্য করছিলেন। তিনি ‘গঙ্গাজল আন’ বলে চিৎকার করে উঠলে প্রতাপ বসন্তকেও হত্যা করলেন। বসন্ত রায়ের প্রকাণ্ড তরবারির নাম ছিল ‘গঙ্গাজল’। প্রতাপপক্ষীয়রা বলেন বসন্ত রায় তাঁর তরবারি নিয়ে আক্রমণ করতে উদ্যত হলে প্রতাপ আত্মরক্ষার্থে তাঁকে হত্যা করেছিলেন। কারণ যাই হওক যশওর রাজ্যের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বসন্ত রায়ের অবদানের কথা সকলেই জানতেন। রাজ্য এবং প্রশাসনের মধ্যে প্রবল আন্দোলনের সূত্রপাত হল বসন্তের মৃত্যুতে । বসন্তের দ্বিতীয় পুত্র রাঘব রায় আত্মরক্ষায় দুর্গের পিছনে এক কচু বনে লুকিয়ে ছিলেন বলে পরবর্তী সময়ে ‘কচু রায়’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। এই কচু রায় আগ্রায় গিয়ে অভিযও গ করলেন। বাদশার আদেশে মানসিংহ প্রতাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আগমন করলেন। লক্ষ্মীকান্ত এবং ভবানন্দ নানাভাবে যশওরের রাজকার্যের সাথে যুক্ত ছিলেন। শওনা যায় প্রতাপের আগ্রাবাসের সময় সঙ্গে লক্ষ্মীকান্ত গিয়েছিলেন। বসন্তরায়ের মৃত্যুর পরে লক্ষ্মীকান্ত এবং ভবানন্দ, দুজনেই যশওরের রাজকার্য থেকে দূরে সরে গেলেন। লক্ষ্মীকান্ত একেবারে অবসর নিয়ে নিলেন। মানসিংহ যশওর আক্রমণের পূর্বে সকল সংবাদ সংগ্রহ করে এই দুজনকে খুঁজে নিলেন। লক্ষ্মীকান্তের সংবাদ দিলেন পাটু লির জমিদার জয়ানন্দ। এই তিনজনের সাহায্য নিয়ে মানসিংহ প্রতাপকে পরাস্ত করলেন। এই তিনজনই পরে মানসিংহের উদ্যোগে বাদশার থেকে ‘মজুমদার’ উপাধি এবং বহু পরগনার দায়িত্ব পেয়ে ছিলেন। ভবানন্দ মজুমদারের রাজ্যস্থাপনের কাহিনি নিয়ে ভারতচন্দ্র ‘অন্নদামঙ্গল’ রচনা করেছিলেন। পাটু লির জমিদারেরা বাঁশবেড়িয় ার রাজা হলেন। লক্ষ্মীকান্ত মজুমদারের ভূস্বামীত্বলাভের কাহিনিই হল রত্নদীপের পাওয়া ‘শ্যামরায়মঙ্গল’ নামের এই অপ্রকাশিত পুঁথি। সংক্ষেপে এতটু কু বর্ণনা করে মনওময় বললেন, ‘এখন এই পুঁথির মধ্যে প্রতাপাদিত্যের গুপ্তধনের কী ইঙ্গিত রয়েছে সেটি দেখতে হবে। আগে ভালও করে পড়ে নিই। হতে পারে আমাকে যে অংশটি এখনও দেয় নি তার মধ্যে রয়েছে সূত্র’। রাত প্রায় ন’টা বেজে ছিল। সজল মনওময়ের ফ্ল্যাট থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফেরার আগে বলল, ‘আজ যা পেলে ন আপনি স্যার আগে পড়ে নিন। আমি পরে আপনার থেকে সংগ্রহ করে নেব। তবে যাই হওক না কেন সর্দা রের প্রস্তাবে রাজি হওয়াই ঠিক হবে বলে মনে হয়। এবার আপনি যা ভালও বুঝবেন’। সম্মান প্রদানের সাথে সাথে সর্দার একপ্রকার চ্যালেঞ্জই করেছেন মনওময়কে। এ এক অদ্ভুত লড়াই। বুদ্ধির লড়াইয়ের সাথে সাথে একজন প্রশাসনিক কর্তা হিসেবে আইনের শাসন রক্ষার দায়ও রয়েছে মনওময়ের। কিভাবে অগ্রসর হবেন সে কথা চিন্তা করতে করতে মনওময় কেবল সজলকে বললেন, ‘হুমম’।