তিনটি কবিতা।

ছোবল 


 


বাজপাখি চক্কর খাচ্ছে


আমি তার চোখ,


ঢেউয়ের ভেতর লুকাই,


জলের অতলে লুকাই


 


ফাটা বাঁশের মতো 


লম্বা চঞ্চু


ঠিক টেনে নেয়


 


রক্তাক্ত বেদনা নিয়ে 


ঠোঁটের মধ্যে


লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বলি,


 


দ্যাখো, অবশেষে আমিও


পাহাড়ে যাচ্ছি


 


দুই,


 


বিষণ্ণতার কোলাজ


 


 


তুমি চলে যাও,বন্ধ ঘড়ির মতো আমি হয়ে থাকি


চলে যাও তুমি বিষণ্ণ চোখ দেখে,যাও পরবাসে


মুহূর্ত শুধু ঝাকঁ বেঁধে চলে, চলে শুধু আঁকাআঁকি,


চাঁদে ডোবা রাত,সাপলুডু খেলা,চোখে শুধু ঝড়-ভাসে


 


বিষাদের আলপিনে বেদনার কারুকাজ মেঘলোকে,


রাজহাঁস উড়ে যায়,ডাব পড়ে আছে, ডাব, গাবছায়া,


কুকুরেরা টানা কেঁদে যায় ফিসফিস ধনি-শোকে,


চলে গেলে তুমি,বিষণ্ণ রাত, শিশিরেরা আবছায়া!


 


ঘুরে দাঁড়ালাম,গাছ  গায় গান,উট নাচে রাত্তিরে,


কচ্ছপ শোন,আয়ু দাও গুরু ডুবে যাবে পুণ্যতায়,


উড়ে যেতে দেখি তোমার ইমেল, জলহীন চোখ-নীড়ে


উদাসীন বালু ফরফর ওড়ে আমি উড়ি  শূন্যতায়


 


তিন


একজন চোখখেকো,,, আলোখেকো


 


এই যে আপনি এসেছেন,


চা খেয়েছেন?


ভেবেছেন, আমার সহ্য আগুনের মতো


আমার ডালপালা পাখিদের মতো?


আমার দৃষ্টিশক্তি আঁধারের মতো,


আমার চলা ছায়াহীনের মতো


 


যে আঁধার থেকে মৃত্যু ভেসে ওঠে, সূর্য ফুরিয়ে যায়,আর মনে হয়, একবেলা আহা! যদি সবজির সাথে সরষে ইলিশ আর ধোঁয়া ওঠা কাচ্চির সাথে কাবাব


 


এরপরও আপনার খাওয়া ফুরাবে না


এরপর ওপরে ধোঁয়া ছুড়ে বলবেন,


হেহ! এতো,একেবারে বয়ে যাওয়া মেয়েদের মতো


আপনার চোখ দেহ খায়,শালুকের মতো চোখও খায়,,


 


কোনদিন ভাবিনি আমি নিঠুর  জলে নাম লিখিয়েছি  ,


ভেবেছিলাম, আমার অস্তিত্বের ছাপ অবশ্য থাকবে কোথাও,


আমারও ছায়া আছে,স্বীকার করবে কেউ 


অথচ 


পেছনে তাকিয়ে দেখি সুবিশাল জলের স্রোত,, 


 


এতোদিন তবে এই জলের মধ্যে দিয়েই


নিজেকে কেটে কেটে হেঁটে এসেছি,


আসলে প্রেতাত্মার মতো পানীয় আপনি খেতেন,


তার মধ্যে আলোর দেখা আমিও দেখে কতদূর,,


ধীরে ধীরে সমুদ্রকে যখন চিনতে শুরু করি,, 


নিজের নামের উদ্যেশ্যে তার নাম করব কীনা


ভেবেছি,সমুদ্র দেখেও বলবেন,খেয়ে ফেলতে 


ইচ্ছে করছে!


 


কিন্তু যতক্ষণ কানকো থাকে,কীভাবে 


মাছ ভুলে যায় নিজের সাঁতার?


কানকো থেকে কুমির, এরপর ডানায় ডানায় বাজপাখি। 


হয়রান হলে নিজের ভেতরের  পাহাড়ের চুড়োয় বসি


ধীরে ধীরে আমি আমার শরীরকে  নিজের শরীর ভেবে যত্ন


করি,আত্মাকে নিজের আত্মা পরমে মুড়িয়ে 


আত্মহত্যা শব্দ ভুলে গেছি। 


 


চোখের আত্মা খাওয়া মানুষ


এখনো মিষ্টিপান মুখে আলোতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছেন?


 


ফুরাবেনা। আপনার ফুরাবে না


এবার চা ছেড়ে  চৌরাস্তা ধরে হাঁটুন

  • নাসরীন জাহান
  • কবিতা