বখশিসনামা

সত্তর পার করা, মলিন শাড়ির ভদ্রমহিলার মুখের সঙ্গে আমার প্রয়াতা দিদুনের মুখের মিল ছিল খুব। দিদুন মানে আমার মায়ের মা। মলিন শাড়ির ওই মহিলা বসে থাকতেন উত্তর কলকাতার এক ব্যস্ত রেলস্টেশনলাগোয়া সাবওয়ের দক্ষিণ প্রান্তে। সামনে রাখা থালার মধ্যে ছন্নছাড়া অবস্থায় থাকত কয়েকটা এক, দুই, পাঁচ টাকার কয়েন। প্রায় অথর্ব ছিলেন তিনি। যাতায়াতের পথে আমি সম্ভব হলে দিতাম, যতটুকু যা পারা যেত। একদিন বলেছিলাম, “দিদা, একেবারে ভাববে না ভিক্ষা দিলাম আমি। এটা আমার তরফ থেকে তোমায় দেওয়া বখশিস। বুঝেছো?” বৃদ্ধা ঘাড় নেড়েছিলেন। ত্রিকোণমিতি শেখানো ওঁর মুখের রেখায় একথা শোনার পরে খেলে গিয়েছিল আনন্দ আলপনা। হেসেছিলেন। মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন। এর পর থেকে আমায় দেখলেই বলতেন, “আমার বখশিস?” জেনেছিলাম, বছর চল্লিশের এক অবিবাহিত, স্কুলছুট, অরোজগেরে, মাতাল সন্তান ছাড়া ওঁর তিনকূলে কেউ নেই আর। বলেছিলেন, “তোমাদের দেওয়া বখশিসের টাকাতেই আমার সংসার চলে বাবা।” একটু থেমে, আকাশের দিকে তাকিয়ে, দীর্ঘশ্বাসসহ বলেছিলেন, “আর আমার সংসার!”
বছরখানেক আগে দেখেছিলাম, থালার পাশেই রেখে দিয়েছেন একটা কিউআর কোড। বললেন, “ছেলে করে দিয়েছে। বলেছে, এটায় মোবাইলের ক্যামেরা মারলে তোমাদের দেওয়া টাকাটা সরাসরি ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে।” জিজ্ঞেস করেছিলাম, “ওর মানে কার? তোমার ছেলের?” মহিলা সম্মতি জানিয়ে বলেছিলেন, “ছেলে তো ভালর জন্যই করে দিয়েছে। বলল, এত খুচরো তোমার তো বয়ে নিয়ে আসতে কষ্ট হয় মা। টাকাটা সরাসরি ব্যাঙ্কেই চলে আসুক।”
সপ্তাহখানেক আগের ঘটনা। প্রতিদিনের মতো বৃদ্ধা বসেছিলেন সেদিনও। চিবুকে কাটা দাগ। চুল অবিন্যস্ত। কনুইতে ব্যান্ডেজ। সবচেয়ে অবাক হয়েছিলাম থালার পাশে বসানো কিউআর কোডটা দেখে। অর্দ্ধেকটা আছে। বাকি অর্দ্ধেক নেই। ভাঙা। মহিলার চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছিল। কাঁপা গলায় বললেন, “তোমাদের দেওয়া বখশিসগুলো মদ খেয়ে উড়িয়ে দিত আমার ছেলে। সরাসরি ব্যাঙ্কে যাওয়ায় ওর হয়তো উপকার হয়েছিল। আমায় হিসাব দেখাতে হত না। কাল রাত্রে প্রতিবাদ করায় আমার গায়ে ও হাত তুলেছে বাবা। আমাদের দুজনের সংসার। নিঠুর হতে চাইনি। হতে হল। রেগেমেগে কোডটা ভেঙে দুভাগ করে একভাগ ওর কাছে দিয়ে এসেছি। বলেছি, বাকি অর্দ্ধেকটা শুধু আমার। আমিই তো খাটছি। আমার ভাগে তুই ভাগ বসাবি না একদম। এবার থেকে সব কিছু হাফ হাফ। ক্ষমতা থাকলে রোজগার করে দেখা।”
বৃদ্ধা কপাল চাপড়াচ্ছিলেন। আর অর্দ্ধেক কিউ আর কোড দেখার জন্য লোক জমছিল ক্রমশ। মহিলার মানসিক সুস্থতাকে কেন্দ্র করে উড়ে আসছিল আলটপকা মন্তব্য।
বখশিস সম্পর্কে বিশদে যাওয়ার আগে এই ঘটনাটির কথা উল্লেখ করার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না। ডিজিটাল দুনিয়ার এক অন্ধ গলির কোণে দেখতে পাওয়া এই প্রাচীন চোখের জলের স্মৃতি গলার কাছে পাথরের মতো এসে বিঁধছিল বারবার। ওঁর এগিয়ে দেওয়া হাতের কথা মনে আসছিল। “আমার বখশিস?”
মনে পড়ে যাচ্ছে পার্ক স্ট্রিটের এক বিখ্যাত রেস্তোরাঁর ঘটনাটাও। দশ বারো জন বন্ধু মিলে রাত দখল করে, পেটপুরে ডিনার করে যখন রেস্তোরাঁ ছাড়ছিলাম, আমাদের সঙ্গে প্রায় ফুটপাথ পর্যন্ত চলে এসেছিলেন আমাদের ওয়েটার। ওঁর চাহনির মধ্যে লেপ্টে ছিল বিষন্নতা। শেষ পর্যন্ত মুখ ফুটে বলেই ফেললেন, “স্যার, টিপস্? সামান্য কিছু বখশিস?” আমার এক বন্ধুর ঝটিতি উত্তর এসেছিল, “বিলটা তো আসলে ডিজিটালি পে করে দিলাম ভাই। পরের বার, কেমন?” ততক্ষণে অ্যাপ ক্যাব এসে গিয়েছিল আমাদের সামনে। গাড়িতে ওঠার পরে বন্ধু চোখ মেরে বলেছিল, “কেমন ম্যানেজ করলাম দেখলি?”
ডিজিটাল আমলে আমাদের টিপস দেওয়ার অভ্যেসের কেমন রদবদল হয়েছে তা জানতে চাইলে অবাক করা তথ্য মেলে। টিপস আদায়ের ক্ষেত্রে পরিষেবাপ্রদানকারী সংস্থাগুলির ‘আয়োজন’-এর ত্রুটি নেই কোনও। সঙ্গে থাকা স্মার্টফোনের অ্যাপ খুললেই তা মালুম হয়। যে অনলাইন খুচরো বিপনি থেকে বাজার করে আসছি গত কয়েক বছর, তারা ইদানীং ডেলিভারিবয়কে বখশিস দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে। পর্দায় ফুটে উঠছে, ‘বিরুপ আবহাওয়া, জঘন্য ট্রাফিকের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার দোরগোড়ায় সামগ্রীগুলি পৌঁছে দিতে আমাদের অ্যাসোসিয়েটরা বদ্ধপরিকর। ওঁদের এই কর্মপরায়নতাকে সম্মান জানানোর জন্য কিছু বখশিস দিতে পারেন।’ পর্দায় ফুটে আসে ১০, ২০, ৫০, ১০০-র মতো বিভিন্ন সংখ্যা। আঙুল ছুঁইয়ে দিলেই অ্যামাউন্ট যোগ হয়ে যাবে প্রদেয় বিলে। রেস্তোরাঁ থেকে খাবার ডেলিভারির অ্যাপেও এখন জুড়ে দেওয়া হয়েছে এই আবেদন। অ্যাপমারফৎ তো আজকাল গৃহকার্যে সহায়তা করার মানুষও মেলে। সেখানেও দেখেছি এই বখশিস আদায়ের অনলাইন কারুকাজ। তবে সমীক্ষা বলে, অনলাইন অপশনের দিকে আমরা ঝুঁকছি যত, পাল্লা দিয়ে কমে যাচ্ছে আমাদের বখশিস দেওয়ার মানসিকতা। টাকা পয়সার যুগে আমরা আরও ভাল বখশিসদাতা ছিলাম! অন্যভাবে বলা যায়, ডিজিটাল জমানা আমাদের আরও বেশি ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ’ করেছে। মন থেকে আবেগ সরিয়েছে। বেঁচে থাকার মোট খরচ বাড়ালেও কমিয়ে দিয়েছে আবেগজনিত খরচ। আর কে না জানে, কাউকে বখশিস দেওয়া তো আবেগজনিত খরচের মধ্যেই পড়ে।
আরও বেশি বখশিস কি করে পাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে দুনিয়ায় গবেষণা হয়েছে বিস্তর। ক্রয় করার সময় ক্রেতাদের আচরণ অর্থাৎ কনজিউমার বিহেবিয়ারকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় ফেলে ওয়াকিবহাল শিবিরের বিশেষজ্ঞরা দিয়েছেন নানা উপদেশ। রেস্তোরাঁর ওয়েটারদের বলা হচ্ছে, সুযোগ পেলে অতিথিদের বড় দলকে এড়িয়ে গিয়ে বেছে নিন ছোট টেবিল। অতিথিদের বড় দলের বিল বেশি হলেও তাঁরা সম্মিলিতভাবে যা বখশিস দেবেন, তা তিন চারটি ছোট দলের অতিথিদের থেকে পাওয়া বখশিসের তুলনায় অনেক কম। অতিথিদের টেবিলে বার বার এসে একটু হাসি উপহার দিলে বখশিসের পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে সমানুপাতিকভাবে। অতিথিরা যখন ‘রিপিট’ বলবেন, তখন ওঁদের কিছু জিজ্ঞাসা না করেই আগের অর্ডারের পদগুলো গড়গড় করে বলে যেতে পারলে নাকি সম্ভাব্য বখশিসের পরিমাণও বেড়ে যায়। কারণ খুব সহজ। অতিথিরা বুঝতে পারেন, ওয়েটারবাবু তাঁদের খবর রাখছেন। কোনও অতিথি একা এলে এবং টেবিলে বসেই মোবাইলে ঘাড় গুঁজে না ফেললে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে সেদিনের খবরের কাগজ কিংবা কোনও জনপ্রিয় ম্যাগাজিন। এর ফলে একেবারে প্রথম পর্ব থেকেই অতিথিদের সঙ্গে যোগাযোগটা তৈরি হয়ে যায়। মার্কেটিংয়ের ভাষায় একে বলে কানেক্ট। গবেষকরা জানাচ্ছেন, পরিষেবা প্রদানের সময় এই যোগাযোগ যত বাড়ে, তত ঊর্ধ্বমুখী হয় মোটা বখশিস পাওয়ার সম্ভাবনা। আরও আছে! অতিথির টেবিলে বিলটি রাখার আগে ওয়েটারবাবু যদি কলম দিয়ে নিজ হস্তাক্ষরে বিলের উপরে ‘থ্যাংক ইউ’ লিখে দিতে পারেন, একটি স্মাইলি এঁকে দিতে পারেন, কাস্টমাররা সম্মোহিত হন। বখশিসের গায়ে লাগে জরির ঝালর। উপদেশনামার এ তো সবে শুরু। আন্তর্জালে প্রশ্ন করলে উপদেশের যে তালিকা ফুটে ওঠে, তা অন্তহীন।
বখশিস দেওয়ার কি কোনও ব্যাকরণ রয়েছে? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করা নানাবিধ সমীক্ষা বলে, বিলে যে অঙ্কটি ছাপানো থাকে, বখশিসের পরিমাণ হয় সাধারণত তার ১০ থেকে ২০ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেস্তোরাঁর সহায়করা সবচেয়ে বেশি বখশিস পেয়ে থাকেন, প্রায় ২০ শতাংশ। আবার আবার চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া সহ অনেক দেশেই বখশিস দেওয়া কিংবা নেওয়াকে অভদ্র রুচি হিসেবে দেখা হয়। ট্যুর ও ট্রাভেল সংস্থায় কাজ করা আমার এক বন্ধুর কথায়, “শুধু মোটা টাকা দিয়ে হলিডে প্যাকেজ বুক করে বিদেশের প্লেনে চেপে বসলেই বিদেশভ্রমণ হয় না। কোথায় বখশিস দেওয়া উচিৎ আর কোথায় তা একেবারেই দৃষ্টিকটু—কাস্টমারদের এটুকু শেখাতেই অনেক সময় খরচ হয়ে যায় আমাদের। বখশিসের সংস্কৃতি বড্ড জটিল। কোনও ব্যাখ্যা নেই। তাও অহেতুকভাবে প্যাঁচালো এবং জটিল। কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছি বহুবার। উত্তর মেলেনি।”
পরিষেবাতে খুশি হলেই আমরা বখশিস দিয়ে থাকি—এমন ভাবতে শুরু করলে সেখানে থেকে যাবে মস্ত গলদ। একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, দুনিয়ায় যত মানুষ পরিষেবায় খুশি হয়ে বখশিস দিয়ে থাকেন, তার চেয়ে বেশি মানুষ বখশিস দেন পরিস্থিতির চাপে পড়ে। কিছু না দিতে পারলে কেমন দেখায় এই অপরাধবোধ থেকে, অস্বস্তি থেকে, এমনকি পরিস্থিতি ঠিকঠাক বুঝতে না পেরেও ওয়ালেট থেকে কয়েকটি নোট বের করে বিলের জ্যাকেটের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখি আমরা, বখশিস হিসেবে। ফোর্বস-এর করা ‘২০২৩ টিপিং কালচার সার্ভে রিপোর্ট’ অনুযায়ী, পরিষেবাতে খুশি হয়ে মার্কিন দেশে বখশিস দিয়েছেন ২৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে, পরিস্থিতির চাপে পড়ে টিপপ্রদান করেছেন ৩১ শতাংশ অতিথি। আর, শুধুমাত্র অপরাধবোধ থেকে বখশিস দিয়েছেন ২৩ শতাংশ মানুষ!
পরিষেবা প্রদানের যত ক্ষেত্র রয়েছে, তার মধ্যে বখশিস আদায়ে সবার আগে স্থান রেস্তোরাঁর। দুনিয়াজুড়ে ডিজিটাল পেমেন্ট আর নগদহীন লেনদেনের বাড়বাড়ন্তে বখশিস প্রাপ্তিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রেস্তোরাঁকর্মীরা। কপালের ভাঁজ আরও গভীর ভারতবর্ষের রেস্তোরাঁকর্মীদের। ক্যাশ ফ্রি লেনদেনের ক্ষেত্রে এমনিতেই আমরা বিশ্বের প্রথম সারির দেশ। অন্য একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৬-২৭ আর্থিক বর্ষে এদেশের মোট লেনদেনের ৫০ শতাংশই হবে নগদহীন। এখন এর পরিমাণ ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগদহীন লেনদেনের দিকে যত পাল্লা ভারি হবে, তত কমবে বখশিসের পরিমাণ। কোনও এক অজানা সমীকরণে আমাদের মনের অলিগলি জানে এবং আওড়ায়—নগদ না হলে আবার বখশিস কি!
মার্কেটিং এবং কনজিউমার বিহেবিয়ারের বিশেষজ্ঞরা নানা গবেষণা করে দেখেছেন,অ্যাপের মাধ্যমে বখশিস চাওয়া হলে তা ক্রেতাদের কাছে অনেকটা স্পিড ব্রেকারের মতো লাগে। বখশিস শব্দটা এখনও হয়তো তেমনভাবে পরে উঠতে পারেনি বাইনারি জামা। আমেরিকার এক নাগরিক তাঁর ব্লগে লিখেছেন, ‘কফি শপের সেল্ফ হেল্প চেক আউটেও দেখি, পর্দায় ফুটে এল—প্লিজ অ্যাড টিপস। আরে কোনও মানুষের মুখই দেখতে দিলেন না আপনারা। কাকে বখশিস দেবো? যন্ত্রকে? তাতে লাভ? আর যন্ত্রের থেকে যে সেটা মানুষের কাছে পৌঁছবে, তার প্রমাণ?’
শেষ লাইনটি আরও নানা মানুষের প্রশ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়ায়। অনেকেই জানতে চাইছেন, ডেলিভারি বয়কে যে বখশিস আমরা দিচ্ছি অ্যাপের মাধ্যমে, তা যে দিনের শেষে ওই ছেলেটি কিংবা মেয়েটির কাছে পৌঁছচ্ছে তার নিশ্চয়তা কই? কয়েকটি সংস্থা বখশিস প্রদান নিয়ে তাদের ‘স্বচ্ছ’ অবস্থানের কথা বলেছে। কিন্তু সাধারণ ক্রেতাদের মনের থেকে ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও। সময়মতো প্রাপ্য টাকা না পাওয়া নিয়ে প্রায়ই সংস্থার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ডেলিভারি বয়রা। এমন ঘটনা ঘটলে সন্দেহের মেঘ আরও গাঢ় হয়। এক হাতে অনলাইন প্রেমকে আঁকড়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে ক্রেতারা ছুঁড়ে দিচ্ছেন হিজিবিজবিজ প্রশ্ন লেখা চিরকুট। বলছেন, “অ্যাপ না থাকলে আমি ঠিক ক্যাশে বখশিস দিতাম ডেলিভারি বয়কে। মুশকিলটা হল, আমার কাছে অ্যাপ আছে, তাই ক্যাশ নেই! হায় রে।”
বখশিস দেওয়া ভাল না মন্দ সে প্রশ্ন আপাতত থাক। এক পক্ষ বলবেন, যাঁদের বখশিস দেওয়া হচ্ছে তাঁরা তো মাস গেলে বেতন পান এই কাজ করার জন্য। খামোখা অর্থ ধ্বংস কেন? অন্য পক্ষের যুক্তি, পরিষেবা যে ভালো লেগেছে তা বোঝানোর জন্য টিপ দেওয়াই তো চিরাচরিত অভ্যেস। অন্যকে কিছু বাড়তি উপহার দেওয়ার মধ্যে জুড়ে থাকে আত্মতৃপ্তিও। এতে দোষ কোথায়? নগদহীন পরিষেবা এই এতদিনের অভ্যেসে ফাটল ধরায় কোন স্পর্ধায়?
বিস্ময়ে প্রাণ জাগে। বিপুলা এ ধরণীতে অনেক প্রশ্ন থাকে যার উত্তর মেলেনা। এটিও হয়তো তাই।
কিছু মানুষ বাড়তি খরচ বাঁচিয়ে বাঁচছেন। আর কিছু মানুষ মনের গভীরে তুবড়ে, দুমড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন কিউআর কোড।
কে কার খবর রাখে এ দুনিয়ায়?

  • অম্লানকুসুম চক্রবর্তী