বসত

 

উপজীব্য নদী ঘেরা প্রান্তিক সুন্দরবনের জীব

 

কুরে খায় নোনাজল, রোজকার ঢেউয়ে নামে ধ্বস

মাটির বাঁধের সাথে তবুও দিয়েছে কাঁধ, ঘাম

 গোগ্রাসী নদীকে ঠেকাই তিন হাত দূরে

আমাদের বসতজুড়ে প্রতিদিন লড়াই রেখেছি জারি,

 ফুরনো পান্তার হাঁড়িতে জমে থাকে নুন

 দিনভর শ্রমেও দুর্দশা কাটেনা আমাদের ঘরে

 

নদীরা পূর্ণগর্ভা হলে আমরা সিঁধোই রোজ জলের গভীরে।

 মরিনা সহজে তাই বেঁচে থাকি জল-কাদা মেখে,

 আমাদের 'ছটাক ধানজমি আর ভিটেটুকু নিয়ে

দেবতারও অদৃশ্য ঘর আছে এইখানে, আশেপাশে

আলো বাতাস তাই অঢেল ,এতো সবুজ বিছনো,

 কিন্তু সে রুদ্র নয়তো বাকি মরসুম কাটায় ঝিমিয়ে।

 

 এখানে এদেশে অকারণে নেমে আসে ঘরখেকো শীত

 মানুষেরা ডানাহীন,তবু পরিযায়ী তারা, উড়ে যায়

ঘরের দেয়ালে ধরে ঘুণ, ঘরে ঘরে গোপন নোনা।

কিছু উঁই পোকা, কুকুর ,চালাক শিয়াল থাকে মাঠে

 রাক্ষুসে খিদেই তারা সবকিছু গিলে নিতে চায়

ফসলি জমি ভুলে যায় বীজতলা,বীজ বোনা।

 

 আমাদের পাঁচ ভাই লড়ি, বিপরীতে একশত এক রুখে

 মাধবের মতলব বুঝিনা এখন আর সোজাসুজি

বেলা কাটে খোঁজাখুঁজি করে কোথায় রসদ মেলে।

 প্রাচীন পিতারা থেকেছে অরণ্যে, পত্রকুটিরে দিন বেশে,

 আমরা এখানে এসে বরণ করেছি মাটির পৃথিবী।

 উপেক্ষা পুরুষ-ঘাতিনী,রোধি তারে তুচ্ছ বল্কলে।

  • পলাশ মন্ডল