আজকাল ওয়েবডেস্ক: চরম আশ্চর্যজনক এক ঘটনা। এমন এক জীবনের চিত্রনাট্য যা যে কোনও সিনেমার কাহিনিকেও হার মানাতে পারে। তার প্রমাণ মিলল আরও একবার। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রেডিটে এক ব্যক্তি সম্প্রতি নিজের জীবনের এক অবিশ্বাস্য কাহিনি তুলে ধরেছেন, যা নিয়ে নেটদুনিয়ায় রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। তাঁর স্ত্রী কর্মক্ষেত্রে বসের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন। এরপরই ঘটনার এক নাটকীয় মোড়। খবর অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর প্রেমিকেরই মেয়েকে বিয়ে করেছেন!
রেডিটে করা একটি পোস্টে ওই ৩৫ বছর বয়সি ব্যক্তি জানিয়েছেন, কলেজের প্রেমিকাকে বিয়ে করার পর তাঁদের এক কন্যাসন্তান হয়। কিন্তু সুখের সংসারে ফাটল ধরে যখন তাঁর স্ত্রী (ছদ্মনাম H) অফিসের বসের (ছদ্মনাম AP) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্বামীর বিশ্বাস অর্জনের জন্য স্ত্রী রাত পর্যন্ত কাজের অজুহাত দিতেন। এমনকী, বসের স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত জেনেও ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে এই প্রতারণা চলে।
অবশেষে সেই অবিশ্বাস্য প্রতারণার খবর ওই ব্যক্তির কাছে নিয়ে আসেন বসেরই কন্যা (ছদ্মনাম S)। তিনি বাবার সঙ্গে মহিলার এই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে একাধিক ছবি ও মেসেজের স্ক্রিনশট তুলে দেন ওই ব্যক্তির হাতে। এরপরেই তাঁর স্ত্রী কোনওরকম অনুশোচনা ছাড়াই স্বামী এবং শিশুকন্যাকে ফেলে রেখে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। শুধু তাই নয় বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতেও তিনি অস্বীকার করেন।
এরপর শুরু হয় নতুন এক জীবন। একা বাবা হিসেবে ওই ব্যক্তির সংগ্রাম শুরু হয়। সন্তানের দেখভাল এবং কাজের চাপে যখন তিনি বিধ্বস্ত, তখনই তাঁর জীবনে পুনরায় আসেন সেই বসের মেয়ে, যে তাঁকে তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানিয়েছিলেন। ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের দেখাশোনার জন্য যুবতী বাড়িতেই থাকতেন। পাশাপাশি তিনি ওই ব্যক্তির কন্যার দেখভালের দায়িত্ব নেন। এরপর ধীরে ধীরে যুবতীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির কন্যার এক গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মধ্যেও বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। পরবর্তীতে এক ভ্রমণে গিয়েই তাঁরা পরস্পরের প্রতি অনুরাগের কথা স্বীকার করেন।
এরপরেই তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। জানা গিয়েছে, যুবতীর ক্যানসার আক্রান্ত মায়েরও ইচ্ছে ছিল মেয়ের বিয়ে দেখার। কিন্তু এই বিয়ের খবর পৌঁছয় তাঁর বাবা এবং বাবার প্রেমিকার কানে। খবর পেয়ে তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা দম্পতির অনুপস্থিতিতে পাড়ায় এসে কুৎসা রটান এবং প্রতিবেশীদের কাছে বিদ্রূপ করে বলেন, "প্রাক্তন স্ত্রীকে দেখানোর জন্যই এত কমবয়সি একটি মেয়েকে বিয়ে করা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।”
প্রাক্তন স্ত্রীর এই অভিযোগে আত্মসংশয়ে ভুগে ওই ব্যক্তি রেডিটে সকলের পরামর্শ চান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমি কি আমার মেয়ের সামনে সঠিক উদাহরণ তৈরি করছি?” তবে নেটিজেনরা ঢালাও সমর্থন জানিয়েছেন ওই ব্যক্তিকে। অধিকাংশের মতেই, যে মা নিজের সন্তানকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছেন, তাঁর এই বিষয়ে কথা বলার কোনও নৈতিক অধিকার নেই।
এক ব্যবহারকারী ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখেছেন, “আপনি এমন একজন মহিলাকে ভালবেসেছেন, যিনি আপনার মেয়ের নিজের মায়ের থেকেও তাকে বেশি ভালবাসেন! নিজেকে সন্দেহ করবেন না।” এই আশ্চর্যজনক ঘটনায় নেটিজেনদের রায় স্পষ্ট - প্রতারণার জবাবে যে নতুন ভালবাসা জন্ম নিয়েছে, তার পরিস্থিতি যতই অদ্ভুত হোক না কেন, তার প্রতিই সমর্থন জানিয়েছেন সকলে।
