বীরেন ভট্টাচার্য, দিল্লি: শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই রাজ্যের বকেয়া পাওনা আদায়ের দাবিতে সরব তৃণমূল। আজ লোকসভায় জিরো আওয়ারে বিষয়টি তুলে ধরেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ ব্যানার্জি। মনরেগা, আবাস যোজনা, স্বাস্থ্য মিশনের মতো প্রকল্পগুলিতে রাজ্যের বিপুল পরিমাণ বকেয়া দ্রুত মেটানোর দাবি তোলেন তিনি। সুদীপ ব্যানার্জির অভিযোগ, রাজ্যকে আর্থিকভাবে অবরুদ্ধ করে উন্নয়নের কাজ থমকে দিচ্ছে মোদি সরকার। দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ও একই দাবিতে সরব হন। 

সুদীপ ব্যানার্জি বলেন, ‌‌‘‌মনরেগা, আবাস যোজনা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মতো প্রকল্পগুলিতে রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যত টাকা বরাদ্দ করেছে, সেই সমস্ত টাকা আটকে রাখা হয়েছে গত ২ বছর ধরে। রাজ্যের বকেয়া টাকার পরিমাণ ৮,০০০ কোটি টাকা।’‌ বকেয়া আদায়ের দাবিতে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে এসে আন্দোলন করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি সহ অন্যান্য সাংসদরা। সুদীপ ব্যানার্জি বলেন, ‘‌আমরা কয়েকজন সাংসদ এবং মন্ত্রী দিল্লিতে এসেছিলাম কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। অবাক করার বিষয়, আমাদের ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করানো হল, চা পানের প্রস্তাব দেওয়া হল। আড়াই ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর আমরা যখন দেখা করতে গেলাম, তিনি চলে গেলেন।’‌ তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‌আমাদের প্রবীণ সাংসদদের গায়ের জোরে তুলে নিয়ে যাওয়া হল ২০ কিলোমিটার দূরের থানায়। আমার আবেদন, কোনও দেরি না করে বকেয়া টাকা দেওয়া হোক।’‌ সুদীপের কথায়, ‘‌আমরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছে দিতে চাই এবং অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’‌ একই দাবিতে, সরব হন সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘‌মনরেগা খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের বকেয়ার অঙ্ক বর্তমানে ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলার মানুষের দুঃখ যে, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের বঞ্ছিত করছে।’‌ 

সুদীপ ব্যানার্জির দাবির পাল্টা সরব হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তোলেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সাংসদরা। পরে সাংবাদিকদের সুদীপ ব্যানার্জি বলেন, ‘‌মন্ত্রী রাজনীতি করলেন। প্রথম কথা, আমি যে বিষয়গুলি তুলেছি, মনরেগা, স্বাস্থ্য মিশন, আবাসন। এগুলি নিয়ে জবাব দেবেন এই সমস্ত দপ্তরের মন্ত্রী। ধর্মেন্দ্র প্রধান জবাব দিতে শুরু করলেন। আমি আশ্চর্য হলাম। এই বিষয়টি এখানেই শেষ হবে না। অতিরিক্ত বাজেট নিয়ে আলোচনায় আমরা বিষয়গুলি তুলব। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত, মুখ্যমন্ত্রী আসতে প্রস্তুত। যে জবাব আজ দেওয়া হয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার দম্ভের জোরে, সেটি গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।’‌