শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Riya Patra | ০১ মে ২০২৪ ১৬ : ৩৯Riya Patra
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাতীয় নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফার চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের হার প্রকাশ করার পর গোটা দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কমিশনের তরফে জানানো হয় প্রথম দফায় ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। অথচ এর আগে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে হয়েছিল দ্বিতীয় দফায় ৬০.৯৬ শতাংশ ভোট দান হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় কিভাবে হঠাৎই ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বেড়ে গেল তা নিয়েই বুধবার মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় মালদা (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলী রাইহানের সমর্থনে জনসভা করতে এসে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি।
আজকের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "এর আগে নির্বাচন কমিশনের সূত্র ধরে সমস্ত সংবাদ মাধ্যম লিখেছে কোথায় কত শতাংশ ভোট হয়েছে। অথচ গত রাতে হঠাৎ আমি শুনতে পেলাম যেখানে বিজেপির কম ভোট হয়েছে সেখানে ৫.৭৫ শতাংশ ভোট হঠাৎ করে বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই সংক্রান্ত একটি নোটিশও জারি করেছে।"
তিনি বলেন," নাগরিকদের সন্দেহ দূর করতে ইভিএম মেশিন এবং তার চিপ কারা তৈরি করেছে, এই সংখ্যা কী করে বাড়ল, প্রথম পর্যায়ে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে কত ভোট পড়েছিল, কত ভোটার এবং কত মেশিন ছিল তা আমরা জানতে চাই। "
মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করেন, "প্রায় ১৯ লক্ষ ইভিএম মেশিন অনেকদিন ধরেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি মানুষের ভোট পাল্টে দিয়ে নিজেদের মেশিন ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এটা আমার সন্দেহ। এই সন্দেহ মানুষের যাতে না হয় তাই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সন্দেহ দূর করা উচিত। শুধু "বিজেপি কমিশন" হয়ে বসে থেকে লাভ নেই, নিরপেক্ষ কমিশন হিসেবে ভারতের জনগণ নির্বাচন কমিশনকে দেখতে চায়।"
অন্যদিকে আজকে প্রখর রোদে সভা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্য থামিয়ে দেন। তিনি দেখতে পান তাঁকে শুনতে আসা বহু মানুষ "হ্যাঙ্গারে"র নিচে ছাওয়ায় জায়গা পায়নি। তাঁদের "হ্যাঙ্গারে"র নিচে ব্যবস্থা করার পর তিনি ফের বক্তব্য শুরু করেন।
আজকের সভা থেকে মুর্শিদাবাদের বিড়ি শ্রমিকদেরও বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন," বিড়ি শ্রমিকরা আগে কিছুই পেতেন না। তবে এখন যা পান সেটাও তেমন কিছুই নয়। নির্বাচনের পর আমি রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে বলব সকলের সাথে কথা বলে একটা কিছু করার জন্য।"
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই মুর্শিদাবাদের বিডি শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছেন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের সময় অভিষেক ব্যানার্জি কথা দিয়েছিলেন দ্রুত বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হবে। তবে তা এখনও কার্যকর না হওয়ায় ভোট বাক্সে যাতে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পড়ে সে কারণেই আজ মুখ্যমন্ত্রী এই প্রতিশ্রুতি দিলেন বলে অনেকেই মনে করছেন। জঙ্গিপুর মহকুমায় প্রায় ৮ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক রয়েছেন।
ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেন জেলার কয়েকজন বিড়ি কোম্পানির মালিক মিলে কেবলমাত্র বিড়ি শ্রমিকদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করার। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন -১০০ শয্যার ওই হাসপাতাল তৈরি করা হলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।
ফারাক্কার বুকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন," ফারাক্কা ব্যারেজ যখন তৈরি হয় সেই সময় কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এখানকার মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অথচ আজ পর্যন্ত এক টাকাও পাওয়া যায়নি।" ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সময়মতো ড্রেজিং না করাতে শুখা মরশুমে নদীতে জল পাওয়া যায় না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, বিজেপি দেশ, জাতি, সংবিধান বিক্রি করে দিচ্ছে। ওরা ঠিক করছে কে কি খাবে, পড়বে। ওদেরকে বিদায় না দিলে গায়ের জোরে এনআরসি সিএএ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন চালু করে দেবে।" প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে "টেলিপ্রম্পটার নেতা" বলে আখ্যায়িত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,"উনি বলেছিলেন বছরের ২ কোটি চাকরি দেবেন। কিন্তু "চাকরি খেকো" বিজেপি এই রাজ্যে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়ে নিয়েছে। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তারা চাকরি কেড়ে নিচ্ছে। আর ওদের হয়ে এরাজ্যে পথে নেমেছে সিপিএম-কংগ্রেস। এই জোটকে একটি ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সমর্থন করা।"