আজকাল ওয়েবডেস্ক: নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে জন সুরাজ প্রতিষ্ঠাতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোর–এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশন তাঁর নামে দুই রাজ্যে—বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে—ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত থাকার অভিযোগে একটি আনুষ্ঠানিক নোটিশ পাঠিয়েছে।
 
 নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশান্ত কিশোরকে তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে তিনি যদি স্পষ্টভাবে উত্তর না দেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে কমিশনের সূত্রে জানা গেছে।
 
 বিহারের কারগাহার বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার–এর তরফে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, “২০২৫ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, আপনার নাম বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ—দুই রাজ্যেরই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন নাগরিক কেবলমাত্র একটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হতে পারেন। তাই তিন দিনের মধ্যে আপনি লিখিতভাবে জানাবেন, কিভাবে আপনার নাম একাধিক নির্বাচনী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।”
Bihar | Returning Officer, Kargahar Assembly Constituency writes to Jan Suraaj Founder Prashant Kishor
— ANI (@ANI)
"According to a news item published on 28.10.2025, your name is registered in the electoral rolls of Bihar and West Bengal.... Therefore, you should present your side within… pic.twitter.com/BysJbbY62mTweet by @ANI
 
 সংবিধান অনুযায়ী, একজন নাগরিকের নাম একাধিক রাজ্যের বা আসনের ভোটার তালিকায় থাকা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভোটার আইডি বাতিল হওয়ার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
 
 প্রশান্ত কিশোর এখনও এবিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে জন সুরাজ দলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা নোটিশ পেয়েছি এবং আইন অনুযায়ী উত্তর দেওয়া হবে। এটি সম্ভবত প্রশাসনিক ত্রুটির ফল, প্রশান্ত কিশোর কখনও একাধিক আসনে ভোটার হিসেবে নিজেকে নিবন্ধিত করেননি।”
 
 উল্লেখ্য, প্রশান্ত কিশোর একসময় দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি প্রচার, ২০১৫ সালে বিহারের মহাগঠবন্ধন, এবং পরবর্তী সময়ে কংগ্রেস, তৃণমূল ও ওয়াইএসআরসিপি–র মতো দলগুলির নির্বাচনী কৌশল প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
 
 ২০২২ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং বিহারে “জন সুরাজ অভিযান” শুরু করেন—যার লক্ষ্য ছিল রাজ্যের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনা। বর্তমানে তিনি ২০২৫–এর বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জন সুরাজ দলের প্রার্থী তালিকা তৈরি ও সংগঠন বিস্তারে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: দিনভর মন্দার বাজার, বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত
 
 রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নোটিশ প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর তেমন প্রভাব ফেলবে না, তবে এটি নির্বাচনী মরসুমে একটি বিতর্ক তৈরি করবে। কারণ, বিহারে তাঁর দলকে ক্রমশ শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে।
 
 নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা যাচাই প্রক্রিয়া চলাকালীন একাধিক রাজ্যে নাম থাকা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে এখন ডিজিটাল যাচাইকরণ ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে।
 
 এখন দেখার বিষয়, প্রশান্ত কিশোর কীভাবে এই অভিযোগের জবাব দেন এবং কমিশন তাঁর ব্যাখ্যা গ্রহণ করে কিনা।
