লাবুবুর জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে! ছোট্ট এই খেলনাটাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এক বিশাল উন্মাদনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলেই লাবুবু নিয়ে মেতে আছে — কেউ সেটি আনবক্স করছে, কেউ আবার সংগ্রহ দেখিয়ে গর্ব করছে। দোকানে লাবুবু এলে মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি শেষ, আবার অনলাইনে দাম ছুঁয়ে ফেলছে আকাশ। এক কথায়, এই ছোট্ট চরিত্র এখন বড়দেরও প্রিয় খেলনা হয়ে উঠেছে! কিন্তু এই লাবুবুকে নিয়ে নানা গল্পও ঘুরে বেড়ায় নেটমাধ্যমে।
কথিত আছে, লাবুবু কোনও খেলনা কারখানায় জন্ম নেয়নি—বরং কবর থেকেই তাকে সেলাই করা হয়েছিল। উনবিংশ শতকের শেষের দিকে এক ইংরেজ কবরস্থানে ঘুরে বেড়াতেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, শিশুদের দেহ সংরক্ষণ করলে তাদের পুতুলের রূপে আবার জীবিত করা সম্ভব। তিনি ছিলেন না কোনও বিকৃত মস্তিষ্কের খুনি—আস্থা রেখেছিলেন জীবনীশক্তিতে। ছোট ছোট কফিন খুঁড়ে তিনি অবশিষ্ট দেহ তুলে আনতেন, বাড়িতে নিয়ে যেতেন, এবং তাঁর কর্মশালায় শুরু হত ভয়ঙ্কর কাজ। হাড় পরিষ্কার করে দেহে খড় ভরতেন, টুকরো কাপড় দিয়ে সেলাই করতেন—মুখের হাসিটা সেলাই করে বন্ধ করে রাখতেন, যেন আত্মা ভিতরে বন্দি থাকে।
পুতুলগুলোকে ফিতে, কোট পরিয়ে তিনি চেয়ার সাজিয়ে বসাতেন, আর এমন করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেন যেন তাঁর হারানো মেয়েরা ফিরে এসেছে।
 
 পুলিশ যখন সেখানে হানা দেয়, তারা সারি সারি পুতুল দেখতে পায়—কারও চুল সেলাই করা, কারও নখ কাপড়ের নিচে সেলাই করা, আর প্রত্যেকটি পুতুল স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী। পুতুলগুলো বাজেয়াপ্ত হয়, যাবতীয় নথি সিল  করে দেওয়া হয়, আর সেই মানুষের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়।
 
 
 লাবুবু নিয়ে এই গল্প আদৌ সত্য কি না, তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে বহু বছর পরে, একই নকশা ফিরে আসে— অতীতের প্রমাণ হিসাবে নয়, পণ্যের আকারে। মনে করা হয় আজকের প্রতিটি লাবুবুর হাসি কোনও নতুন সৃষ্টি নয়, বরং এক ভয়ঙ্কর অতীতের অনুকরণ। তারকা থেকে সাধারণ মানুষ, অনেকেই প্রচুর টাকা খরচ করে এই খেলনা কিনছেন। নেটমাধ্যমে তা নিয়ে পোস্টও করছেন। কেউ কেউ আবার এই লাবুবুকে সঙ্গে নিয়েও ঘুরছেন। 
লাবুবু আজকের দিনে কেবল একটি জনপ্রিয় পুতুল হিসেবে মানুষের কৌতূহল তৈরি করেছে। রহস্য এবং কল্পনা মিশ্রিত নানা গল্পই এটিকে আলাদা করে তুলেছে। অনেকেই এখন লাবুবুকে সংগ্রহ বা প্রদর্শনকে নিজের আগ্রহ বা ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটি মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। সত্যি বা মিথ্যা যাই হোক, এই পুতুল মানুষের কল্পনা এবং ভাবনার সঙ্গে এক ধরনের যোগাযোগ তৈরি করেছে।
