ভারতীয় খাদ্যাভ্যাসে রুটির স্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের আহারে রুটি না থাকলে অনেকেরই পেট ভরতে চায় না। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবেছেন, দিনে কতগুলি রুটি খাওয়া উচিত? প্রয়োজনের তুলনায় বেশি রুটি খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শরীরের চাহিদা ও জীবনযাপনের ধরন অনুযায়ী ক’টা রুটি খাওয়া উচিত, তা জানা জরুরি।

দিনে ক’টি রুটি খাওয়া উচিত?
প্রত্যেক ব্যক্তির রুটির প্রয়োজন নির্ভর করে বয়স, ওজন এবং দৈনন্দিন কাজকর্মের উপর। যাঁরা সারাদিন বসে কাজ করেন, তাদেঁর শরীরের ক্যালোরির চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম। এই ধরনের মানুষের জন্য দিনে তিন থেকে চারটি রুটি যথেষ্ট। কিন্তু যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম করেন যেমন শ্রমিক বা খেলোয়াড়, তাঁরা দিনে পাঁচ থেকে ছ’টি রুটি খেলেও কোনও ক্ষতি হয় না।

অতিরিক্ত রুটি খেলে কী হয়?
রুটিতে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে শক্তি জোগায়, কিন্তু প্রয়োজনের বেশি খেলে সেই অতিরিক্ত শক্তি ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে শরীরে জমা হয়। এর ফলে পেট বেড়ে যায়, ওজনও দ্রুত বাড়ে। তাই দিনে যতটা শক্তি খরচ হচ্ছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রুটি খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

ওজন কমাতে চাইলে ক’টি রুটি খাবেন?
যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের রুটির পরিমাণ কমাতে হবে। ডায়েট বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের দিনে দু’থেকে তিনটির বেশি রুটি খাওয়া উচিত নয়। এছাড়া ময়দার রুটি এড়িয়ে গিয়ে গম, বাজরা বা জোয়ারের রুটি খাওয়া অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। রুটি কতটা মোটা বা পাতলা, তাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মোটা রুটিতে ক্যালোরি বেশি থাকে, আর পাতলা রুটি তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যসম্মত। রুটিতে ঘি বা মাখন লাগানো থেকে বিরত থাকাই ভাল, কারণ এতে অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট বেড়ে যায়। বিশেষ করে রাতে রুটি কম খান, কারণ রাতে শরীরের মেটাবলিজমের গতি কমে যায়।

ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগীদের জন্য রুটি খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিস বা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রুটি খাওয়ার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তাঁদের জন্য মাল্টিগ্রেন, জোয়ার বা বাজরার রুটি সবচেয়ে উপকারী। এসব রুটিতে ফাইবার বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। অন্য দিকে, অতিরিক্ত গমের রুটি খেলে রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।

রুটিকে স্বাস্থ্যকরভাবে খাদ্যতালিকায় রাখার উপায়
আপনি যদি রুটি ভালোবাসেন, তাহলে সেটিকে ডায়েটে সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করুন। উদাহরণস্বরূপ, রুটির সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি, ডাল বা দই খান — এতে খাবারটি হবে ভারসাম্যপূর্ণ। পাশাপাশি সারাদিনে পর্যাপ্ত জল পান করাও জরুরি, কারণ এটি হজমে সাহায্য করে এবং রুটির ক্যালোরি দ্রুত পোড়াতে সহায়তা করে।