আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়সের বেড়াজাল ভেঙে এক বিচিত্র প্রেমকাহিনি তুলে ধরলেন জাপানের এক যুবক। নিজের চেয়ে বয়সে প্রায় ২১ বছরের বড়, তাঁরই প্রাক্তন সহপাঠীর মা-কে বিয়ে করলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবক এখন নেটদুনিয়ায় চর্চার কেন্দ্রে।

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সিজুওকা প্রিফেকচারের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সী ইসামু তোমিওকার সঙ্গে মিদোরির (এখন ৫৪) প্রথম দেখা হয়েছিল স্কুলে পড়ার সময়। এক অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠকে। কয়েক দশক পর, সেই পুরোনো সহপাঠীর বিউটি স্যালনে আচমকা পুনরায় দেখা হয়ে যায় তাঁদের। আর সেই দেখাই এক অভাবনীয় প্রেমের গল্পের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দেয়।

 

জাপানের জনপ্রিয় টক শো 'শিনকোন-সান ইরাসশাই'-তে এসে তোমিওকা স্মৃতিচারণা করে বলেন, “আবার দেখা হওয়ার পর প্রথম চোটেই আমি ওঁর প্রেমে পড়ে যাই। উনি অত্যন্ত মার্জিত, নম্র, ভদ্র স্বভাবের একজন।”

সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া মিদোরি স্বীকার করেছেন যে, বয়সে এত ছোট একজনের কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পেয়ে তিনি প্রথমে ‘অবাক’ হলেও, মনে মনে ‘খুব খুশি’ হয়েছিলেন। বয়সের বিশাল ব্যবধান নিয়ে প্রথমে ইতস্তত বোধ করলেও, তোমিওকার নাছোড়বান্দা মনোভাব শেষ পর্যন্ত তাঁর মন জয় করে নেয়।

 

মিদোরির মন পেতে তোমিওকা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। হঠাৎ করে ডিজনিল্যান্ডে ঘুরতে যাওয়া থেকে শুরু করে, মিদোরির পছন্দের গান দিয়ে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন, হোটেলের ঘর বেলুন ও ফুলে সাজিয়ে দেওয়া এবং প্রতিদিন ভালোবাসার বার্তা পাঠানো- বাদ ছিল না কিছুই। মিদোরি বলেন, তোমিওকার এই নিষ্ঠা ও যত্নে তিনি একপ্রকার আপ্লুত হন। তাঁর কথায়, “আমার বলা প্রত্যেকটা কথা ওর মনে থাকত।”

আরও পড়ুন: লুকিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে হোটেল রুমে স্ত্রী! একদল লোক নিয়ে হাজির স্বামী, হাতেনাতে ধরে যা করলেন 

 

কিন্তু যখন এই যুগল বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন মিদোরির পরিবার তীব্র আপত্তি জানায়। তাঁর বাবা-মা তোমিওকাকে বলেন, “মিদোরির বয়স ৫১ এবং ও আর সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না। এটা তোমার এবং তোমার বাবা-মায়ের প্রতি অবিচার করা হবে। তোমার বয়স মাত্র ৩০। তোমার উচিত নিজের বয়সী কাউকে বিয়ে করা।”

নিজের ভালবাসা প্রমাণ করতে তোমিওকা প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২.২৫ কোটি টাকা) দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন। তাঁর কাছে এই সম্পর্ক যে কতটা গভীর তা বোঝানোর জন্য নিজের হাতে পরম যত্নে বাড়িটি সাজিয়ে তোলেন তিনি। তাঁর এই দৃঢ় সংকল্প অবশেষে মিদোরির পরিবারের মন জয় করে নেয় এবং তাঁরা এই বিয়েতে সম্মতি দেন।

 

অবশেষে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এই দম্পতি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করেন। তোমিওকা শুধুমাত্র মিদোরির মেয়ের সৎ-বাবাই হননি, সঙ্গে তাঁর চার নাতি-নাতনির দাদুও হয়ে উঠেছেন।