আজকাল ওয়েবডেস্ক: চলতি এশিয়া কাপে এখনও পর্যন্ত নিয়মিত প্রথম একাদশে জায়গা পাকা করতে পারেননি ভারতের পেসার অর্শদীপ সিং। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুপার ফোরের রোমাঞ্চকর ম্যাচ শেষে তিনি মাঠেই এক আগুন ঝরানো অঙ্গভঙ্গির জন্য শিরোনামে উঠে এলেন। রবিবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের পেসার হ্যারিস রউফকে পাল্টা জবাব দিতেই অর্শদীপ এই অঙ্গভঙ্গি করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

ম্যাচ চলাকালীন ভারতীয় দল এবং সমর্থকদের উদ্দেশে জঙ্গিদের কায়দায় ঈশারা করেছিলেন হ্যারিস। তাতেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মাঠের আবহাওয়া। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানি ব্যাটার সাহিবজাদা ফারহানও হাফ-সেঞ্চুরি করার পর ব্যাট দিয়ে বন্দুক তাক করার মতো ভঙ্গি করে নাটকীয়তা বাড়িয়ে দেন। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হারিস রউফের অঙ্গভঙ্গির জবাবেই অর্শদীপ একইভাবে হাতের ইশারা করেন। যদিও তা নিয়ে বিতর্কও ছড়িয়েছে। 

অন্যদিকে, মাঠের লড়াইয়ে এখনও অপরাজিত ভারত এশিয়া কাপে নিজেদের জয়রথ বজায় রাখতে মরিয়া। আগামী বুধবার দুবাইয়ে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে সূর্যকুমার যাদবের দল। অন্যদিকে, মঙ্গলবার আবু ধাবিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় ছাড়া কোনও বিকল্প রাস্তা খোলা নেই পাকিস্তানের। এশিয়া কাপে সুপার ফোরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে বড়সড় বিতর্কের মুখে পড়েছেন তিনি। ম্যাচ চলাকালীন গ্যালারি থেকে বারবার বিরাট কোহলির নাম ধরে স্লোগানের জবাবে তিনি যুদ্ধবিমানের ভঙ্গিমায় ঈশারা করে দর্শকদের দিকে।

মুহূর্তটি দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ম্যাচে ভারতীয় দর্শকরা বাউন্ডারির ধারে ফিল্ডিং করা রউফকে লক্ষ্য করে বারবার ‘কোহলি-কোহলি’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। স্মৃতিতে ভেসে ওঠে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেলবোর্নে রউফের টানা দু’বলে বিরাট কোহলির দুটি অবিশ্বাস্য ছক্কা। সেই ইনিংসকেই আজও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা মুহূর্তগুলির একটি বলে মানেন বিশেষজ্ঞরা। চাপে পড়েও চুপ থাকেননি রউফ। প্রথমে কান চেপে ধরা ভঙ্গিতে স্লোগানকে পাত্তা না দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। পরে হঠাৎ উসকানিমূলক ভঙ্গিতে যুদ্ধবিমান চালানোর অঙ্গভঙ্গি করেন। এর আগে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে শোনা যায়, তিনি হঠাৎই চিৎকার করে বলেন ‘৬-০’। 

সেটা ভারতকে উদ্দেশ্য করেই কটাক্ষ করা বলে দাবি করেন অনেকে। তবে পাকিস্তানি শিবিরের একাংশের দাবি, ওটা ছিল কেবল খেলোয়াড়দের নিজেদের ফুটবল ম্যাচের উল্লেখ। ভারতীয় সমর্থকদের একাংশ অবশ্য এটিকে সংযুক্ত করেছেন অপারেশন সিঁদুরের সঙ্গে। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন শহিদের ঘটনার প্রতিশোধে ওই সামরিক অভিযানের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা নাকি ছ’টি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করেছে। 

যদিও তা পুরোটাই ভুয়ো, আদৌ তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। পাশাপাশি, মাঠেও আবেগের পারদ চড়েছে। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে দুই শিবিরের খেলোয়াড়দের মধ্যে। তবে আগের ম্যাচের তুলনায় সুপার ফোরের ম্যাচে কিছুটা লড়াই করেছিল পাকিস্তানি ব্যাটাররা। তবু মাঝপথ থেকে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয় ভারতীয় বোলাররা। আর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন অভিষেক শর্মা। মাত্র ৩৯ বলে ৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস, ছ’টি চার আর পাঁচটি ছক্কায় সাজানো। তাঁর ঝলকে ১৭২ রানের লক্ষ্যও সহজ হয়ে যায়। ভারত ১৮.৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে জিতে নেয় ম্যাচ। এই জয়ের পর দু’দিনের বিশ্রাম পেয়েছে ভারত।