অমিতকুমার ঘোষ, কৃষ্ণনগর: এবার শীত কম। চিন্তায় মাজদিয়ার খেজুরের গুড়ের উৎপাদক থেকে ব্যবসায়ীরা। শীত বেশি না পড়ায় এবার এই খেজুর বা নলেন গুড়ের উৎপাদন অনেকটাই কম। তার থেকেও বড় কথা শীত না পড়লে গুড় ভালো হয় না। গুড়ের রংও ভালো হয় না। স্বাদও ভালো হয় না। ভালো মানের গুড় না হওয়ায় সকলের কপালেই চিন্তার ভাঁজ। নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের খেজুরের গুড় বিখ্যাত। গুড় উৎপাদক সমীর দাস জানালেন, "এবার শীত কম থাকায় রসের পরিমাণ কম হচ্ছে। রস যা হচ্ছে সেটাও ভালো মানের হচ্ছে না।



ফলে আমাদের লোকসান বাড়ছে। কারণ আমরা গোটা মরসুমের জন্যে গাছ কিনে রস পেড়ে গুড় তৈরি করে ব্যবসা করি।" গোটা কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক জুড়ে আছে প্রচুর খেজুরের গাছ। আর সেই সব গাছের রস থেকে শীতকালে তৈরি হয় উৎকৃষ্ট খেজুরের গুড়। মাজদিয়াকে কেন্দ্র করে এই খেজুরের গুড়ের রমরমা কারবার চলে। মাজদিয়াতে প্রত্যেক রবি এবং বুধবার বসে খেজুরের গুড়ের হাট। সেখান থেকে উৎকৃষ্ট মানের খেজুরের গুড় কিনে কলকাতা সহ গোটা রাজ্য বা রাজ্যের বাইরেও খেজুরের গুড়ের ব্যবসায়ীরা নিয়ে যান। কলকাতার বিখ্যাত অনেক মিষ্টির দোকান নলেন গুড়ের মিষ্টির জন্য মাজদিয়ার গুড়ের ওপর নির্ভর করে।

গুড় সম্পর্কে অভিজ্ঞ মাজদিয়ার প্রবীণ বাসিন্দা স্বপন ভৌমিক জানালেন, এবার শীত এতটাই কম যে রস খুবই কম হচ্ছে। ফলে গুড়ের পরিমাণও কম হচ্ছে। আর তার রং এবং স্বাদও ভালো হচ্ছে না। ফলে চাষী গুড়ের দাম পাচ্ছেন না। রস কম হওয়ায় অনেকে আবার রসে চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। ফলে গুড়ের মান আরও কমে যাচ্ছে।" এবার চাষীর কাছ থেকে ভালো গুড় কিনতে গেলে কিলো প্রতি ৩০০ বা ৩৫০ টাকা পড়ছে। তবে চিনি দেওয়া অর্থাৎ ভেজাল গুড় কিলো প্রতি কিলো ১০০ বা ১৫০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে। এখন শীতের মরসুমের প্রায় মাঝামাঝি সময়। সকলেই এখন আশায় যদি মরসুমের শেষ লগ্নে শীত একটু দাপটের সঙ্গে ব্যাটিং করে তবে নলেন গুড়ের ব্যবসা জমবে।