আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য ন্যায়বিচারের এক সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৭৮তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন। জলবায়ু বিপর্যয়, যুদ্ধ, বৈষম্য এবং দক্ষিণ গোলার্ধে আরোপিত পরিকাঠামোগত সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতে সম্মেলনে উঠে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কি কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষা করবে, না কি বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের পক্ষে দাঁড়াবে?

অ্যাসেম্বলিতে হু’র অর্থসংকটের বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনায় আসে। সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদরস আধানম বলেন, “বিশ্ব যেখানে প্রতি আট ঘণ্টায় ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সামরিক খাতে ব্যয় করে, সেখানে হু-কে এই অর্থে এক বছরের বাজেট দিতে দ্বিধা কেন?”

সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন, হু-কে পুনরায় সদস্য দেশ-নির্ভর ও স্বশাসিত করে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার জন্য HEPR (Health Emergency Prevention, Preparedness, Response and Resilience) কাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই কাঠামো শুধুই প্রযুক্তিগত—এটি দারিদ্র্য, বঞ্চনা, ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার বা পরিবেশ ধ্বংসের মতো মূলে থাকা কারণগুলো উপেক্ষা করে।

অ্যাসেম্বলিতে প্যালেস্তাইনের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হলে কিছু সদস্য দেশ "স্বাস্থ্যকে রাজনীতির বাইরে রাখার" কথা বললেও, বহু নাগরিক প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেন—"স্বাস্থ্য নিজেই রাজনৈতিক। গাজায় স্বাস্থ্যকাঠামো ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।" তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, দখলদারিত্বের অবসান এবং প্যালেস্তাইনের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবি জানান।

এছাড়া, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বক্তারা বলেন, "AI যেন জনস্বাস্থ্যের নামে বেসরকারিকরণ ও কর্মী সংকোচনের হাতিয়ার না হয়ে ওঠে।" এই অ্যাসেম্বলিকে একটি মোড় ঘোরানোর সুযোগ হিসেবে দেখছেন অনেকেই। দাবি উঠেছে—স্বাস্থ্য যেন কেবল ধনীদের নয়, সবার অধিকার হয়।