আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইয়ারফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গান শোনা থেকে শুরু করে ফোনে কথা বলা, প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু একটু অসতর্ক হলেই দৈনন্দিন ব্যবহারের এই ইয়ারফোন ডেকে আনতে পারে বিপদ।

সংবাদ সংস্থা বিবিসির একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চমকে দেওয়ার মতো এক তথ্য। প্রতিবেদনে একটি গবেষণার ফলাফল উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাথরুম বা রান্নাঘরের বেসিনের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি জীবাণু থাকে ইয়ারফোন এবং হেডফোনে। আমেরিকার হুইটার হাসপাতালের একদল চিকিৎসক একটি পরীক্ষা করেছিলেন এই ইয়ারফোন এবং হেডফোন নিয়ে। সেখানেই মিলেছে এই তথ্য। দেখা গিয়েছে, সবজি কাটার জন্য যে বোর্ড ব্যবহার করা হয়, তার চেয়ে প্রায় ২৭০৮ গুণ বেশি জীবাণু থাকে রোজকার ব্যবহারের হেডফোনে।

ক্যালিফোর্নিয়ার অপর একটি গবেষণাতেও উঠে এসেছে একই রকমের তথ্য। দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত ইয়ারফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের কানে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি। এর কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে, ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে কানের ভেতরে বায়ু চলাচল কমে যায়, বেড়ে যায় আর্দ্রতা। তৈরি হয় ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণু জন্মানোর অনুকূল পরিবেশ। অ্যাপেল তাদের এক সমীক্ষায় দেখিয়েছে, তেল, সাবান, শ্যাম্পু, সুগন্ধী থেকে শুরু করে খাবারের গুঁড়ো পর্যন্ত থাকে জমে থাকে ইয়ার ফোনের অন্দরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই উপাদানগুলিতে পচন ধরে এবং সেগুলি জীবাণুর বাসায় পরিণত হয়। এই কারণেই নিয়মিত ইয়ারফোন এবং হেডফোন পরিষ্কার করা দরকার। না হলে কানে নানা ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। শুধু তাই নয়, কানে ময়লার পরিমাণও বেড়ে যায় অপরিষ্কার ইয়ারফোন এবং হেডফোনের কারণে।

কীভাবে পরিষ্কার করা উচিত ইয়ারফোন এবং হেডফোন? হেডফোন বা ইয়ারফোনে স্পঞ্জের আবরণ থাকলে সেগুলিকে সাধারণ জলে ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিলেই হয়। আর বাকিটা শুকনো কাপড় বা হ্যান্ডস্যানিটাইজারে ভেজানো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। পাশাপাশি অন্যের ব্যবহৃত ইয়ারফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

এখনকার যুগে ইয়ারফোনের ব্যবহার একেবারে বন্ধ করে দেওয়া অসম্ভব। তবে এর ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। সঠিক নিয়ম মেনে এবং সতর্কতা অবলম্বন করে ইয়ারফোন ব্যবহার করলে কানের সংক্রমণ এবং অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।