আজকাল ওয়েবডেস্ক: দার্জিলিং, সিকিম, মুসৌরি, শিমলা, নৈনিতাল, মানালি সব পাহাড়ি পর্যটনস্থলে একটি জিনিসের মিল রয়েছে। কী জানেন? মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য ছাড়াও সবক'টি জায়গাতেই কমপক্ষে একটি বিখ্যাত পর্যটনস্থল রয়েছে যা 'মল রোড' নামে পরিচিত। এই স্থানগুলি কেবল কেনাকাটা এবং খাবারের জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এখান থেকে আশেপাশের পাহাড় এবং উপত্যকার মনোরম দৃশ্যও দেখা যায়। শিমলায় স্ক্যান্ডাল পয়েন্ট থেকে টেলিগ্রাফ অফিস পর্যন্ত বিস্তৃত বিখ্যাত মল রোড। দার্জিলিংয়ের মল রোড বিখ্যাত কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্যের জন্য। মুসৌরির মল রোড বিখ্যাত উপনিবেশিক আমলের কাঠামোর জন্য। নৈনিতালের মল রোড বিখ্যাত নৈনি লেকের জন্য। 

কিন্তু ভারতীয় ঐতিহ্যে মল রোডের আবির্ভাব কীভাবে? এর জন্য আমাদের প্রথমে জানতে হবে মল রোড কী? মল রোড সাধারণত পাহাড়ের মাঝখানে সমতল জমির উপর নির্মিত হয়, যেখান থেকে পর্যটকরা আশেপাশের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। এখানে গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন প্রবেশের অনুমতি নেই, যাতে মানুষ আরামে পদচারণ করতে পারে। ১৮০০ শতকে ব্রিটিশ আমলে ভারতে মল রোডের প্রচলন শুরু। লন্ডনের 'দ্য মল' এর উৎপত্তি। ব্রিটেনের ওই জায়গাটি জনসাধারণে ভ্রমণের জন্য আদর্শ স্থান। 

যখন ব্রিটিশ অফিসাররা ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করতেন, তখন তারা উষ্ণ এবং সতেজ বোধ করার জন্য এই ধরনের রাস্তায় হাঁটতে যেতেন। মল রোডটি বিশেষভাবে বাজার, রেস্তোরাঁ এবং বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যাতে ব্রিটিশ নাগরিকদের চাহিদা মেটানো যায় এবং আরামের ব্যবস্থা করা যায়। সাধারণত পাহাড়ের ঢাল বরাবর নির্মিত এই রাস্তাগুলি পাহাড়ি এলাকার প্রধান সামাজিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। গ্রীষ্মকালে সমভূমির গরম থেকে বাঁচতে ব্রিটিশদের গ্রীষ্মকালীন আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করত মল রোডগুলি। অনেক মল রোডে ব্যান্ডস্ট্যান্ডও ছিল। পাহাড়ি এলাকার মল রোডগুলি সবচেয়ে প্রশস্ত এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা রাস্তা। স্বতন্ত্র ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্যের বৈশিষ্টে তৈরি ভবনগুলি এখনও বর্তমান। 

উৎপত্তির থেকেই মল রোডগুলি মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং হাঁটার পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশ অভিজাতদের কাছে মল রোডগুলি বেশ জনপ্রিয় ছিল। এখনও এগুলি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান।