আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ মুর্শিদাবাদ বলতে আমাদের চোখের সামনে প্রথমেই ভেসে ওঠে হাজারদুয়ারি প্যালেস। নবাবী আমলে তৈরী এই প্রাসাদে আসল এবং নকল মিলিয়ে হাজারটি দরজা থাকার কারণে পর্যটকদের কাছে হাজারদুয়ারি প্যালেস নামে সুপরিচিত। শীতের মরসুম পড়তেই প্রতিবছর পর্যটকদের ঢল নামে লালবাগের এই প্যালেস চত্বরে। মাত্র কুড়ি টাকা টিকিট কেটে ঢুকে পড়া যায় এই রাজপ্রাসাদে। তার সঙ্গে পর্যটকদের ভিড় জমে লালবাগ শহরের অন্যান্য পর্যটনস্থানগুলোতেও। তবে চিন্তার বিষয় এবছর জেলায় শীত পড়ে গেলেও আশানুরূপ সংখ্যক পর্যটকের দেখা নেই হাজারদুয়ারিতে। হাতে গোনা খুব অল্পসংখ্যক পর্যটকদেরই আনাগোনা চলছে এখানে।

উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলার বহু মানুষ পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। হোটেল, গাড়ি, রেস্টুরেন্ট, গাইড এই ধরনের পর্যটনভিত্তিক বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তারা। কিন্তু ভরা পর্যটনের মরসুমেও তেমন ভাবে তাদের আয় হচ্ছে না। ইতিহাস বিজড়িত যে হাজারদুয়ারী প্যালেস ঘিরে সারা বছর ধরেই মানুষের উন্মাদনা থাকে, সেই প্যালেস চত্বরও এখন প্রায় ফাঁকা। গত কয়েক বছর আগে করোনাকালে যে রকম পর্যটনশূন্য হয়ে গিয়েছিল মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, একেবারে সেই চিত্র না উঠে এলেও শীতের শুরুতে হাতেগোনা পর্যটকদের আগমনে মোটেই খুশি নন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। 

পিন্টু সরকার নামে এক টোটো চালক জানান, ‘‌আমরা পুরোপুরি পর্যটনের উপরই নির্ভরশীল। তাই এখানে পর্যটক না এলে আমরা খুবই ক্ষতির সম্মুখীন হব। এখনও পর্যন্ত সেই রকম ভিড় জমেনি লালবাগে। তবে আমরা আশাবাদী ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের পর থেকেই পর্যটকদের আসা শুরু হবে। কারণ এখন অনেক পরীক্ষা চলছে। সেগুলো শেষ হলেই হয়ত পর্যটক সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠবে লালবাগ শহর।’‌ 

খোকন ঘোষ নামে লালবাগ শহরের এক ট্যুরিস্ট গাইড বলেন, ‘‌হাজারদুয়ারি প্যালেসের ইতিহাস এবং বিভিন্ন দ্রষ্টব্য জায়গাগুলি সম্পর্কে পর্যটকদের জানানো অর্থাৎ গাইড হিসেবে কাজ করে আমাদের দিন চলে। মাস মাইনে হিসেবে আমরা কিছু পাই না। কমিশনের ভিত্তিতে আমাদের কাজ করতে হয়। তাই পর্যটক যত বেশি আসবে আমাদের তত বেশি লাভ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যক পর্যটকদের আমরা পাচ্ছি না। সারা শীতের মরসুম যদি এভাবেই চলতে থাকে, তাহলে প্রবল ক্ষতির মুখে পড়ব আমরা।’‌ তিনি আরও বলেন, ‘‌আশা করছি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে প্রতিবছরের মতো এবছরও পর্যটকদের ঢল নামবে নবাবের শহরে। আর আমাদেরও কিছু বাড়তি আয় হবে।’‌ 


তাহলে পরীক্ষার মরসুম শেষ হলে এবং শীত আরও জাঁকিয়ে বসলে তবেই কি পর্যটনমুখী হয়ে উঠবে রাজ্যবাসী?‌ এখন সেটাই দেখার।