আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'বিয়ে করতে চাই', এমন আবেদন নিয়ে সটান বিডিও-র কাছে হাজির মধ্য পঞ্চাশের এক ব্যক্তি। আর এমন অদ্ভুত আবদার শুনে অবাক হয়ে গেলেন খোদ বিডিও। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা -১ ব্লকে।
আবেদনকারীর দাবি, সরকারি যোজনায় তিনি এখনও কোনও ঘর পাননি। থাকতে হয় পাটকাঠির চালা দেওয়া মাটির বাড়িতে। তাই কোনও মহিলা তাঁকে বিয়ে করতে চাইছেন না। বিডিওর কাছে আবেদনকারীর করজোড়ে নিবেদন, তাঁর জন্য যেন আবাস যোজনা প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ হয়। তাহলেই শেষ বয়সে এসে বিয়ের শখ পূরণ হবে তাঁর।
বেলডাঙার বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজীশাহ গ্রাম। সেখানেই স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে এক সময় ভরা সংসার ছিল আব্দুর শুকুর মোল্লার। কিন্তু বছর দশেক আগে দীর্ঘ রোগ ভোগের পর স্ত্রী মারা গেছেন। সন্তানরাও বিভিন্ন কারণে বাবাকে আর নিজেদের বাড়িতে থাকতে দেন না। তাই পঞ্চাশ পেরিয়ে আব্দুর শুকুরের মাথা গোঁজার ভরসা পাটকাঠির চালা দেওয়া আর বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা একটি কুঁড়ে ঘর।
তবে বয়স বাড়লেও আব্দুরের এখনও বিয়ে করতে চান। বাকি জীবনটা কাটানোর জন্য এখন নতুন এক সঙ্গিনী খুঁজছেন তিনি। তাঁর দাবি, নতুন কয়েকজন সঙ্গিনী পছন্দ হলেও কুঁড়েঘর দেখে কেউ তাঁকে বিয়ে করতে চাইছেন না। তাই বিডিওর শরণাপন্ন হয়ে পড়েছেন তিনি।
আব্দুর বলেন, 'বহুবার বিভিন্ন স্তরে আবেদন করেও সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইনি। তাই বিডিও সাহেবের শরণাপন্ন হলাম। তিনি যদি সরকারি প্রকল্পে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে আমার বিয়ে হতে পারে। আমার পাটকাঠির চালা দেওয়া ঘর দেখে কেউ আমাকে বিয়ে করতে চাইছেন না। সরকারি প্রকল্পে যদি একটি ঘর পাই তাহলে হয়তো আমার বিয়ে হবে। বিডিও সাহেব আশ্বাস দিয়েছেন ঘর পাওয়ার বিষয়টি তিনি দেখবেন।'
তবে আব্দুরের অদ্ভুত এমন দাবি শুনে যথেষ্টই অবাক হয়েছেন বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী। তিনি জানান, 'বিয়ে করার জন্য ঘর প্রয়োজন এমন আবেদন নিয়ে আগে কেউ আমার কাছে আসেননি। তবে ওই ব্যক্তির নাম আবাস যোজনায় যোগ্য গৃহ প্রাপকদের যে তালিকা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাতে নেই। তাঁকে বলা হয়েছে সার্ভের সময় নাম তুলতে এবং ঘর পাওয়ার জন্য একটি আবেদন পত্র আমার অফিসে জমা দিতে।'
এখন এটাই দেখার আব্দুর আবেদন পত্র জমা দেওয়ার কতদিন পর তা মঞ্জুর হয় এবং কবেই বা তিনি ঘর পান। ঘর পেলে 'ঘর বাঁধবেন'এই আশাতে বুক বেঁধে রয়েছেন মধ্য পঞ্চাশের আব্দুর।
