অতীশ সেন, ডুয়ার্স: মুণ্ডহীন অবস্থায় চা বাগানের মাঝখান থেকে একটি চিতাবাঘের শাবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। শনিবার জলপাইগুড়ি জেলার মাল মহকুমার ডামডিম চা বাগানের ১৮ নম্বর সেকশানে এই লেপার্ড শাবকটির মুন্ডুবিহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়েই বনদপ্তরের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। স্নিফার ডগ এনে তদন্ত শুরু করা হয়। এমন ঘটনা সচরাচর ঘটতে দেখা যায় না। প্রসঙ্গত, এর আগে ১৫ নভেম্বর ২০১৯ সালে ডুয়ার্সের বানারহাট সংলগ্ন গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানে ১০ নং সেকশনেও এমনই একটি চিতাবাঘের দুই টুকরো দেহ পাওয়া গিয়েছিল। সেবার সাব-অ্যাডাল্ট স্ত্রী বাঘটির মাথা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কেটে দেহের পাশে রাখা ছিল।
জানা গিয়েছে, শনিবার শ্রমিকেরা চা বাগানে কাজ করার সময় চিতাবাঘটির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে বনদপ্তরে খবর দেন। বনকর্মীরা প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালান। যদিও এর পরও চিতাবাঘটির কাটা মুন্ডু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রশিক্ষিত কুকুরটি এদিন শ্রমিক বসতির দিকে না গিয়ে বনাঞ্চলের দিকে গিয়েছিল। তার থেকেই বনকর্মীরা এই মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। পাচারকারীরা চিতাবাঘটিকে হত্যা করলে তার মূল্যবান চামড়া ছেড়ে কেবল মাথাটি কেটে নিয়ে যাবে এমন সম্ভাবনা যথেষ্ট কম। এরই পাশাপাশি- অন্য কোনও কারণে শাবকটির মৃত্যুর পর সেটির মুন্ডু দেহ থেকে আলাদা করা হতে পারে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাস্থলে রক্তের কোনও দাগ ছিল না, ফলে অন্য কোথাও শাবকটিকে মেরে চা বাগানের ভেতর ফেলে রাখা হয়েছে, এমনটাও হতে পারে। তবে অভিজ্ঞ বনকর্মীরা মনে করছেন - এই মৃত্যু স্বাভাবিকও হতে পারে, অন্য কোনও পুরুষ চিতাবাঘ শাবকটিকে মেরে এমন অবস্থা করতে পারে। তাঁরা জানান- এমনটা বিড়াল জাতীয় প্রাণীর স্বাভাবিক আচরণ।
মৃত চিতাবাঘটি পুরুষ এবং বয়স প্রায় তিন থেকে চার মাস। ফলে এই শাবকটির পিতা নয় এমন কোনও পুরুষ চিতাবাঘ শাবকটিকে মেরে অনেকটা অংশ খেয়ে ফেলেছে এমনটাও হতে পারে। বনদপ্তরের সূত্রে জানা গিয়েছে - বনকর্মীরা সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছেন। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।