আজকাল ওয়েবডেস্ক: হঠাৎ জরুরি অবস্থা ঘোষণা ঘিরে তখন অগ্নিগর্ভ দক্ষিণ কোরিয়া। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জোরদার প্রতিবাদ চলছে রাজধানী সিওল সহ সেদেশের সর্বত্র। এসবের মধ্যেই চিন্তিত এক কানাডিয়ান তাঁর দক্ষিণ কোরিয় সহকর্মীকে সেদেশের অবস্থা নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন টেক্ট ম্যাসেজে। জবাব শুনে অবশ্য হতবাক হয়ে পড়েন ওই কানাডিয়ান। যা নিজেই সোশাল মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ওই ব্যক্তি। 

তখন সিওলে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। দুনিয়াজুড়ে সেখবর সম্প্রচারিত হচ্ছে। এই অবস্থায় কানাডিয়ান জ্যাক ফোরজে তাঁর  দক্ষিণ কোরিয় সহকর্মীকে ম্যাসেজে লেখেন, "আরে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আজ কী হচ্ছে?" যা দেখেই, সেই দক্ষিণ কোরিয় মেসেজে লেখেন,  "নিশ্চিত নই, লিগ অফ লিজেন্ডস খেলছি।" এই উত্তর কিছুটা অবাক করেছিল জ্যাককে। সে আরও জানাতে ফের লেখেন, "দক্ষিণ কোরিয় প্রশাসন সামরিক আইন ঘোষণা করেছে, নাকি অন্য কিছু?" পাল্টা তাঁর সহকর্মীর প্রতিক্রিয়া ছিল হাস্যকর। লেখেন, "লিগ অফ লিজেন্ডস।" অর্থাৎ তাতেই বুঁদ সে।

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">December 4, 2024

উল্লেখ্য, "লিগ অফ লিজেন্ডস" হল একটি জনপ্রিয় অনলাইন মাল্টিমিডিয়া গেম যা রায়ট গেমস দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। ২০০৯ সালে এই গেম বাজারে আসে। তারপরই তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরে এই গেম বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক এবং ব্যাপকভাবে খেলা গেমগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে।

জ্যাক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে মেসেজ চালাচালির বিষয়টি স্ক্রিনশট করে সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করতেই ভাইরাল হয়ে যায়। নেটমাধ্যমে ওঠে হাসির রোল। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে লিগ অফ লিজেন্ডস-এর জন্য কোরিয়ান লোকের অগ্রাধিকারকে অনেকেরই মনে হয়েছে অত্যন্ত সম্পর্কযুক্ত। অন্যরা পরিস্থিতি নিয়ে মজা করা, কৌতুক এবং হালকা মন্তব্যের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। 

একজন নেট ব্যবহারকারী লিখেছেন, "অস্বস্তিহীন। ময়েশ্চারাইজড। খুশি তাঁর লীগে। ফোকাসড। সমৃদ্ধ।" অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, "আমি মনে করি আমার পরিচিত প্রত্যেক কোরিয়ান এই রকমই। আশ্চর্যজনক মানুষ।" আবার কেউ লিখেছেন, "এটি হাস্যকর। তবে এটাই স্পষ্ট হল যে কীভাবে রোজগার সংবাদ লোকেদেরকে ততটা প্রভাবিত করে না যতটা আমরা ভাবি।" একজন রসিকতা করে লিখেছেন, "অন্য কিছু জিজ্ঞাসা করুন, উত্তর এখনও লিগ অফ লিজেন্ড-ই হবে।"

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবারই দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক শাসন জারি করেছিলেন। প্রসিডেন্টের যুক্তি ছিল, কমিউনিস্ট প্রভাব ও পড়শি দেশ উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে বিরোধী শক্তি দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষমতা দখলের ছক কষেছে। ফলে জরুরি অবস্থা জারি ছাড়া দেশরক্ষার কোনও উপায় ছিল না। ওই আইন বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-কে। ৪৪ বছরের এই প্রথমবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের পদক্ষেপে দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ছড়িয়ে পরে অশান্তি। শেষপর্যন্ত অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে পাল্টা প্রস্তাব পাশ করেন। ফলে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।