আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৌদ্ধ মঠ থেকে উদ্ধার হল মৃতদেহ। এক, দুটো নয় গুণে গুণে ৭৩টি মৃতদেহ। মঠে লুকিয়ে রাখা ছিল দেহগুলি। সেগুলো ব্যবহার করা হত ভিক্ষুদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে। যখন ধ্যান করা হত তখন কাজে লাগানো হত সেগুলোকে। শুনে আঁতকে উঠলেও এটাই ঘটেছে বাস্তবে। ঘটনাটি থাইল্যান্ডের।
শুধু এতগুলো মৃতদেহই নয়, তল্লাশি চালানোর সময় সন্ধান মিলেছে ৬০০টি কুমিরের। মঠের মধ্যেই এক পুকুরে চাষ করা হত সেগুলো। মঠের প্রধান ভিক্ষু ফ্রা আজান সাই ফন পান্ডিতো দাবি করেছেন, এগুলো তাঁদের পোষা। এই বৌদ্ধ মঠটি অবস্থিত থাইল্যান্ডের ফিচিট প্রদেশে। থিফাকসং পা সাংনায়াথাম নামে পরিচিত ওই মঠটি খুবই প্রসিদ্ধ। মঠটির চারপাশে রয়েছে ঘন জঙ্গল। মঠটি ১৬০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি মূলত আধ্যাত্মিকতা চর্চার পিঠস্থান বলেই পরিচিত।
প্রথমে থাই পুলিশ ২২ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে ৪১টি মৃতদেহ উদ্ধার করে ওই মঠ থেকে। মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর কফিনও। সন্ধান মিলেছে খোলা হাওয়া বাতাস যুক্ত একটি ধ্যান কেন্দ্রের। ভিক্ষুদের জন্য চারটে ডাইনিং হল রয়েছে মঠটিতে। এতগুলো ডাইনিং হল কেন তার কারণ জানা যায়নি। মঠের ভেতরে রয়েছে বড় পুকুর। তাতেই ছাড়া রয়েছে কুমিরগুলো। মঠে যেসব দর্শনার্থীরা আসেন তারা এই কুমিরগুলো একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে দেখতে পান।
এত মৃতদেহ মঠে রাখা কেন? ভিক্ষুদের দাবি, এই মৃতদেহগুলি মঠের ভিক্ষুদের পরিবারের লোকেদের। অনেক সময় মৃত্যুর পর পরিবারের লোকেরা তাদের কাছে থাকতে চান। তাই তাদের দেহ এখানে এনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু মঠের পুরোনো ভিক্ষুদের দেহও রয়েছে। মৃতদেহের প্রমাণ হিসেবে তাঁরা ডেথ সার্টিফিকেটও দেখান পুলিশকে। এরপর পুলিশ ঠিক কয়েকদিন পরে ২৬ নভেম্বর আরও ৩২টি মৃতদেহ খুঁজে পায় ফিচিট প্রদেশের ব্যাং মুন নাকের আরেকটি মঠ থেকে। এখনকার সন্ন্যাসীদেরও বক্তব্য ধ্যানের শেখানোর জন্যই মৃতদেহগুলো ব্যবহার করা হয়। এই থেকে ভিক্ষুরা মৃত্যু ভয় কাটিয়ে ওঠেন। থাই পুলিশ দুটো মঠেরই সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। মৃতদেহগুলো কাদের তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
