আজকাল ওয়েবডেস্ক: কারও কাছে 'লজ্জাজনক' আবার কারও কছে চূড়ান্ত 'অসম্মানজনক'। আর্জেন্টিনার ফুটবল ক্লাব দেপোর্তিভো রিয়েস্ত্রা যা করল, তার জন্য উড়ে আসছে নিন্দা।
এত পর্যন্ত পড়ার পরে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে উঠতে পারেন। প্রশ্ন করতে পারেন দিয়েগো মারাদোনা-লিও মেসির দেশের এই ক্লাব কী এমন করল যার জন্য ধেয়ে আসছে নিন্দার ঝড়?
একজন ইউটিউবার ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারকে প্রথম একাদশে রেখে দল সাজিয়েছিল রিয়েস্ত্রা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভেলেজ সারসফিল্ড। প্রথম মিনিটেই অবশ্য সেই ইউটিউবারকে তুলে নিতে বাধ্য হয় দেপোর্তিভো রিয়েস্ত্রা।
আর্জেন্টাইন এই সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার-ইউটিউবারের নাম ইভান বুয়াখেরুক। স্প্রিন নামেই তিনি পরিচিত। ইউটিউবে তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় সাত মিলিয়ন। পেশাদার ফুটবল অভিজ্ঞতা নেই ইভানের। কিন্তু রিয়েস্ত্রা কোচ ক্রিশ্চিয়ান ফ্যাবিয়ানি সেই ইনফ্লুয়েন্সারকে স্ট্রাইকার হিসেবে মাঠে পাঠিয়েছিলেন। ২৪ বছর বয়সি এই ইনফ্লুয়েন্সারকে ৫০ সেকেন্ডেই তুলে নেওয়া হয়। সেই সময়ে ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছিলেন ম্যাচের রেফারি।
চমকপ্রদ প্রচার ও বিপণন কৌশলের জন্য আর্জেন্টাইন ফুটবলে নাম রয়েছে রিয়েস্ত্রার। তারা ইভান বুয়াখেরুককে চুক্তিবদ্ধ করেছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনে তাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয়।
এক ধারাভাষ্যকার এই সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারের পারফরম্যান্স দেখার পরে বলে ওঠেন, ''মাঠে কোথায় দাঁড়াতে হবে, সেটাই তো জানে না ও।'' আর এক ধারাভাষ্যকার বলেন, ''এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।''
রিয়েস্ত্রার কোচ ফ্যাবিয়ানি স্থানীয় রেডিও স্টেশনে বলেন, তিনি ভেলেজের কোচ গুস্তাভো কুইনটেরোসের সঙ্গে ম্যাচের আগে কথা বলে রেখেছিলেন। ইভান বুয়াখেরুককে দলে রেখে কাউকে অসম্মান যে তিনি করছেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।
ভেলেজের কোচ ফ্যাবিয়ানিকে বলেছিলেন, আধ ঘণ্টার বেশি যেন তাঁকে মাঠে না রাখা হয়। এটা চুক্তিগত ব্যাপার ছিল। অনেক দিন আগেই সেই ইউটিউবারের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। প্রচারের উপরে ক্লাব নির্ভরশীল। একবারই মাঠে নামানো হয়েছে ইভানকে। আর নামানো হবে না।
আর্জেন্টিনার প্রাক্তন ফুটবলার হুয়ান সেবাস্টিয়ান ভেরন বর্তমানে আর্জেন্টিনার ক্লাব এস্তুদিয়ান্তেস দে লা প্লাতার প্রেসিডেন্ট। তিনি এই পাবলিক স্টান্টে একপ্রকার অসন্তুষ্ট। ভেরন বলেছেন, ''ফুটবল এবং ফুটবলারদের অশ্রদ্ধা দেখানো হল।''
আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র লা নেসিওনের ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ''এক মিনিটে আর্জেন্টিনার ফুটবল ও তার ইতিহাসকে অসম্মান করা হল।'' সোমবারের ম্যাচটা অবশ্য ড্র হয়। ম্যাচের থেকে বেশি চর্চা হয় ইউটিউবারের ফুটবল খেলতে নামা নিয়ে।
