আজকাল ওয়েবডেস্ক: মিঠুন চক্রবর্তী। চলচ্চিত্রে বারবার হাততালি এসেছে তাঁর ডায়লগের জোরে। আরও স্পষ্ট বললে, তাঁর আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে ডায়লগ ডেলিভার করার জোরে। চলচ্চিত্রের গণ্ডি ছাড়িয়ে মহাগুরু এখন রাজনীতির ময়দানেও। ভোট আবহে প্রচারে, বক্তৃতায় ঝাঁঝ তুলতে দেখা যায়। তবে পর্দার বাইরে ডায়লগের জোরে হাততালি কুড়োতে যাওয়া কি হিতে বিপরীত হতে পারে? মনে হয় তেমনটা ভেবেই দেখেননি মিঠুন। অন্তত তাঁর ২৭ অক্টোবরের বক্তৃতা নিয়ে গত কয়েকদিনে তেমনটাই বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
২৭ অক্টোবর বাংলায় এসেছিলেন অমিত শাহ। শুভেন্দু, সুকান্তর সঙ্গে শাহের বৈঠকে হাজির ছিলেন মহাগুরু। তাঁকে সম্মাননা জনানো হয়। তিনি উদ্দীপিত ভঙ্গিতে বলেন, ২০২৬-এ বাংলা বিজেপির হতে পারে কীভাবে, সেই সম্ভাবনার কথা। এতদূর পর্যন্ত ঠিক ছিল। বিপত্তি তারপরেই। ওইদিন রাজনীতিবিদ, বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী যা কিছু বললেন, রাজনীতির আলোচকরা সেসব কথাকে 'হেট স্পিচ'-এর বাইরে কিছু বলে মনে করতে পারছেন না।
ঠিক কী কী বললেন, বলা ভাল বিপুল হাততালির সামনে দাঁড়িয়ে ডায়লগ আওড়ে গেলেন? একনজরে-
কখনও বললেন, 'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে বলছি, সব করব।' এখানেই থেমে থাকেননি। বললেন, 'এই সবকিছুর মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে আছে।'
কথার মাঝে মনে করালেন, 'রক্তের রাজনীতি' করেছেন। বললেন, 'আমাদের এখানকার এক নেতা বলেন, ৭০ শতাংশ মুসলিম, ৩০ শতাংশ হিন্দু। এদের কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব।' মিঠুন কী বললেন? মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, 'একদিন আসবে, আমি তোমাকে কেটে, ভাগীরথীতে নয়, ভাগীরথী পূণ্য মা। কিন্তু তোমাকে তোমার জমিতেই কেটে ফেলব।'
একদিকে যেমন দলের কার্যকর্তাদের বুক চিতিয়ে এগিয়ে আসতে বললেন, তেমনই বললেন বদলা, প্রতিহিংসার কথা। বক্তব্যের মাঝেই মিঠুনের মুখে শোনা গেল, 'আমাদের বাগানের একটা ফল ছিঁড়লে, আমরা চারটা ছিঁড়ব।' দলগত নয়, ভরা মঞ্চে আমাদের ওদের ভোটারের মাঝে রেখা টানলেন হিন্দু-মুসলমান বলে।
এই প্রথম নয়, কখনও ভোটের প্রচারের মঞ্চে হাততালি কুড়োতে গিয়ে সিনেমার ডায়লগ বলে আলোচিত হয়েছেন, কখনও বিতর্কিত কথা বলে। তবে এবারে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে ১৯৬৮ সালের মিঠুনকে মনে পড়াতে গিয়ে পরপর যেসব কথা বলেছেন, সেগুলোকেও আদতে হেট স্পিচ বলেই মনে করছেন রাজনীতির আলোচকরা।
