অতীশ সেন, ডুয়ার্স:‌ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকরা মঙ্গলবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ‘‌হগ ডিয়ার’‌ প্রজাতির হরিণের চামড়া ও প্যাঙ্গোলিনের আঁশ সহ তিন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করল। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযানটি চালানো হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি বিলাসবহুল সেডান গাড়িও পাচারকারীদের সঙ্গেই আটক করা হয়েছে। জানা গিয়েছে আটক হওয়া তিন জনই অসমের বাসিন্দা। ধৃতরা ধুবড়ি জেলার বিলাসীপাড়ার স্বপন রায় ও পাপাই সাহা এবং গোলপাড়া জেলার শান্ত রংদার। এই তিন জনকে বুধবার আদালতে পেশ করা হবে। 

জানা গিয়েছে ভারতীয় বন্যপ্রাণীদের মধ্যে সংকটাপন্ন প্রাণী হল হগ ডিয়ার। ছোট আকার ও অনন্য শিংয়ের জন্য ‘‌হগ ডিয়ার’‌ শিকারিদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। মাংসের পাশাপাশি হগ ডিয়ার এর শিং এবং চামড়ার চাহিদা কালোবাজারে অত্যধিক হওয়ার কারণে এদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ‘‌ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার’‌ বা আইইউসিএন এর লাল তালিকায় থাকা এই প্রাণীটিকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, পিঁপড়েভুক আঁশযুক্ত স্তন্যপায়ী শান্ত স্বভাবের জীব প্যাঙ্গোলিন তার আঁশের জন্য চোরাকারবারিদের কাছে পছন্দের একটি শিকার। এর আঁশ অবৈধ বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়। যার ফলস্বরূপ, প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যা কমছে। ভারতের বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্যাঙ্গোলিন সংরক্ষিত প্রাণী এবং এর শিকার ও পাচার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। 

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনকর্মীদের সফল এই অভিযানটি চোরাশিকারীদের রুখতে সদর্থক পদক্ষেপ। ধৃতদের জেরা করে বন্য প্রাণীগুলিকে কোথায় হত্যা করা হয়েছিল এবং কোন পথ ধরে কোথায় পাচার করার চেষ্টা করা হচ্ছিল তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠা বন্যপ্রাণী পাচার চক্রটিকে বন্ধ করতে বনদপ্তর নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।