অতীশ সেন, ডুয়ার্স: ছাগল টোপ দিয়ে খাঁচাবন্দি করা চিতাবাঘ খাঁচা ভেঙে পালাল। ঘায়েল করল একজনকে। অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের আমবাড়ি চা বাগানে। বিগত কয়েক দিন ধরে বাগানের লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় চিতাবাঘের আনাগোনা দেখা দেওয়ায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ফ্যাক্টরি ও হাসপাতাল সংলগ্ন ১৬-১৭ নম্বর সেকশানে একটি খাঁচা পাতা হয়েছিল। এই খাঁচাতেই সোমবার ভোরে চিতাবাঘটি বন্দি হয়। পরবর্তীতে খাঁচা ভেঙে একজনকে জখম করে চিতাবাঘটি পালায়।
আমবাড়ি চা বাগানের বাসিন্দা বাবুল তপাদার জানান - রাতে চা বাগানে পাতা খাঁচায় একটি চিতাবাঘ ধরা পড়ে। সকাল হতেই প্রচুর মানুষ চিতাবাঘ দেখতে ভিড় জমান। মানুষ দেখে ভয় পেয়ে চিতাবাঘটি খাঁচার ভেতর ছটফট করতে থাকে, বারবার খাঁচায় ঝাঁপাচ্ছিল চিতাবাঘটি। শেষে এমন জোরে একটা ঝাঁপ দেয় যে- খাঁচার দরজা ভেঙে যায়। ঘটনায় সকলে হতবাক হয়ে পড়েন। এরপর চিতাবাঘটি চঞ্চল দাস নামের এক যুবকের বুকের উপর ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে ফেলে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। বাবুল বাবু বলেন এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বনদপ্তরের। খাঁচা লাগানোর আগে দপ্তরের উচিৎ ছিল ভাল করে খাঁচাটি 'চেক করে' নিশ্চিত হওয়া যে সেটি মজবুত রয়েছে। এদিন আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে তিনি জানান।
ডায়না রেঞ্জের টোলগেট বিটের বিট অফিসার লালটু সরকার জানান, সকালে তাঁরা খবর পেয়েছিলেন আমবাড়ি চা বাগানে খাঁচাতে চিতাবাঘ ধরা পড়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেটিকে 'রেসকিউ' করার আগেই জানতে পারেন খাঁচা থেকে চিতাবাঘটি পালিয়ে গিয়েছে। সেই সময় এই যুবক চিতাবাঘের থাবায় আহতও হয়েছে। তিনি বলেন বারবার খাঁচার ভেতর ঝাঁপ দেওয়ার ফলে কোনও কারণে খাঁচার দরজা আলগা হয়ে যায় বা ওতে ফাঁক তৈরি হয়, সেখান দিয়েই চিতাবাঘটি পালায়।
বনদপ্তরের বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জার হিমাদ্রি দেবনাথ জানান, খাঁচায় ধরা পড়া চিতাবাঘটি পূর্ণবয়স্ক ছিল। খাঁচায় নতুন চিতাবাঘ ধরা পড়লে সেটি ভয়ে-আতঙ্কে বেশি ছুটোছুটি করে। এর জেরেই খাঁচার দরজায় সামান্য ফাঁকা হয়ে থাকতে পারে, যা দিয়ে চিতাবাঘটি পালিয়েছে। আহত যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে বানারহাট হাসপাতাল ও পরবর্তীতে তাকে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় আরেকটি খাঁচা এদিন লাগানো হবে পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হবে বলে তিনি জানান।
