শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Riya Patra | ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৩ : ০৮Riya Patra
রিয়া পাত্র
শীতঘুমের মতোই শীতের কটা মাস ভিড় একটু কম উত্তরের ঘিঞ্জি, ভ্যাপসা, স্যাঁতসেতে এবং আদ্যপান্ত রঙিন গলিটায়। কিন্তু ওই জৈষ্ঠ্য মাস থেকে কার্তিক মাস গোটা একটা পাড়ার সময় পেরিয়ে যায় উর্ধশ্বাসে। এই সময়টুকু ছাড়া বাকি কয়েকমাস কুমোরটুলির গলি, শাখা গলি যতটা ফাঁকা থাকে, বাকি সময়ের ছবি একেবারেই বিপরীত। ভিড়, কর্মব্যস্ততা নিয়ে কখন যে এক একটা দিন পেরিয়ে যায় ঠাওর করা যায় না। এই নির্দিষ্ট সময়ে কুমোরটুলি গেলে দেখা যাবে কোথাও প্রতিমায় রঙ করছেন বছর ৩০-এর হেমন্ত সরদার, কোথাও প্রতিমার সিঁথি কেটে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক পিঠ কালো চুল বছর ৫০-এর হারাধন পাল, কোথাও শিবের জটার জন্য লাল চুল পাকিয়ে আঠা দিচ্ছেন বিষ্ণুপদ, অন্যদিকে রাস্তার ওপর যে মূর্তি শুকোচ্ছে, তার পায়ের কাছের হাঁস, শেয়াল কিম্বা সিংহে রঙ করছেন শান্তিপুরের প্রসেনজিৎ। কুমোরটুলির গলিতে ভিজে কাদা-মাটি পায়ে নিয়ে কয়েকদিন ঘুরলেই টের পাওয়া যায়, পাল শিল্পীদের ঠাকুরের গোলায় বা কারখানায় প্রতিবছর শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, দুই চব্বিশ পরগণা, বর্ধমান সহ একাধিক জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য আসেন। ঘুপচি ঘরে দিন কাটান, সময় করে ছোট্ট হাড়িতে ভাত চড়ান, আর বাকি সময় মন দিয়ে, তিলে তিলে গড়ে তোলেন এক একটি অসামান্য প্রতিমা। পাড়ার ক্লাব, বনেদি বাড়ি পুজোর বায়না দেয় কোনও না কোনও পাল শিল্পীর কারখানায়। এই হেমন্ত-হারাধনরাই তখন হয়ে ওঠেন শিল্পীর দশহাতের এক একটি হাত। কেউ কাঠামো বানান, কেউ মাটি মাখেন, কেউ গড়ে তোলেন প্রতিমার অবয়ব, কেউ করেন রঙ, কেউ আঁকেন চোখ, কেউ পরান গয়না। হাতে হাতে প্রধান শিল্পীর দিকে এগিয়ে দেন এক এক উপকরণ। কাজ শেষে তফাতে গিয়ে দাঁড়ান, তাকিয়ে দেখেন, এবছর কতখানি শিখলেন, গড়লেন কতখানি। নিজেদের ফোনে ছবি তুলে রাখেন কেউ কেউ। হিসেব বলছে, কুমোরটুলিতে অন্তত ২০০ বা তার বেশি প্রতিমা শিল্পীর কারখানা রয়েছে। তার প্রতিটিতে অন্তত ২০ থেকে ৫০ জন করে কাজ করতে আসেন ফি বছর। কম করে ৫ হাজার, কেউ বলে সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ১০ হাজার অনায়াসে। কথা বলা গেল তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে। গত ৫ বছর ধরে কৃষ্ণনগর থেকে আসছেন তন্ময় । তাঁর দাদা বিনয় এই বছর নিয়ে ১২ বছর ধরে আসছেন। কেন আসছেন? জীবিকা অর্জন? উত্তর অবশ্যই ‘হ্যাঁ।‘ তবে সেটাই একমাত্র নয়। ২৫ এবং ৩০ বছরের দুই ভাইয়ের কুমোরটুলিতে এসে নেশা ধরে গিয়েছে রং-তুলি-ভিজে মাটির। তাঁরা বাড়ি থেকে চলে আসেন মোটামুটি দুর্গাপুজোর মাসখানেক আগে। মাটি মাখা থেকে শুরু, ধীরে ধীরে কাঠামোয় মাটি পড়ে, শুকনো হয় প্রতিমা, কয়েক দফায় রঙ পড়ে তাতে। প্রসেনজিৎ গত ৮ বছর ধরে আসছেন কুমোরটুলিতে। আগে শুধু হাতে হাতে উপকরণ এগিয়ে দিতেন,এখন রঙ করেন। প্রসেনজিতের বাড়িতে এর আগে কেউ ঠাকুর গড়ার কাজ করেনি। তাহলে? জানা গেল, পাড়ার দাদা-ভাইয়েরা প্রতি বছর একটা বিশেষ সময়ে কুমোরটুলি আসত, তাদের সঙ্গেই একদিন জেদ করে বাড়ি থেকে চলে আসেন কুমোরটুলির এঁদো গলিতে। হাঁ করে প্রধান শিল্পীর কাজ বসে বসে দেখেছেন একটা সময়। চোখ বন্ধ করে ভেবেছেন একদিন তিনিও অনায়াসে গড়বেন প্রতিমার মুখ। এখন রঙ করার দায়িত্ব পেয়েই বর্তে গিয়েছেন। হাসিমুখে জানালেন, ‘কাজ শেখার কোনও বয়স নেই, নেই আমি শেষদিন পর্যন্ত শিখব।‘ দেখতে দেখতে ২৩ বছর হয়ে গেল। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে কুমোরটুলিতে এসে দাঁড়ান হারাধন। করোনার পর শরীর ভেঙেছে, মনেও থাকে না ইদানিং অনেক কিছু। কিন্তু কুমোরটুলির পথ ভুল হয় না কিছুতেই। বললেন, ‘রোজগারের পরিমাণ খুব বেশি নয়, তবু আমি ঠাকুর গড়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবিনি, এটাই করতে চাই।‘ প্রতি বছর এরকম হাজার হাজার মানুষ আসেন কুমোরটুলিতে, জীবিকার টানে, নেশার টানে, রং-মাটির গন্ধের টানে। বাড়িঘর ছেড়ে থাকেন। বায়না অনুযায়ী কাজ করেন মন দিয়ে, কথা পর্যন্ত বলেন না বাড়ির লোকজনের সঙ্গে সারাদিন। প্রতিমা মণ্ডপে গেলে অসামান্য সজ্জা আর আলোর রোশনাইয়ে চোখ ধাঁধিয়ে যায় মানুষের। সেই আলোয় আর জানা হয় না ওঁদের কথা। তাঁরা তখন নিশ্চিন্তে কুমোরটুলির পিছনের রেললাইন টপকে ঘাটে গিয়ে দাঁড়ান, কেউ কেউ পা ছড়িয়ে বসেন। কালীপুজোর পর তাঁরা ফিরে যান। কথা বলে যান, পরের বছর আবার আসার।
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
ভর সন্ধ্যায় কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি, কলকাতার বুকে ভয়াবহ ঘটনা...
১৯৭৬-এর ফ্র্য়াঙ্কফুর্ট বইমেলা থেকেই হয়েছিল শুরু! কলকাতা বইমেলায় এবার ফিরে আসছে সেই জার্মানির বার্তা...
ব্যাগের ভিতর ভর্তি সোনার চেন-কানের দুল, লক্ষ-লক্ষ টাকার গয়না উদ্ধার হাওড়া স্টেশনে ...
ময়দানে রহস্যমৃত্যু যুবকের, কীভাবে মৃত্যু? তদন্তে পুলিশ...
শিশুদিবসে নতুন শিক্ষাকেন্দ্র উদ্বোধন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের...
অর্জুনের অজুহাত, বলছেন, ‘আমাকে মারতে এসেছে রাশিয়া থেকে বিষ’, ‘দৌরাত্ম্য’ সামলাতে কড়া মমতা ...
শহরে ফের পুলকার দুর্ঘটনা, আহত পুলকার চালক এবং এক স্কুল পড়ুয়া...
কর্মসংস্কৃতির পক্ষে সওয়াল, কর্মীদের হাজিরা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ, কী নির্দেশ জারি করল নবান্ন...
খাস কলকাতায় ফের অগ্নিকাণ্ড, দাউদাউ করে জ্বলছে লর্ডস মোড়ের বাজার ...
ভোট শেষ হওয়ার আগেই দান ছেড়ে দিল বিরোধীরা, নৈহাটিতে খোশমেজাজে শাসক শিবির ...
ডায়মন্ড হারবারে শুরু বিনোদিনী নাট্য উৎসব
দু'দিনে হারকিউলিস হতে বাজার থেকে কিনে স্টেরয়েড খাচ্ছেন? চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি শুনলে ছুঁয়েও দেখবেন না...
দাউ দাউ করে জ্বলছে সব বাইপাসের ধারে, ফের আগুন বস্তিতে...
গুরু নানকের জন্মদিনে কটা থেকে চলবে মেট্রো, পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে? জানুন কর্তৃপক্ষ কী বলছে ...
প্রকৃতি সচেতনতা বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ মার্লিন গ্রুপের ...
দুই বাসের রেষারেষি, উল্টোডাঙায় বেপরোয়া গতির বলি খুদে পড়ুয়া...