মিল্টন সেন,হুগলি: ঘড়ির কাঁটায় তখন ভোর সাড়ে তিনটে বাজে। হঠাৎ খুব জোড়ে একটা ঝাকুনি। ট্রেন থামলেও একেবারে হেলে পড়ল তাঁদের বগি। অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন হুগলির দম্পতি। হাওড়া থেকে মুম্বইগামী এক্সপ্রেসে যাত্রী ছিলেন হুগলির খামারগাছির দম্পতি শ্যামাপ্রসাদ হালদার এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা হালদার। তাঁদের বাড়ি হুগলির বলাগড়ের খামারগাছি মুক্তকেশি তলায়। অঞ্জনা হালদার চন্দননগর কমিশনারেটে কর্মরত। চিকিৎসার জন্য তাঁরা মুম্বই যাচ্ছিলেন। ট্রেন দূর্ঘটনার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যাত্রীদের পরিবার। শ্যামাপ্রসাদের দাদা রামপ্রসাদ হালদার জানান, দূর্ঘটনা পর তাঁকে ফোন করে খবর দেন ভাই। ভয়ে-আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। ফোনে অভিজ্ঞতা জানালেন ভয়ের ভোরের কথা।


পরপর রেল দূর্ঘটনা ঘটনায় ট্রেনে সফর করাই আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে, বলছেন রামপ্রসাদ বাবু। শ্যামাপ্রসাদ ফোনে জানান, 'তখন ভোর সারে তিনটে হঠাৎ ঝাঁকুনি আর প্রচন্ড শব্দে ট্রেনের কামরা হেলে পড়ল।' তাঁরা মুম্বই এক্সপ্রেসের বি-২ কমারায় যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় ট্রেনের পিছনের দিকের মোট ১৮ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। চক্রধরপুরের কাছে ওই লাইনের পাশে আরও একটি লাইন তৈরি হচ্ছে। সেই লাইনের নীচে গভীর খাদ। শ্যামাপ্রসাদ বাবু জানিয়েছেন, ট্রেন সেখানে পড়ে গেলে হতাহতের সংখ্যা অনেকটাই বেশি হতো।

শ্যামাপ্রসাদ জানান, মুম্বাই এক্সপ্রেস বাঁদিকের লাইন দিয়ে যাচ্ছিল। ডান দিকের লাইনে ছিল একটি মালগাড়ি। সেই মালগাড়ির উপরে প্লাস্টিক ঢাকা ছিল। প্লাস্টিক উড়ে মুম্বই এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সামনে চলে আসে। কিছু দেখতে না পেয়ে সম্ভবত ব্রেক কষেন চালক। তাতেই সম্ভবত দূর্ঘটনা ঘটেছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আহত নয় এমন যাত্রীদের চক্রধরপুর পর্যন্ত একটি ট্রেনে পৌঁছে দেওয়া হয়।সেখান থেকে তাদের বিকল্প ট্রেনের ব্যবস্থা করা হবে, এমনই জানিয়েছেন শ্যামাপ্রসাদ।

অন্যদিকে গুপ্তিপাড়ার বরুণ দাসও যাচ্ছিলেন মুম্বই। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই পরিবারের লোকজন হাওড়ার হেল্প ডেস্কে এসেছিলেন। জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তি সুস্থ রয়েছেন। আপাতত মুম্বই না গিয়ে বাড়ি ফিরছেন তিনি।