নিজস্ব সংবাদদাতা: সম্পাদক হিসাবে তিনি কাজ করেছেন করণ জোহর, মেঘনা গুলজার, জোয়া আখতারের মতো তাবড় তাবড় বলি-পরিচালকদের সঙ্গে। তিনি, ‘মাসান’, ‘গাল্লি বয়’ ছবি খ্যাত সম্পাদক নিতিন বেদ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলিউডকে চাঁচাছোলা ভাষায় এক হাত নিলেন নিতিন। দাবি করলেন, ছবি সম্পাদকের তুলনায় বলি-তারকার গাড়িচালকরা বেশি বেতন পান! 


সেই সাক্ষাৎকারে নিতিন জানান, বলিপাড়ায় পা রাখা নতুন সম্পাদকেরা কপালে খুব একটা ভাল ব্যবহার জোটে না। উল্টে, নতুন বলে তাঁদের থেকে সুযোগ নেওয়া হয় নানারকম। এমনকি সেই নব্য সম্পাদকদের কাজের চুক্তিপত্র ঠিকমতো থাকে না বলে ইচ্ছেমতো তাঁদের খাটিয়ে নেওয়া হয়!

এরপর আজকাল ডট ইন-এর তরফে 'রকি অউর রানি কী প্রেম কাহানি' ছবির এই সম্পাদককে যোগাযোগ করা হয়। মুম্বই থেকে ফোনে তিনি বলেন, " একটু বুঝিয়ে বলা যাক বিষয়টা। ধরুন, বলিপাড়ায় কাজ শিখে আসা একজন নতুন সহকারী সম্পাদক মাসে ৩০,০০০ টাকার আশেপাশে বেতন পান। সেইজন্য তাঁকে উদয়াস্ত খাটতে হয়। তারিখ, সময়ের কোনও ঠিক ঠিকানা থাকে না। সেখানে কিছু বলতে গেলে অনেক প্রযোজনা সংস্থা এমন ভাব করেন যে এই নব্য, সহকারী সম্পাদকদের তো কায়িক পরিশ্রম করতে হয় না! এই তো অবস্থা। অন্যদিকে, কোনও তারকার একজন গাড়িচালক প্রতিদিন খুব কম করে ৫,০০০ টাকা পান। সেই হিসাবে তাঁর মাসিক বেতন গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১,৫০,০০০ টাকায়!" 

বলিউডের সব প্রযোজনা সংস্থার অবস্থা কি একইরক?ম বিখ্যাত সম্পাদকের উত্তর-"দেখুন, করণ জোহর, ফারহান আখতার, জোয়া আখতার এদের কথা সম্পূর্ণ আলাদা। এঁদের প্রযোজনা সংস্থা বলিউডের প্রথম সারির। সেখানে সমস্যা হয় না। কোনও নাম করতে চাই না, কিন্ত বলিউডের বহু প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে এই সমস্যা হয়। আমি যে যে প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করেছি সেখানে আমায় দলের সহকারী সম্পাদকদের হয়ে মুখ খুলেছি। সেইসব দাবি দাওয়া মেনে হয়েছে। কিন্তু কথা হল, কাজ করতে আসা আনকোরা নতুন সব সম্পাদকদের সঙ্গে তো আমি থাকব না। তাঁদের কী হবে? আমার প্রশ্ন সেটাই। এমন নয়, বিরাট টাকাপয়সা কেউ দাবি করা হচ্ছে, কিন্তু নূন্যতম আর্থিক স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নব্য সম্পাদকদের। কারণ একটা ছবি দেখতে ভাল লাগবে না খারাপ তার অনেকটাই বর্তায় সম্পাদকের উপর। তাই সম্পাদনা দলের সদস্যদের তোয়াজ না করলেও ঠিকঠাক স্বীকৃতি তো দেওয়া উচিত!" 

সামান্য থেমে তাঁর আরও সংযোজন, "ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসার পর এই ছবিটা খানিকটা বদলেছে। কারণ আন্তর্জাতিক স্তরের এই সংস্থার নিয়মকানুন আলাদা। দারুণ পেশাদার। সহযোগী সম্পাদকরা সাম্মানিকটা বেশি পান সেখানে। তবে বলিপাড়ার প্রযোজকেরাও যেহেতু এখন ওটিটিতে ঢুকে পড়েছেন, তাই সেখানে তাঁদের সেই শো, ছবিতে আবার সেই বলি-প্রযোজনা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী চলছে"।

রণবীর সিং, আলিয়া ভাট, জাহ্নবী কাপুরের মতো নয়া প্রজন্মের অভিনেতারা তো বহু বিষয়ে মুখ খোলেন। এই বিষয়ে কখনও কিছু বলেছেন? স্পষ্ট করে নিতিন বললেন," দেখুন, ওঁরা মানুষ হিসাবে দারুণ। খুব মিষ্টি স্বভাব। সেটে সব কলাকুশলীর সঙ্গে সমান ব্যবহার করেন।‌ কিন্তু একজন নতুন সহকারী সম্পাদক কত বেতন পাচ্ছেন তা ওঁদের জানার কথা নয়। ঠিক যেমন ওঁরা কত টাকা পান সেই বিষয়ে আমাদের মাথা ঘামানো উচিত নয়"।