এতদিন আমরা জানতাম, আমাদের মাথাভর্তি লক্ষ লক্ষ স্নায়ুকোষ বা নিউরন-এর প্রভাবেই আমাদের 'মন' বা 'চেতনা' তৈরি হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক নতুন কথা বলছেন। তাঁদের মতে মন হয়তো নিউরনের কাজ নয়, বরং মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা এক ধরণের ভাইব্রেশন-এর খেলা।
2
8
১) বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিউরন যখন একে অপরের সঙ্গে কথা বলে, তখন তারা ছোট ছোট বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়। এই সংকেতগুলো মিলে মস্তিষ্কে একটা অদৃশ্য তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে। নতুন তত্ত্ব বলছে, এই 'কারেন্ট ফিল্ড'টাই নাকি আমাদের আসল চেতনা।
3
8
২) ধরুন, আপনি একটি গোলাপ দেখছেন। এর রঙ, গন্ধ, এবং স্পর্শ - সব তথ্য মস্তিষ্কের আলাদা আলাদা অংশে যায়। কিন্তু আপনি এই সব মিলিয়ে একটা 'গোলাপের অভিজ্ঞতা' পান। বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, এই EM ফিল্ডই সব তথ্যকে এক লহমায় জুড়ে দিয়ে আপনার একক চেতনা তৈরি করে।
4
8
৩) দেখা গিয়েছে, যখন আমরা খুব সচেতন থাকি, তখন আমাদের নিউরনগুলো যেন একসঙ্গে, একই ছন্দে নাচতে শুরু করে বা ফায়ারিং করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই একই ছন্দে ফায়ারিং করার ফলেই শক্তিশালী শক্তি তরঙ্গ তৈরি হয়, যা আসলে চেতনার জন্ম দেয়।
5
8
৪) এক নতুন ধারণা 'জেনারেল রেজোন্যান্স থিওরি' বা সাধারণ অনুরণন তত্ত্ব। এই তত্ত্বের প্রবক্তারা বলছেন, প্রকৃতির সবকিছুই যেহেতু কাঁপে বা ভাইব্রেট করে, তাই খুব সাধারণ আকারে চেতনা হয়তো সবকিছুর মধ্যেই লুকিয়ে আছে।
6
8
৫) যদি সবকিছুর মধ্যেই অল্প চেতনা থাকে, তাহলে মানুষের এত বুদ্ধি কেন? বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের মস্তিষ্ক খুব জটিল এবং সুসংগঠিত, তাই এর মধ্যে যে কম্পন বা রেজোন্যান্স তৈরি হয়, তা বহু উচ্চস্তরের, যা থেকে আমাদের মধ্যে জটিল চেতনা তৈরি হয়।
7
8
৬) এতদিন আমরা নিউরনের গঠন নিয়ে মাথা ঘামাতাম। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিউরনের শরীর বা গঠন যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিউরন থেকে তৈরি হওয়া ভাইব্রেশন। এই তরঙ্গই আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
8
8
সব মিলিয়ে বিজ্ঞানীরা যেন চেতনার পুরনো দরজায় তালা মেরে এক নতুন জানলা খুলে দিচ্ছেন। এই গবেষণা যদি সফল হয়, তবে মানুষ নিজেদের মন সম্পর্কে এক নতুন উপলব্ধিতে পৌঁছবে।