‌আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: তেলেঙ্গানায় প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ায় বেজায় চাপে শাসক দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি। বিধানসভা ভোটে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা বলছে, তেলেঙ্গানায় লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। বিআরএসের সামনে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে কংগ্রেস। হাওয়া বুঝে গাজয়েল ও কামারেড্ডি -‌দুটি বিধানসভা আসন থেকে লড়ছেন কেসিআর। কামারেড্ডি আসনে কেসিআরের বিরুদ্ধে লড়ছেন আবার তেলেঙ্গানা কংগ্রেসের প্রধান রেবনত রেড্ডি। ওই আসনে শাসক ও বিরোধী শিবিরের দুই প্রধানের মুখোমুখি লড়াইয়ে জমজমাট তেলেঙ্গানার রাজনীতি। কেসিআরের বিরুদ্ধে রেবনত রেড্ডিকে দাঁড় করানোর পর ওই বিধানসভা কেন্দ্রের দিকেই নজর সবার। কেসিআরের মতোই দুটি আসনে লড়ছেন রেবনত। ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে হারিয়েছিলেন একেবারে রাজনীতিতে নতুন মুখ অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ঠিক একইভাবে দুবারের মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরকে রুখতে রেবনতকে ময়দানে নামিয়েছে হাত শিবির।
৩০ নভেম্বর তেলেঙ্গানায় ১১৯ আসনে ভোট গ্রহণ। অধিকাংশ সমীক্ষাতেই দাবি করা হচ্ছে, কেসিআরকে এবার কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। ওই রাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া চরমে। আর সেই হাওয়াকে কাজে লাগাতে মরিয়া হাত শিবির। গত আগস্ট মাসেই বিআরএস ১১৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। গাজয়েল এবং কামারেড্ডি আসনে কেসিআর লড়বেন বলে ঠিক হয়। কংগ্রেসের ভোটকুশলী সুনীল কানুগোলু কামারেড্ডিতে সমীক্ষা করান। এবং দলের নেতা ও ভোটারদের বড় অংশের মতামত নেন। জানাগেছে, সমীক্ষায় দেখা যায় কেসিআরের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে কামারেড্ডি বিধানসভা কেন্দ্রে। তাঁর মতো রাজ্যের বড় নেতার মোকাবিলা করার জন্য কংগ্রেসের একটি শক্তিশালী প্রার্থীর প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়তে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে রেবনত রেড্ডিকেই বেছে নেয় কংগ্রেস হাইকমান্ড।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিঃসন্দেহে তেলেঙ্গানায় বিআরএস-‌কংগ্রেসের মধ্যে কঠিন লড়াই হতে চলেছে। কামারেড্ডি আসনটি রেবনত রেড্ডি প্রার্থী হওয়ায় লড়াই আরও আকর্ষণীয় হয়ে গেছে। রেবনত রেড্ডি যদি এই আসনে জয়ী হন, তাহলে তিনি একজন ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবে আবির্ভূত হবেন এবং মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদারও হবেন। সেবিষয়ে কোনও সংশয় নেই। এমনকি তিনি হেরে গেলেও, তিনি একজন যোদ্ধার মর্যাদা পাবেন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন।এদিকে, তেলেঙ্গানা দখলে মরিয়া কংগ্রেস সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে। তেলেঙ্গানা বিজয়ে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার বড় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। দলের প্রচার-‌কার্য দেখভালের জন্য কর্ণাটকের ১০ মন্ত্রীকে নামানো হয়েছে। প্রত্যেক বিধানসভায় দলের ইন-‌চার্জ রয়েছেন। কংগ্রেসের ৩৫ বিধায়ক এবং ১৩ বিধান পরিষধের সদস্যকে তেলেঙ্গানার ৪৮ বিধানসভা এলাকায় দলের পর্যেবক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেছে কংগ্রেস।