শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Pallabi Ghosh | ২০ এপ্রিল ২০২৪ ২২ : ০১Pallabi Ghosh
আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: দুর্নীতিবাজদের ঠিকানা হবে জেল। দশ বছর আগে বড় মুখ করে দাবি করেছিলেন। গত কয়েকবছরে বারবার একথা বলতে শোনা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টোই হচ্ছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা নেতারা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির দাগ সাফ হয়ে যাচ্ছে! লোকসভা ভোট প্রচারে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছুঁটছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার তিনি মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে দলের জনসভায় অংশ নেন। মহারাষ্ট্রে মোদি পৌঁছনোর আগে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তাঁর প্রশ্ন, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা অশোক চৌহানকে কি তিনি জেলে ভরবেন? জয়রাম মনে করাচ্ছেন, ২০১৪ সালে মোদি দাবি করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে ৬ মাসের মধ্যে আদর্শ কেলেঙ্কারিতে অশোক চৌহানকে জেলে ঢোকাবেন! দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ভরে কি মোদি তাঁর পুরনো প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন, সেই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, দেশে দুর্নীতির স্কুল চালাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এজেন্সির অপব্যবহার করে তোলা আদায় চলছে। ইন্ডিয়া ক্ষমতায় এলে বন্ধ হবে মোদির ‘দুর্নীতির স্কুল’।
অন্যদিকে, কর্ণাটকেও এদিন নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেই সমাবেশ থেকে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেন। কর্ণাটকে বিজেপির জনসভার আগে মোদির উদ্দেশে জয়রাম রমেশ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, রাজস্ব কর থেকে কর্ণাটক সরকারের প্রাপ্য দিতে কেন বিলম্ব করছে মোদি সরকার। কেন প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের খরা-কবলিত কৃষকদের জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকা জারি করছেন না? কেন প্রধানমন্ত্রী একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি দিচ্ছেন না? কেন মোদি সরকার রাজস্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে কর্ণাটকের প্রতি এতটা অন্যায় করছে, তার জবাব দিতে হবে। এদিকে, মহারাষ্ট্রের নান্দেড় এবং হিঙ্গোলি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের জন্য প্রচার করতে নান্দেড়ের একটি সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেন মোদি। ‘সাহাবজাদা’ বলে কটাক্ষ করেন রাহুলকে। বলেছেন, ‘আমেথি কেন্দ্র থেকে হেরে যাওয়ার পর এ বার কংগ্রেসের সাহাবজাদাকে ওয়েনাড় থেকেও হারাতে হবে। ২৬ এপ্রিলের পর তাঁকে নিরাপদ কোনও আসন খুঁজতে হবে।’ কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়াকে নিশানা করে মোদি বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া’র কিছু নেতার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাহস নেই। তাই তাঁরা লোকসভা ছেড়ে রাজ্যসভায় চলে গিয়েছেন।’
এদিকে, রাহুল গান্ধীও এদিন দুর্নীতি ইস্যুতে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি দেশে ‘দুর্নীতির স্কুল’ চালাচ্ছেন। এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘এন্টায়ারা কারপসন সাইন্স’ বিষয়ের অধীনে ‘চন্দে কি ধান্ধা’ সমেত প্রতিটি চ্যাপ্টার তিনি নিজেই পড়াচ্ছেন। যেমন তল্লাশি অভিযান চালিয়ে কীভাবে তোলাবাজি করতে হয়? চাঁদার বিনিময়ে কীভাবে কনট্রাক্ট দেওয়া যায়? দুর্নীতিবাজদের সাফাই করতে কীভাবে ওয়াশিং মেশিন কাজ করে? এজেন্সিগুলিকে কীভাবে তোলাবাজির এজেন্ট বানিয়ে ‘বেল অউর জেল’ খেলা হয়, তা পড়াচ্ছেন!’ রাহুলের কটাক্ষ, ‘দুর্নীতিবাজদের আস্তানায় পরিণত হওয়া বিজেপি তাদের দলের নেতাদের জন্য ‘ক্রাশ কোর্স’ অনিবার্য করে দিয়েছে। যার ফল দেশ ভুগছে। ইন্ডিয়া জোট সরকার ক্ষমতায় এসেই দুর্নীতির স্কুলে আগে তালা ঝোলাবে আর এই কোর্সকে চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দেবে।’