প্রদীপ দে, বহরমপুর: ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মাদ্রাসার এক ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার জনসি মোড়ে ৩৪ নং জাতীয় সড়কের ওপর ঘটনাটি ঘটে। রাজিবুল আলম (১১) নামে ওই ছাত্রকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এমন ঘটনার পর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দোষীদের ধরার দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।
ওই এলাকার ফুলশহরি গ্রামের রাজিবুল শেখদিঘি মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সকালে স্কুল যাওয়ার জন্য জাতীয় সড়কে জনসির মোড়ে বাস ধরতে দঁাড়িয়ে ছিল। হঠাৎ সেখানে দুটি মোটর বাইকে এসে হাজির হয় ৪ যুবক। রাজিবুলের সামনে এসে তারা বলে, ‘জয় শ্রীরাম’ বল। তাদের কথা শুনে রাজিবুল হকচকিয়ে যায়। সে বলে, ‘সেটা আবার কী! শুধু শুধু ‘জয় শ্রীরাম’ কেন বলব?’ ব্যস, শুরু হয়ে যায় মারধর। রাজিবুল বলে, ‘চড় থাপ্পড়, কিল ঘুসি মারে। বুকেও মেরেছে। আমি কঁাদতে কঁাদতে চিৎকার করে উঠি। তখন ওরা পালিয়ে যায়।’ রাজিবুলের বুকে, মাথার পেছনে জোর আঘাত লেগেছে। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে আহত ছাত্রকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। এদিকে গ্রামে খবর যায়, ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় রাজিবুলকে মারা হয়েছে। এলাকার ৪–৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এসে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। দীর্ঘক্ষণ চলা অবরোধে ব্যাপক যানজট হয়। রাজিবুলের বাবা আখতার আলমের অভিযোগ, ‘রাজিবুল বাচ্চা ছেলে। জয় শ্রীরামের কী বোঝে? কেন ওকে এর জন্য মারা হল? আমি চাই, পুলিশ দোষীদের অবিলম্বে ধরুক।’
এলাকার মানুষদের দাবি, ‘এই এলাকায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। কোনও অশান্তি, ঝামেলা নেই। বিজেপি এসব করে ঝামেলা করতে চাইছে।’ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোলেবাবা নামে কোনও সংগঠন তৈরি হয়েছে। বীরভূম, জঙ্গিপুর এলাকায় এই নামে কিছু যুবক বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে। রবিবার রাজিবুলকে যারা মারে, তারা কোন এলাকার, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশের আরও দাবি, বিজেপি–র পুরোপুরি মদত রয়েছে ভোলেবাবা নামে সংগঠনটির পেছনে। যদিও জঙ্গিপুরের বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, বিজেপি এই ঘটনার সঙ্গে আদৌও জড়িত নয়। ভোলেবাবা নামে কোনও সংগঠনও তাদের নেই।
Aajkaal © 2017