গৌতম চক্রবর্তী
সুন্দরবন, ১৩ সেপ্টেম্বর
আমফান ঝড়ের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে বাঁচাতে সরকার ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছে। আর সেই ক্ষেত্রে দ্রুত ম্যানগ্রোভ রোপণে সাফল্য এনে দিয়েছে ‘জিয়ো–জুট’ পদ্ধতি। পরিবেশ–বান্ধব এই পদ্ধতি সুন্দরবনে প্রথম। এতদিন ম্যানগ্রোভ চারা তৈরি করতে প্লাস্টিকের ঠোঙা ব্যবহার করা হচ্ছিল। তাতে চারার বৃদ্ধি কম ঘটছিল। এবার চটের তৈরি প্যাকেট (জিয়ো–জুট) ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। অল্পদিনেই গাছের বৃদ্ধি ঘটেছে দ্বিগুণ। এই সাফল্যে বেজায় খুশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এতদিন প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে এমনিতেই সুন্দরবন দূষিত হচ্ছিল। সে কথা মাথায় রেখে জিয়ো–জুটের মাধ্যমে নদীবাঁধের চরে চলতি বছরে ম্যানগ্রোভ চারা তৈরির কাজ শুরু হয়। তাতেই সাফল্য পাওয়া গেছে অভাবনীয়। পরিবেশবিদদের মতে, চটের প্যাকেটে তৈরি চারা সরাসরি তুলে চট–সহ বসিয়ে দিতে হবে। পরে চট পচে গিয়ে গাছের সার হিসেবেও ব্যবহৃত হবে। তাতে গাছ স্বাস্থ্যকর হবে এবং দ্রুত বৃদ্ধি ঘটবে। জিয়ো–জুটের প্রসঙ্গে জেলার এমজিএনরেগা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘সুন্দরবনে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ইকো–ফ্রেন্ডলি গ্রিন নার্সারি (জিয়ো–জুট) ব্যবহার করে ম্যানগ্রোভ নার্সারি করানো হয়েছে। এতে আমরা একশো শতাংশ সফল হয়েছি। আগে প্লাস্টিক পটে চারা করে দেখেছি, রোপণযোগ্য চারা তৈরি করতে সময় লাগত প্রায় ৬ মাস। জিয়ো–জুটে তৈরি চারা এক মাসেই রোপণের উপযুক্ত হয়ে গিয়েছে। এই চারা বেশ সুস্থ–সবল। বৃদ্ধিও ভাল। ক্যানিং–১ ব্লকের নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাতলা নদীর চর, গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া এবং ছোটমোল্লাখালিতে এই ‘জিয়ো–জুট’ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই চারাগাছ তৈরির কাজ চালাচ্ছেন। সুন্দরী, গরান, গর্জন, ধুঁধুল, পশুর, কেওড়া, ওড়া, তোড়া এবং বাইন গাছের চারা তৈরির কাজ চলছে। জিয়ো–জুট প্যাকেটে এই দুই ব্লকে প্রায় ৫ লক্ষ চারা তৈরি করা হয়েছে।
Aajkaal © 2017