অপ্রমেয় দত্তগুপ্ত: লক্ষ্যটা স্থির থাকলে গন্তব্যে পৌঁছোনো যায়। হয়তো চড়াই–উতরাই থাকে। তবে শেষটা আনন্দের। এমনই এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন বাংলার যুবক সম্রাট মৌলিক। লাদাখ থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে যাত্রা করেছেন তিনি। প্রথমে কলকাতা থেকে দিল্লি, তারপর লে। কেটে গেছে ১০৪ দিন। কখনও বিগড়ে গেছে সাইকেল। তারপর তা ঠিক করে আবার পথ চলা শুরু। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর চলা শুরু হয়েছিল যা শেষ হয় ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। হ্যাঁ, ভাষা দিবসে। আর পথের পরিমাণ? ৫ হাজার ২০০ কিলোমিটার।
এই বিশাল পথ পরিক্রমায় সাক্ষী থেকেছে ১৩টি রাজ্য এবং ১০০টি নদী। এই নিয়ে সম্রাট মৌলিক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার নেশা এটাই। তাই কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের ভাল লাগাকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। আর এই সফর থেকে আমি ভারতীয় নদীগুলির অবস্থা সম্পর্কে জেনেছি। তাই নদী বাঁচাতে, জল সংরক্ষণ করতে সচেতন করেছি বিভিন্ন রাজ্যের মানুষকে।’ এই দীর্ঘ সফর সফল করতে এগিয়ে এসেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সিওরেন্স কর্পোরেশন।
ঠিক কী অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর? তিনি জানান, ‘গঙ্গার ভয়াবহ দূষণ নিজের চোখে দেখেছি। আমাদের দেশে এত বিশেষজ্ঞ আছেন। তাহলে এত দূষণ কেন? নীতি আয়োগ তৈরি হয়েছে। একটা মন্ত্রক রয়েছে নদী বাঁচাতে। এমনকী গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হলেও তিন বছরে গঙ্গার দূষণ বেড়েছে। নীতি আয়োগের রিপোর্টই বলছে, ২১টি শহর ২০২০ সালে ‘জিরো ডে’ হবে। অর্থাৎ জলশূন্য। ২০১৮ সালে সিমলায় হয়েছে। বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই এবং হায়দরাবাদে এই পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
সম্রাটবাবুর কথার সমর্থন মিলেছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে জল নষ্ট বা অপচয় আটকাতে না পারলে ২০ বছরের মধ্যে জল পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। তখন অর্থ বিনিয়োগ করেও কিছু করা যাবে না। তাই জল সংরক্ষণ এবং নদীর দূষণ রোধে জনগণকেই সচেতন করে চলেছেন তিনি। সঙ্গে তো সাইকেল রয়েছেই। চলে যাওয়া যাবে একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তাই তো এবার পশ্চিম ভারত এবং দেশের বাইরে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে সাইকেল অভিযান করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
Aajkaal © 2017