সঞ্জয় বিশ্বাস, দার্জিলিং: চা-শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত পাহাড়ে। শ্রমিকরা ২০ শতাংশ হারে বোনাস দাবি করলেও মালিকপক্ষ ১৪ শতাংশের ওপরে উঠতে নারাজ। আর সেকারণেই শ্রমিকদের দাবি আদায় করতে শেষমেষ আমরণ অনশনে বসে গেলেন খোদ মোর্চা সুপ্রিমো বিনয় তামাং। অনশন ৩ দিনে পড়লেও অসুস্থ বিনয় হাসপাতালে ভর্তি হতে নারাজ। তিনি, সোজা জানিয়ে দিয়েছেন, চা-শ্রমিকদের জন্য জীবন দিতেও রাজি। এদিকে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডের অনশন মঞ্চে পাহাড়ের প্রায় সব দলের শ্রমিক সংগঠনগুলি খাদা পরাতে চলে যান। কারণ বোনাসের সঙ্গে পাহাড়ের মোট ৮৭টি চা বাগানের প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিকের স্বার্থ জড়িয়ে আছে।
২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির পর থেকেই চা বাগানের মালিকপক্ষ ক্ষতি হিসেব দিয়ে আসছেন। এবারে তাঁদের যুক্তি, অনেক বাগানেই শ্রমিকের অভাব রয়েছে। অনেকেই কাজের সূত্রে বাইরে যাওয়ায় বাগানের পাতা তোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও আরও নানান কারণ দেখিয়ে মালিকপক্ষ জানিয়ে দিয়েছিলেন ৯ শতাংশের ওপর বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও কয়েক দফায় বৈঠক করে সেই অঙ্কটা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু এর মধ্যে পুজো চলে আসে। ষষ্ঠীতে বিনয় তামাং জানিয়ে দেন, চা শ্রমিকদের বঞ্চিত করা চলবে না। প্রথমে পাহাড়ে একদিনের বন্ধ ডাকলেও পরে বিনয় আমরণ অনশনের হুংশিয়ারী দেন। এবং কথামতো ৬ তারিখ থেকে অনশনে বসেও যান। এদিকে, পুজোয় বোনাস না হওয়ায় বাজারের অবস্থা খারাপ। ব্যবসায় মন্দা।
বিনয় তামাংয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রোজ ডাক্তার দেখে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি করার কথা বললেও তিনি তাতে রাজি নন। ফলে পরিস্থিতি জটি আকার নিচ্ছে। এদিকে জানানো হয়েছে, ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন ও দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। কিন্তু কোনও সংগঠনেরই কর্মকর্তারা আপাতত শৈলশহরে নেই। ফলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, কতদিন এই অনশন চলবে।
Aajkaal © 2017