মধুরিমা রায়: এখন চারপাশে শুধু একটাই আওয়াজ, 'খেলা হবে'। তার মাঝেই আর এক খেলা, হোলিকা দহন আর দোল উৎসব। দোল মানেই রঙ, আবিরে মাখামাখি। কিন্তু রঙ খেলা যে আবার হুল্লোড় বা জমায়েত ছাড়া ঠিক যেন জমে না, পানশে লাগে। অথচ করোনা যাই যাই করে আবার ফিরে আসছে যথেষ্ট শক্তি নিয়ে। রবিবার সকালে দেওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজারেরও বেশি৷ ঠিক ১০ দিন আগে এই সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার। অর্থাৎ, দশ দিনে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাস।
তাহলে? কী করনীয়? এবার দোল খেলবেন না? এ বিষয়ে চিকিৎসকরাও দ্বিমত। কেউ বলছেন, সাবধানে খেলা যায়। কেউ আবার বলছেন আরও কঠোর। তাঁরা এ বছর সংযম চান। বিশিষ্ট চিকিৎসক রণবীর ভৌমিকের পরামর্শ, 'খেলুন, তবে আবাসন বা পাড়ায় বেরিয়ে জমায়েত করে খেলবেন না। পরিবারের লোকজন আবির দিন একে অন্যকে। বাইরে বেরোলে অবশ্যই অন্য দিনের মতো এ দিনও মাস্ক পরুন। রঙ বা আবির খেলছেন বলে স্যানিটাইজার ভুলবেন না। কোভিডকালের এই বিশেষ সতর্কতা মেনে চলা ছাড়াও তিনি অন্যান্য সাবধানতার কথাও বলছেন। এমনিও আগে ফুলের রেণু ইত্যাদি দিয়ে ভেষজ রঙ তৈরি হ'ত, ফলে তাতে সমস্যা কম হ'ত। এখন বাণিজ্যিক কারণে তো সেটা খুব কম, তাই অযথা ভিজে রঙ বাদ দিলেই ভালো এবার। এমনিও এ সময়ে সর্দি গর্মি অনেকের সমস্যা, তাতে অযথা ভেজার প্রয়োজন নেই। আর আবির খেলতে গেলেও অনেক সময়ে চোখে ঢুকে যায়, তখন জলের ঝাপটা একেবারেই দেওয়া যাবে না। তাতে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। প্রয়োজনে চশমা বা সানগ্লাস পরে আবির খেলতে পারেন।'
অন্যদিকে বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিস্ট ডা: সঞ্জয় ঘোষ কিন্তু কঠোর আত্মসংযমের পক্ষে। তিনি সোজাসাপ্টা বলছেন ' চামড়া, চুলের যত্ন তো তখন নেবেন যখন মানুষ সার্বিকভাবে বেঁচে বর্তে থাকবেন। যে ভাবে দ্বিতীয় ঢেউ এর আশঙ্কা করা হচ্ছে দেশে, তাতে এ বছর একেবারে দোল বা হোলি না খেললেই ভালো। কারণ যাই খেলুন গালে, কপালে পায়ে তো একে অন্যের হাত লাগবেই। সংক্রমণ কী করে হয়ে যাবে টেরও পাবেন না। তাই এ বছর বাদ দিন রঙের উৎসব।'
আগের বছর এ সময়েই দেশে লকডাউন প্রথম শুরু হয়েছিল। আমরা অনেকেই আমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো এমনকি তারপরে কালি পুজোতেও আবাসনে বা পাড়ায় জমায়েত করে খাওয়া দাওয়া বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করেছিলাম। হোলিতেও না হয় কঠিন সময়টা পেরিয়ে যাই একটু বেশি সাবধান ও সংযমী হয়ে? ভেবে দেখুন।