চিরদীপ ভট্টাচার্য- এবার থেকে বছরে দু’বার জেইই মেন করাতে চলেছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। প্রথমে ২০১৯–এর জানুয়ারি এবং দ্বিতীয়বার এপ্রিল মাসে। এর পাশাপাশি এনইইটি ইউজি বা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা হবে মে মাসে। জেইই মেন বা পরবর্তীতে জেইই অ্যাডভান্সড কম্পিউটার বেসড টেস্ট (সিবিটি) হলেও এনইইটি হবে আগেকার মতোই অফলাইন পদ্ধতিতে অর্থাৎ, পেন–পেপার পদ্ধতিতে, অন্তত ২০১৯–এর জন্য। এগুলো জানাই ছিল। যেটা জানা ছিল না, জেইই মেন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইংরেজি ও হিন্দির পাশাপাশি শুধুমাত্র গুজরাটি ভাষাতেও করা হবে।
এখানেই প্রশ্নটা উঠছে, গুজরাটি হলে আরও ৭টি ভাষা নয় কেন? ২০১৮–র এনইইটি তো সিবিএসই ইংরেজির পাশাপাশি আরও নয়টি ভারতীয় (আঞ্চলিক) ভাষায় করানোর চেষ্টাটা অন্তত করেছে। ইংরেজি ও হিন্দি হলেও কথা ছিল, সঙ্গে লেজুড় গুজরাটি ঢুকল কেন? প্রশ্নের তরজমা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হল বলে!
বিতর্কের বিষয়গুলো আপাতত পাশে সরিয়ে রেখে ২০১৯–এর জেইই মেন নিয়ে আলোচনায় আসা যাক।
জেইই মেন জানুয়ারি ২০১৯ নেওয়া হবে ৬ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে, বিশেষত রবিবারগুলোয়। সারা দেশের ৩১টি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি), ২৩টি ট্রিপল আইটি এবং আরও ২৩টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা প্রতিষ্ঠানে ডিগ্রিস্তরীয় ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির সর্বভারতীয় এই প্রবেশিকায় ১০+২ বোর্ড পরীক্ষায় ফিজিক্স ও ম্যাথমেটিক্স আবশ্যিক বিষয় হিসেবে থাকার পাশাপাশি কেমিস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি, বায়োলজি কিংবা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল বিষয় থাকলে পেপার ১ (অর্থাৎ, বিই কিংবা বিটেক কোর্সে ভর্তির জন্য বিবেচ্য) দেওয়া যাবে। ১০+২ স্তরে শুধুমাত্র ম্যাথমেটিক্স বিষয়–সহ উত্তীর্ণ হয়ে থাকলেই দেওয়া যাবে আর্কিটেকচার কোর্সে (ব্যাচেলর অফ আর্কিটেকচার কিংবা ব্যাচেলর অফ প্ল্যানিং) ভর্তির জন্য বিবেচ্য পেপার ২। বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা না থাকলেও ২০১৮ কিংবা ২০১৯ সালে যারা ১০+২ বোর্ড পরীক্ষায় বসেছে কিংবা বসতে চলেছে, তারাই ২০১৯–এর জানুয়ারির জেইই মেন দিতে পারবে। এর অর্থ হল, পরপর দু’বছর সর্বাধিক চারবার এই পরীক্ষায় বসা যাবে। খেয়াল থাকুক, ২০১৭ বা তার আগে যারা ১০+২ বোর্ড পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের সামনে আর এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। বছরে দু’বার জেইই মেন হলেও একজন পরীক্ষার্থী যে কোনও একটা কিংবা দু’বারই পরীক্ষাটা দিতে পারবে। যেবারে তার স্কোর বেশি হবে, সেটাই বৈধ হিসেবে ধরা হবে।
এবারের পরীক্ষায় পেপার ১ দেওয়া যাবে দুটো শিফ্টে, প্রথমে বেলা ৯.৩০টা থেকে দুপুর ১২.৩০টা, পরেরটায় দুপুর ২.৩০টা থেকে বিকেল ৫.৩০টা পর্যন্ত। ৩ ঘণ্টার পেপারে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথস প্রতিটি থেকে ৩০টি করে মোট ৯০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতি প্রশ্নের মান ৪ অর্থাৎ, পেপারের পূর্ণমান ৩৬০। প্রতি ভুল উত্তর চিহ্নিত করার জন্য ১ নম্বর নেগেটিভ মার্কিং হবে। এ রাজ্যের পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর তালিকা— আসানসোল, বর্ধমান, দার্জিলিং, দুর্গাপুর, হলদিয়া, হুগলি, হাওড়া, কল্যাণী, খড়্গপুর, কলকাতা এবং শিলিগুড়ি। জানুয়ারির জেইই মেন–এর ফল প্রকাশিত হবে ৩১ জানুয়ারি এবং এপ্রিলের জেইই মেন–এর ফল বেরোবে ৩০ এপ্রিল।
ফর্মপূরণ করা যাচ্ছে অনলাইনে, www.nta.ac.in এবং www.jeemain.nic.in ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। পরীক্ষার ফি এ রকম: শুধুমাত্র পেপার ১ কিংবা পেপার ২–এর জন্য ৫০০ টাকা (ছাত্রী ও তফসিলি, প্রতিবন্ধী হলে ২৫০ টাকা)। পেপার ১ ও পেপার ২ একসঙ্গে দিতে চাইলে পড়বে ৯০০ টাকা (ছাত্রী ও তফসিলি, প্রতিবন্ধী হলে ৪৫০ টাকা)। এই টাকাটা ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, নেটব্যাঙ্কিং ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চালানের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর। ফি জমা করার শেষ তারিখ ১ অক্টোবর। বিশদ তথ্য এনটিএ কিংবা জেইই মেন–এর ওয়েবসাইটে।