দিল্লির যে–আসনে প্রচার করছিলেন বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষী লেখি, সেখানে অনেক বাঙালি থাকেন। মীনাক্ষী বলেন, ছিলেন নেতাজি, এখন মোদিজি। ওঁরাই দেশের আইকন। বাঙালি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য বলেছেন। নেতাদের মুখেও প্রায়শ শোনা যায়। শোনা মোদির মুখেও। বাংলার বিজেপি নেতারা পিছিয়ে থাকেন না। সুযোগ পেলে নেতাজির নাম করেন। পুরনো কথা নতুন করে বলা দরকার। বিজেপি–র নীতির ও কাজের সঙ্গে কণামাত্র মিল নেই নেতাজির, তাঁর নীতি ও কাজের। সাম্প্রদায়িকতা আরএসএস–এর মূল কথা। গোলওয়ারকার–সাভারকাররা স্পষ্ট লিখে গেছেন বিষাক্ত সাম্প্রদায়িকতার কথা। আর নেতাজি? সাম্প্রদায়িকতার আমূল বিরোধী। সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে তাঁর চিন্তা, তাঁর লড়াই। আজাদ হিন্দ ফৌজে তাঁর পাশে সব ধর্মের যোদ্ধারা। তাঁর এক পাশে ধিঁলো, আরেক পাশে শাহনওয়াজ খান। গোমো থেকে পেশোয়ার গেলেন, সেখান থেকে মহানিষ্ক্রমণ পর্বে প্রধান সহযোগী মিঞা আকবর শাহ। শিশির বসুর সঙ্গে পরেও দেখা হয়েছে, একইরকম নেতাজিভক্ত। আপসহীন। মণিপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব সুভাষচন্দ্র দিয়েছিলেন সৌকত মালিককে। সাবমেরিনে যখন ইওরোপে যাচ্ছেন, একমাত্র সঙ্গী আবিদ হাসান। তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল কিনা সুভাষচন্দ্রের, বিতর্ক আছে। সেই উড়ানে নেতাজির একমাত্র সঙ্গী হবিবুর রহমান। আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্যরা আলাদাভাবে খাওয়াদাওয়া করতেন, লক্ষ্য করেন নেতাজি। এবং নির্দেশ দেন, একসঙ্গে বসে খেতে হবে, এক খাবার। সেই প্রণম্য নেতার নাম মীনাক্ষীদের মুখে শুনলে স্তম্ভিত হতে হয়। সুভাষচন্দ্র স্পষ্টত সমাজতন্ত্রের সমর্থক। বলেছেন, লিখেছেন। বিজেপি তার উল্টো। প্ল্যানিং কমিশন–এর কথা প্রথম বলেছিলেন নেতাজি। সেই কমিশন (যোজনা আয়োগ) তুলে দিয়েছেন মোদি। আপসহীন ব্রিটিশবিরোধী ছিলেন সুভাষচন্দ্র। আরএসএস ব্রিটিশভক্ত, ছিল না স্বাধীনতা আন্দোলনে। আর কী বলার আছে?