‘আয়ারাম–গয়ারাম’ খেলা ভারতে বহুদিন ধরে চলছে। কোনও রাজ্যের নির্বাচিত সরকার ভাঙার জন্য যা করা হয়, তাকে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের লজ্জা বলে মানতেই হবে। সাম্প্রতিক তিনটি রাজ্যের কথা বলা যাক। সফল হয়নি ভাঙার খেলা, তবু মহারাষ্ট্রের কথাও বলা দরকার। শিবসেনা–বিজেপি জোট ভেঙে যাওয়ায়, বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বিরোধী জোটের সরকার গঠন অনিবার্য ছিল। উদ্ধব ঠাকরে সরাসরি বলেন, বিরোধী সরকার হবে। এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার সেই লক্ষ্যে ঝঁাপিয়ে পড়েন। কার্যত তিনিই বিরোধী সরকারের প্রধান স্থপতি। কংগ্রেস ঝুলিয়ে রাখল বেশ কিছু দিন। শিবসেনা থাকলে কংগ্রেস কেন থাকবে, এই বক্তব্য নাকি ছিল রাহুলের। আবার, তঁাদের দোষে থেকে গেল বিজেপি, প্রমাণিত হওয়া চায়নি কংগ্রেস। অবশেষে সম্মতি। বিজেপি নামল এনসিপি ভাঙার কাজে। সংখ্যগরিষ্ঠতা নিয়ে সংশয় থাকলেও, ‘দলছুট’ অজিত পাওয়ারকে উপমুখ্যমন্ত্রী করে শপথ নিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। রাজ্যপাল কেশিয়ারি রাত দুটোয় সিদ্ধান্ত নিয়ে কাকভোরে শপথ করিয়ে দেন। উদ্ধব–শারদের দৃঢ়তায় হার মানল বিজেপি। অজিত পাওয়ার দলে ফিরলেন। কর্ণাটকে কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার হল। দুই পক্ষই দামি হোটেলে, রিসর্টে রাখল বিধায়কদের। সফল বিজেপি। রাজস্থানে সেই ভাঙার খেলা। সেই হোটেল–রিসর্ট। চেষ্টা চলছে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ভাঙার। শচীন পাইলট অনুরাগীদের নিয়ে হরিয়ানার রিসর্টে। মুখ্যমন্ত্রী গেহলট বিধায়কদের প্রথমে রাখলেন জয়পুরের পঁাচতারা হোটেলে, তারপর জয়সলমের। রাজ্যসভার আসন সুরক্ষিত রাখার জন্য গুজরাট কংগ্রেসও একই পথে গিয়েছিল। প্রশ্ন, এভাবে ‘বন্দি’ করে রাখতে হয় কেন? এবং, কত খরচ? কোথা থেকে আসে?