হিন্দি বলয়ে ঘোর বিপর্যয় অপেক্ষা করছে বিজেপি–র জন্য। অন্তত ১০০ আসন কমবে। অমিত শাহ তাই খুঁজে বেড়াচ্ছেন নতুন নতুন জায়গা, যেখানে কিছু আসন তুলে নিয়ে ফঁাক ভরাট করা যাবে। বাংলা সম্পর্কে আশা নিশ্চিত হতাশায় পরিণত হবে। বেশি কিছু জুটবে না। পূর্বাঞ্চলে দুটি রাজ্যে অবশ্য কয়েকটা আসন বাড়বে বলেই মনে হয়। এক, অসম। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ, ‘বঙ্গাল খেদা’, নানারকম ভয়ঙ্কর পথে কিছু লাভ হতে পারে। দুই, ওড়িশা। যা আজকের আলোচ্য। নবীন পটনায়েকের সাফল্যের দুটি বড় কারণ। প্রথমত, তিনি ওড়িশা–গৌরব বিজু পটনায়েকের ছেলে। বিজু জনতা দল। বিজেডি। সব দলের নেতারাই বিজুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরের নাম বিজুর নামে। যেমন কলকাতা বিমানবন্দর নেতাজির নামে। পারিবারিক সূত্রে নবীন সুবিধা পেয়েছেন, এখনও পেয়ে চলেছেন। দ্বিতীয়ত, নবীনের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই তঁার বিরুদ্ধে। ওড়িশাবাসী বিশ্বাস করেন, নবীন ভুল করতে পারেন, দুর্নীতি নয়। পিতার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ও নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি কি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও মুখ্যমন্ত্রীকে সাহায্য করবে? সংশয় আছে। শিল্পায়নের বিপুল অভিযান ব্যর্থই হয়েছে। কোরিয়ার পস্কো কোম্পানির বিশাল প্রকল্প স্থানীয় মানুষের প্রতিরোধে আটকে গেছে। প্রথম দিকে কঠোর অবস্থান, পরে পশ্চাদপসরণ। একই সঙ্গে ভীরু ও জনবিরোধী হিসেবে বিস্তর সমালোচনা কুড়িয়েছেন। ভাবমূর্তি যখন চকচকে ছিল, বিজেপি–কে ছাড়ার সাহস দেখিয়েছিলেন। বিধানসভা ভোটে একক শক্তিতে বিপুল জয় পেয়েছিলেন। ছিল ত্রিমুখী লড়াই। পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। কংগ্রেস ক্রমশ দুর্বল হয়েছে, হাল বাংলার কংগ্রেসের মতোই। বিজেপি কিন্তু বেড়েছে। সন্দেহ নেই, বাড়তি পঁাচ–সাত আসন ওড়িশায় পাবে বিজেপি। জোট? জোটে নেই নবীন। কেন্দ্রে যারা ক্ষমতায় থাকবে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেন। কোনও প্রস্তাবে ভোটাভুটি হলে বিজেডি অনুপস্থিত থাকে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে হয়তো একটু সুবিধা হত, নবীন নারাজ। প্রাথমিক ভাবে অনিচ্ছুক রাজনীতিক। বড় হয়েছেন দিল্লিতে, ওড়িয়া ভাষাটাও কার্যত জানেন না। বিজেপি–র বৃদ্ধি আটকানোর জন্য কোনও প্রচার করেন না। লোকসভা ভোটে জমি হারালেন, বিধানসভা ভোটেও হার নিশ্চিত। যেন কিছু এসে যায় না। ‘স্বচ্ছ’ নবীন ফের দিল্লিতে জীবনযাপন করবেন।