শুক্রবার ১০ মে ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

EXCLUSIVE: অধীরদা আর ইউসুফ একই মুদ্রার দুই পিঠ, তাই চিন্তা নেই: নির্মল সাহা

Pallabi Ghosh | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ : ০৯


পল্লবী ঘোষ, বহরমপুর: জন্ম, বেড়ে ওঠা, সংসার, পেশা, এবং রাজনীতিতে পা, সবটাই এক শহরে থেকে। এবার সেই লোকসভা কেন্দ্রেই ভোটে লড়বেন তিনি। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ডাঃ নির্মল সাহা। রাজনীতিতে নবাগত হলেও, গোটা লোকসভা কেন্দ্রের খুঁটিনাটি তাঁর নখদর্পণে।

* ৩৩ বছর ধরে বহরমপুরে রয়েছেন। হঠাৎ কেন রাজনীতিতে এলেন?
নির্মল: আমি ছোট থেকেই রাজনীতি সচেতন। ক্লাস নাইনে তখন। দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই জাতীয়তা বোধ, রাষ্ট্রবোধ জেগে ওঠে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লড়াইয়ের কাহিনি পড়তে পড়তে প্রতিবাদী মন তৈরি হয়। বাইরে রাজনীতি না করলেও, ভিতরে ভিতরে রাজনীতি করে গেছি। আমার মতে, রাজনীতি ছাড়া কোনও মানুষ হয় না।

* রাজনীতিতে এসেই লোকসভার টিকিট। প্রস্তাব এই প্রথম পেলেন? নাকি আগেও এসেছিল?
নির্মল: বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সমাজ সংস্কারের কথা বলতাম। একজন চিকিৎসক তো সবসময় সামাজিক শিক্ষক। বারবারই সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। তা শুনেই অনেকে রাজনীতিতে আসার অনুরোধ করেন। এবার বিজেপির তরফে প্রস্তাব পেয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে রাজি হয়েছি। আজীবন আরএসএসের সমর্থক। প্রস্তাব পেয়ে আর পিছপা হইনি।

* অধীর চৌধুরী আপনার দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইটা নিশ্চয়ই কঠিন...
নির্মল: আমার মনে হয় অধীরদার লড়াইটা কঠিন এবার। কারণ, যে ছেলেটা বরাবর ফার্স্ট হয়, তার জায়গাটা ধরে রাখা শক্ত। সেকেন্ড বয় যেকোনও মুহূর্তে দৌড়ে প্রথমে চলে আসতে পারে। আমি নিশ্চিন্তে আছি। বহরমপুরে সাংসদ হিসেবে কী কী বিপ্লব ঘটিয়েছেন, তার রিপোর্ট কার্ড দেখাতে পারবেন উনি? এতদিন উনি ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছেন। এবার প্রতিপক্ষের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই লড়াইটা জমে উঠেছে।

* অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কেমন? প্রার্থী হওয়ার পর যোগাযোগ করেছিলেন?
নির্মল: একসময় আমি অধীরদাকে ভোটও দিয়েছি। বন্ধুর মতোই ছিলেন। প্রার্থী হওয়ার পর ফোন করে জানিয়েছিলাম। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আমাকে।

* আপনার আরও এক প্রতিপক্ষ তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। তিনিও রাজনীতিতে নবাগত। তাঁকে ঘিরে বাড়তি চিন্তা হচ্ছে কি?
নির্মল: তৃণমূলের স্লোগান "জয় বাংলা"। সেই দল ইউসুফ পাঠানকে কেন প্রার্থী করল? যিনি "জয় বাংলা"র অর্থ জানেন না, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র বোঝেন না। ধর্মটা কি একমাত্র পুঁজি? আজকের যুগে মানুষ যথেষ্ট শিক্ষিত। ফলে চিন্তা হচ্ছে না। অধীরদা আর পাঠানকে আমি একদলেই রাখছি। মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।

* নির্বাচনের ঠিক আগে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী সাংসদদের কণ্ঠরোধের মতো ঘটনা আপনি সমর্থন করছেন?
নির্মল: প্রত্যেকদিন যেকোনও ইস্যুতে পার্লামেন্টে বিক্ষোভ দেখানোকে কি সমর্থন করা যায়! ওটা কি কুস্তি করার জায়গা? সংসদে বুদ্ধিমান, সচেতন, বাস্তববুদ্ধির মানুষের প্রয়োজন। আইনী কারণ ছিল বলেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল। নয়তো দেশের ক্ষতি হত।

* ভোটে হেরে গেলে আপনার রাজনৈতিক কেরিয়ারের পরিণতি কী হবে?
নির্মল: হার-জিত নিয়ে বেশি ভাবিত নই। জিতলে জীবনের ধারা অন্যরকম হবে। আর হেরে গেলে চিকিৎসার পাশাপাশি রাজনীত চালিয়ে যাব। সক্রিয় রাজনীতিতে আসার পর আর সরে আসার প্রশ্ন নেই।

* বহরমপুরের জন্য কী কী পরিকল্পনা রয়েছে?
নির্মল: ২৫ বছর ধরে বহরমপুরে কী উন্নয়ন হয়েছে? কয়েকটা ফ্লাইওভার, কয়েকটা বাইপাস, নগরোন্নয়ন হয়েছে। এগুলো কি মানুষের ভাত জোগাবে? কোনও কর্মসংস্থান নেই। সব মিল বন্ধ করে দিয়েছে। বহরমপুরের জন্য অনেক কিছু করা যায়। যেমন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাতে বিদেশি পর্যটকদের আসা যাওয়া বাড়বে। রেলপথে হাইস্পিড ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বহরমপুরে স্টেডিয়ামের প্রয়োজন। ভাগীরথী নদীটা আমাদের সম্পদ। এই জলপথে মাল পরিবহনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করা উচিত। বহরমপুরে মেডিক্যাল ট্যুরিজম চালু করার কথাও ভেবেছি।

* বহরমপুরে "গরিবের ডাক্তার" হিসেবে আপনি পরিচিত। বিনা পয়সায় বহু মানুষের চিকিৎসা করেন। ভোটের প্রচারের জন্য রোগী দেখা বন্ধ?
নির্মল: ভোটভিক্ষার মাঝেও রোগী দেখছি। দিন কয়েক আগেই এক জায়গায় প্রচারে একজন এসে অনুরোধ করেছিলেন। প্রচারের ফাঁকে ছুটে গেছি সেখানে। কত মানুষ দৌড়ে এসে হাত ছুঁয়ে যাচ্ছেন, জামা তুলে পেটে কাটা দাগ দেখিয়ে বলছেন, "ডাক্তারবাবু আপনি অপারেশন করেছিলেন"। এই যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ কাছে এগিয়ে আসছেন, সমর্থন করছেন, ভরসা জোগাচ্ছেন, এটাই আমার বড় প্রাপ্তি।



বিশেষ খবর

নানান খবর

রজ্যের ভোট

নানান খবর

সোশ্যাল মিডিয়া