শুক্রবার ১০ মে ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

ছোটবেলায় শ্লীলতাহানির শিকার চূর্ণী গাঙ্গুলী- এই প্রথম মুখ খুললেন অভিনেত্রী

AM | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২ : ৫৭



নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কখনোই খুব একটা কথা না বললেও প্রথমবার ছোটবেলার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন পরিচালক অভিনেত্রী চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়। এতদিন এই কথা চেপে রাখলেও অবশেষে সেই ব্যক্তির নাম না নিয়েই খারাপ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি। 

সমাজের কারণে অনেক সময় এই ধরনের খারাপ স্মৃতি মনের মধ্যেই চাপা থাকে, শিশু শ্লীলতাহানী ও নির্যাতনের শিকার বহু মানুষ- সাহস করে ওঠেনা কখনোই। তবে এবার সাহস করে বলেই দিলেন চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, "আজ আমি প্রায় 6 বছর আগের একটি খুব ব্যক্তিগত ইন্সটাগ্রাম পোস্ট মনে করছি। এতে লেখা ছিল, “আমি হয়তো তরুণ ছিলাম, কিন্তু আমি ভুলে যাইনি। #MeToo” - আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কান্না, শিশু নির্যাতনের নীরব শিকার। একজন থেকে যে তার বেড়ে ওঠা বছরগুলির বাকি সময় ধরে চুপ করে থাকে, শুধুমাত্র কারণ সে বলতে পারে নি।
অপরাধীকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হয়নি। আমি আজ বিশ্বাস করতে চাই, যে কর্মা সেটা দেখাশোনা করবে।
কিন্তু আমি এখনও ক্ষমা চাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। অন্তত এটাই সে করতে পারে: এই আঘাতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, সারা জীবনের ক্ষত যা আমাকে সহ্য করতে হয়েছে। আমি তার নাম নিতে পারব না এই ভেবে সে হয়তো শিথিল। এবং ঠিক এটাই তাকে মাত্র ১২ বছর বয়সের থেকে সুবিধা নিতে বাধ্য করেছে, এখনও খুব হারিয়ে গেছে, এবং এখনও বিশ্বকে জানা বাকি।
আমার মনে আছে আমি বিভ্রান্ত ছিলাম, এবং পুরোপুরি অবিশ্বাসের মধ্যে ছিলাম। আমার মনে আছে, যখন আমি পারতাম, একটি গলা শুকনো এবং শুকানো, এবং একটি ভারী হৃদয় নিয়ে, কেউ ফিরে যাওয়ার মতো না। আমি বিধ্বস্ত এবং কাঁপিয়ে দিয়েছিলাম কারণ আমি তাকে আমার ছোট্ট আত্মা দিয়ে বিশ্বাস করেছিলাম।
গতকাল আমি থিয়েটারে নিরাপদ স্থানের জন্য Benny Basu এর আবেদনটি পরিদর্শন করেছিলাম। আমি স্বাক্ষর করতে চাইছিলাম, কিন্তু পারলাম না, কারণ আমার দেরি হয়ে গেছে। তাহলে আজকের এই পোস্টটি আমার স্বাক্ষর হতে দিন। শুধু থিয়েটারে নিরাপদ স্থানের জন্য নয়, বরং সমাজে বড় আকারে, প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি ঘরে নিরাপদ স্থানের জন্য। পারলে আপনার গল্প শেয়ার করুন, যখন পারেন। শুধুমাত্র তাই এই ধরনের গুরুতর অপব্যবহার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। এটি নিরাময়ের দিকে প্রথম পদক্ষেপও। আজ, আমি যেভাবে শেয়ার করছি সেভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছি। আমার কথা শোনার জন্য ধন্যবাদ।
এবং আমি সুস্থ হওয়ার সময়, আমি ক্ষমা চাওয়ার জন্য অপেক্ষা করব। যদি কখনো আসে। কারণ আমি সন্দেহ করি তার যৌন বিকৃত স্বভাব পরিবর্তিত হয়েছে। তার অঙ্গভঙ্গি এবং তোমার মনোভাবের চেয়ে পবিত্র এখনও আমাকে ক্রুদ্ধ করে তোলে। আশা করি এই পোস্টটি কোনভাবে তার কাছে পৌঁছাবে। তখন সে জানবে আমি অল্প ছিলাম, কিন্তু আমি ভুলিনি"। 
স্বামী কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং ছেলে উজানকে যে কোন মুহূর্তেই পাশে পেয়েছেন তিনি, এই কথা চেপে রাখার নয় বরং সর্বসমক্ষে অপরাধীকে ধরিয়ে দেওয়া উচিত সব সময়। সেই সাহসিকতার পরিচয় দিলেন চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়। এই পোস্ট শেয়ার করে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, "আমাদের পরিবারের অফুরান আদর, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা তোমার জন্য রইলো চিরকাল। তোমার কঠিন ব্যথার স্মৃতির ভার লাঘব হোক আমাদের আস্থায়, আলিঙ্গনে। এত বছর গুমরে থাকা বাষ্প তোমার মনের যে ক্ষতি করেছে, তার বিচার কিন্তু ঠিক হচ্ছে অন্য আঙ্গিকে, অন্য চেহারায়! আমি নিজে চোখে সেই দোষীর তিলে তিলে ক্ষয় দেখছি! একদিন পুড়ে ছাই হয়ে যাবে সেই হাত ! ততদিন সভ্যতা আর দায়িত্বের জোব্বায় আমার ঘৃণাকে ঢেকে সামলে রাখলাম। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে, যে কোনো বয়সের সাথে ছোঁয়াছুঁয়ির মন্দলাগা স্মৃতি থাকলে তা পরিবার, বন্ধুকে বা ভালোবাসার মানুষকে জানিয়ে কিছুটা মুক্তি পান। যেটা আপনার দোষ নয়, তার শাস্তি আপনি কেন আজীবন ভোগ করবেন বুকে পাথর চেপে? শাস্তি আপনাকে দিতে হবেনা। আপনি কেবল অপরাধীকে দেওয়া শাস্তির নানা রূপ ও ভঙ্গি দেখে শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাবেন ঈশ্বরকে, আর নাস্তিক হলে প্রকৃতিকে।
আপনাকে আজীবন ছুঁয়ে আগলে রাখুক শুধু আপনার মনের মানুষেরাই।" এই মানুষগুলোকে সামনে আনা উচিত, যোগ্য হওয়া উচিত তাদের, তাই যাদের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে তারা কেন ভয় পাবেন, বরং আর মুখ বন্ধ না রেখে সেইসব মুখগুলোকে সামনে আনুক সবাই, এমনটাই চান কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়



বিশেষ খবর

নানান খবর

রজ্যের ভোট

নানান খবর

সোশ্যাল মিডিয়া