শনিবার ১১ মে ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

Singlehood: সঙ্গী খোঁজা নয়, নিজের সঙ্গই এখন আধুনিক নারীর পছন্দ। কেন বাড়ছে একা থাকার প্রবণতা?

নিজস্ব সংবাদদাতা | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮ : ২৬


পরমা দাশগুপ্ত : বয়স পঁয়ত্রিশ পার। বিয়ে ভাঙার পর মা-বাবার কাছে ফেরা নয়, একাই থাকেন, নিজের মতো। বন্ধুবান্ধব, আড্ডা, সোলো ট্রিপ।
আঠাশেই ঠিক করে ফেলেছেন বিয়ে করে কাজ নেই। একা একাই কাটুক জীবন। সম্পর্ক থাক না, ক্ষতি কী! তবু থাকবেন একাই। এবং বাড়ি থেকে আলাদা হয়ে।
চারপাশে তাকালে এমন একলা থাকতে চাওয়া মেয়েদের সংখ্যা কম নয়। পরিসংখ্যানেই আভাস, ক্রমশ বাড়ছে এই প্রবণতা। জীবন মানে ঘর-বর-সংসারের চেনা ছক ভেঙে বেরিয়ে স্বাধীন ভাবে নিজের সংজ্ঞায় বাঁচাটাকেই বেছে নিতে চাইছে একালের কন্যে।
একলা চল রে
মনোবিদ রিমা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এখন বহু মেয়েই বিয়ে করতে চাইছেন না। কর্মসূত্রে অন্য শহরে থাকার সুযোগ হলে কথাই নেই। এমনকী, লেটনাইট শিফট বা পড়াশোনার জন্যও অনেক মেয়েই বাড়ি ছেড়ে নিজের মতো আলাদা থাকতে চাইছেন। চারপাশে বিয়ে বা সম্পর্ক ভাঙার ভিড়ে একার জীবনই হয়ে উঠছে পছন্দের। বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ক্রমশই বাড়ছে সোলো ট্রিপের চাহিদা। 
আমি সেই মেয়ে
মনস্তত্ত্বের অধ্যাপিকা নীলাঞ্জনা সান্যালের মতে, নারীত্বের সঙ্গে বরাবরই নম্রতা, মেনে নেওয়া বা মানিয়ে নেওয়াটা এক করে দেখা হয়। অতীতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকায় অসুখী বিয়েতে থেকে যেতেন মেয়েরা। শারীরিক, মানসিক অত্যাচার সয়েও বিয়ে ভাঙতেন না লোকলজ্জার ভয়ে। সেই প্রয়োজন ফুরিয়েছে। পায়ের তলায় উপার্জনের জমি এবং স্ব–চেতনা তাঁদের শেখাচ্ছে স্বাবলম্বী হয়ে একাও বাঁচা যায়। অনেক মেয়েরই মনে হচ্ছে, আমার জীবনটায় আমি আমার মতো করে চলব। সব কিছুই মেনে নেওয়ার, মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ইচ্ছে হলে বিয়ে বা সম্পর্কে না থেকে একাই কাটিয়ে দেওয়া যায়। তার একটা আনন্দ আছে, সেটা মেয়েরা পেতে চাইছে। তা ছাড়া, মাতৃত্বের স্বাদ পেতে বা বাচ্চাকে বড় করতেও এখন বিয়েতে থেকে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সোলো ট্রিপের প্রবণতা বাড়ার নেপথ্যেও কিন্তু এই আত্মবিশ্বাস।
সঙ্গী যখন আত্মবিশ্বাস
আলাদা বা একা থাকার ভাল দিক যে আছে, সেটা নিশ্চিত করছেন রিমা। তাঁর কথায়, “একা থাকার সুযোগ মেয়েদের আত্মবিশ্বাস ও মনের জোর বাড়িয়ে দেয় বহু গুণে। মেয়ে মানেই নরমসরম হয়ে, মাথা নীচু করে বাঁচার যুগ শেষ। একা থাকা মানে ভয়ে ভয়ে কাটানোরও প্রয়োজন নেই। তাঁরাও যে নিজের শর্তে, মাথা তুলে এবং নিরাপদে বাঁচতে পারেন, সেই আত্মবিশ্বাসটা জুটিয়ে দেয় একা থাকা। সেই সঙ্গে সব দায়িত্ব নিয়ে সবটা গুছিয়ে নেওয়া শিখিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলে। মেয়ে অন্য কোথাও থাকলে আগে মা–বাবা ধরেই নিতেন, সে একা সবটা সামলে নিতে পারবে না। কোথায় থাকবে, কী খাবে, একা থাকবে কী করে, ইত্যাদি তাঁদের চিন্তায় ফেলত। সেখানে মেয়ে একা থেকে যদি স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে, তাঁরাও নিশ্চিন্ত হন। তাছাড়া, একা থাকা মানে সম্পর্কের পথ বন্ধ, তা তো নয়। বিয়ে করতেই হবে, এমনও নয়। বিয়ে টিকবে, সেই গ্যারান্টিও নেই। লিভ ইন বা ওপেন রিলেশনশিপে তাই আজকাল অনেকেই ভাল থাকছেন। যে সব কারণে আগে বিয়ে করার প্রশ্ন উঠত, তা-ও এখন বিয়ে ছাড়াই পাওয়া যায়। অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও নিজের হাতে। ফলে অসুখী বিয়ে বা ভুল সম্পর্কে থাকার চেয়ে একা থাকা পছন্দের হয়ে উঠছে।”
ওরা থাকে ওধারে
ভাল যেমন আছে, খারাপও কিন্তু আছে, জানাচ্ছেন রিমা। বলছেন, “হয়তো বাড়িতে অশান্তি, কিংবা সংসারে বনিবনা হচ্ছে না। তবু যে মেয়েরা একা থাকছে, কাউকে কৈফিয়ত না দিয়ে বাঁচতে চাইছে, তা তাঁদের পরিবার, পরিজন, প্রতিবেশিরা মানতে পারছে না। সমাজটা এখনও অনেকটাই পুরুষতান্ত্রিক। ফলে, এই মেয়েদের অনেকেই ভাল চোখে দেখছেন না। মেয়ে একা থাকলে বাড়িতে যেমন অশান্তি, তেমনই হবু শ্বশুরবাড়িতেও সমস্যা। সমস্যা হচ্ছে প্রেমেও। ধরে নেওয়া হচ্ছে, এই মেয়েরা এত স্বাধীনচেতা যে, মানিয়ে নিতে পারবে না। আবার যদি কোনও মেয়ে একা স্বাধীন ভাবে বাঁচে, তা নিয়েও পাড়া-প্রতিবেশি প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছে না। রাত করে বাড়ি ফেরা, বাড়িতে বন্ধুবান্ধব আসা বা মদ্যপান— মেয়েটির জীবনযাপন নিয়ে অনবরত প্রশ্ন। কিংবা মেয়েটিরও হয়তো কোথাও পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতে ভাল লাগছে না, মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে, বাড়ির মতো আরাম, সুযোগসুবিধাও নেই। ফলে, যে মানসিক শান্তি বা আনন্দের খোঁজে একা থাকা, তা আর পাওয়া হচ্ছে কই! তাই অনেক মেয়ে একা থাকতে শুরু করেও আবার বাড়ির ঘেরাটোপে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। উল্টো দিকের সমস্যাও আছে। ধরা যাক, অনেকদিন একা কাটানোর পরে কেউ ঠিক করেছেন বিয়ে করবেন। তখন একসঙ্গে থাকতে গিয়ে, মানিয়ে নিতে বা প্রয়োজনে আপস করতে না পেরে ঝামেলা বাধছে। একা থাকার জীবনযাপন, খরচাপাতির সঙ্গে কারও সঙ্গে থাকার জীবনের ধরন মিলছে না। তাতেও সম্পর্কে ভাঙন ধরছে। সংসার করতে গিয়ে দায়িত্ব ভাগাভাগি করলে কেউ না কেউ আঙুল তুলছে মেয়েটির দিকেই। একা থাকতে হলে এই খারাপ দিকগুলোর কথাও ভাবতে হবে।”
ভাবার বিষয়
নীলাঞ্জনার কথায়, “একা থাকা যেমন একটা স্বাধীন জীবনযাপনের সুযোগ দেয়, তেমনই মাথায় রাখতে হবে কমবয়সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে কিন্তু সেই বয়সে জীবন দাঁড়িয়ে থাকবে না। ভবিষ্যতে অসুস্থতা হতে পারে, একা চলাফেরার অক্ষমতা হতে পারে। ফলে জীবন একা কাটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করবেন কীভাবে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আরও একটা বিষয় হল নিঃসঙ্গতা। কথা বলার মানুষের প্রয়োজন সকলেরই হয়। একা থাকতে হলে শেষ বয়সে একাকীত্ব বা নিঃসঙ্গতা কাটানোর উপায়ের বিষয়েও মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে। তবে অর্থের বিনিময়ে দেখভাল করার লোক পাওয়া যায়। কলকাতা শহরে এমন অনেক সংস্থাও তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি একটা জিনিস ভীষণভাবে জরুরি। কেউ যদি জীবন একা কাটাতে চান, তাঁর যেন অবশ্যই সামাজিক যোগাযোগ ভাল হয়। প্রয়োজনে হাত বাড়ালেই যাতে বন্ধু পাওয়া যায়।”
‘এই একলা ঘর আমার দেশ’ বলার আগে ভেবেচিন্তে এগোন।




বিশেষ খবর

নানান খবর

রজ্যের ভোট

নানান খবর

Cyber Crime: সাইবার পাস! সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে বাড়ছে সাইবার ক্রাইম ? বিশ্লেষণে 'সাইবার চ্যাটার্জি'...

Jewellery: নাকের গয়না পুরনো হয় না! কোন পোশাকের সঙ্গে কেমন নাকছাবি পরবেন?...

Fashion: সমৃদ্ধির সাজে সম্পূর্ণা! আজকালের ফ্যাশন ফ্লোরে......

Parenting: আপনার সন্তান কী বিষন্নতায় ভুগছে? কীভাবে বুঝবেন?...

Health: জরায়ুর ক্যান্সার নিয়ে কতটা সচেতন আপনি? কী বলছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ?...

Skin Care: ত্বকের পরিচর্যায় ম্যাজিক করতে পারে এই এসেনশিয়াল অয়েল! রইল টিপস ...

Money Hacks: বেশি সঞ্চয় করতে চাইলে একটু বেশি খরচ করুন ! রইল কিছু স্পেশ্যাল মানি হ্যাকস! ...

Pet Care: পোষ্য কুকুর কী বলতে চায়? সহজেই বুঝবেন কোন উপায়ে? রইল চিকিৎসকের পরামর্শ ...

Relationship: কাছের মানুষকে প্রায়শই আপনি এড়িয়ে যান? অ্যাভয়ড্যান্ট অ্যাটাচমেন্ট-এর সমস্যায় না তো ?...

Recipe: এয়ার ফ্রায়ারে বানিয়ে ফেলুন চিকেন টিক্কা! রইল রেসিপি ...

Skin Care: ক্লান্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে ডার্ক সার্কেল? ঘরোয়া উপায়ে এর মোকাবিলা করবেন কীভাবে? ...

Lifestyle: ঘুম থেকে উঠতে দেরি? এই অভ্যেসগুলো পরিবর্তন করে দেখুন......

Pet Care: গাঁটে ও কোমরে ব্যথার সমস্যায় ভোগে ল্যাব্রাডররা! উপশমের জন্য কী করবেন পেট পেরেন্টরা ? রইল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ!...



রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া