আজকাল ওয়েবডেস্ক: লক্ষ্য জীবনে এগিয়ে যাওয়া।
সঠিকভাবে, সঠিকপথে। কিন্তু কীভাবে? সেই পথের সন্ধান দিতেই প্রতি বছরের মতো এবারও আয়োজিত হল 'এডুকেশন ইন্টারফেস ২০২৩'। আয়োজক 'কেরিয়ার প্ল্যানার এডু ফেয়ার'। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুক্রবার ২৬ মে থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে রবিবার পর্যন্ত। যোগ দিয়েছে ১৫০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই মেলা? স্বাগত ভাষণে সেকথা জানাতে গিয়ে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির (এসএনইউ) আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, 'পূর্বাঞ্চলের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় এখানে যোগ দিয়েছে। আগামী প্রজন্মের তরুণরা এখানে এসেছেন। সঙ্গে এসেছেন তাঁদের অভিভাবকরা। কী পড়বে এবং কোথায় পড়বে সেই দিশা দেখাবে এই মেলা। এটা আমাদের সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'
আয়োজকদের সাধুবাদ জানিয়ে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'বাবা-মা সন্তানকে পথ দেখাতে যে কাজ করেন এখানে উদ্যোক্তারা সেই কাজই করছেন। আজ কোনও বিষয় নিয়ে পড়তে বাংলার বাইরে যেতে হয় না। এখানেই পড়া যায়। আমাদের রাজ্যে এখন শিক্ষা সংক্রান্ত অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। দ্রুত যাতে চাকরি পাওয়া যায় সেই লক্ষেই এই এডুকেশন ফেয়ার।'
রাজ্যের পুর ও নগরন্নোয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'আমরা যখন লেখাপড়া করেছি তখন এত সুযোগ ছিল না। এখন পরিস্থিতি পাল্টে পেশাদারি ব্যাপারটা এসেছে।'
সাধারণ ঘরের পড়ুয়াদেরও যাতে পথ দেখিয়ে সহযোগিতা করা যায় সেবিষয়ে আয়োজকদের অনুরোধ জানিয়ে ফিরহাদ বলেন, 'মধ্যবিত্ত এবং বাংলা মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদেরও যদি উদ্যোক্তারা এখানে 'কেরিয়ার কাউন্সেলিং' করেন তাহলে খুব ভালো হয়। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে একদম নিচে যে পড়ে আছে তাকেও তুলে আনতে হবে।'
পাল্টে যাওয়া পৃথিবীর সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষারও। পশ্চিমবঙ্গ স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট-এর চেয়ারপার্সন পূর্ণেন্দু বসু বলেন, 'আমাদের সময় এই ধরনের সুযোগ ছিল না। আজ প্রচুর সুযোগ। নিজের মানের সঙ্গে মিলিয়ে এখন পেশাগত শিক্ষা বেছে নেওয়া যাচ্ছে। যাঁরা পাস করে বেরিয়েছেন তাঁরা এখানে এসে জানতে পারছেন কোন পথে গেলে আসবে সাফল্য।'
পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'এই মেলায় পড়ুয়াদের সঠিক পথ দেখানো হয়। মনে রাখতে হবে ভালো শিক্ষা বা একটা ভালো চাকরিই কিন্তু একজনের জীবনে সব নয়। ভাবতে হবে সমাজের কথাও।'
শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যের উন্নতি এবং সেপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে এদিন এসএনইউ'র আচার্য বলেন, 'রাজ্য সরকার শিক্ষার উন্নয়নে নিত্য নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে। সরকারি এবং বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে শিক্ষা আমাদের রাজ্যে দ্রুত প্রসার পাচ্ছে। লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পড়ুয়াদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেবিষয়ে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার। মনে রাখতে হবে বাংলা কিন্তু সবসময় ভারতকে পথ দেখায়।'
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.সুরঞ্জন দাশ বলেন, 'গত ১০ বছরে এরাজ্যে উচ্চশিক্ষা এবং প্রযুক্তি শিক্ষা যথেষ্টই এগিয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল যথার্থ নাগরিক তৈরি করা।'
কাজকে ভালোবাসলেই আসে সাফল্য। এদিন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের কো-চেয়ারপার্সন মানসী রায়চৌধুরী বলেন, 'পড়ুয়ারা যদি ভালোবেসে কাজ কর, তবে সাফল্য আসবেই। এই মেলায় তোমরা অনেক সহায়তা পাবে।' একইসঙ্গে পড়ুয়াদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'জীবনে যত ভালোই ফল করোনা কেন বাংলাকে ভুলে যেও না। বজায় রেখ মানবতা।'
ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অফ হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, জেআইএস-এর আচার্য তরণজিৎ সিং, অ্যাডামাস-এর আচার্য সমিত রায়, সিকন ইউনিভার্সিটির আচার্য অনীশ চক্রবর্তী, এমসিকেভি কলেজ-এর চেয়ারম্যান কে কেজরিওয়াল, কেরিয়ার প্ল্যানার এডু ফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা দীপক সিনহা রায় প্রমুখ।